facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

অবণ্টিত লভ্যাংশের তহবিল আরো বড় হচ্ছে


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার, ০৪:৪৯  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


অবণ্টিত লভ্যাংশের তহবিল আরো বড় হচ্ছে

পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের অবণ্টিত বা অ-দাবিকৃত লভ্যাংশ নিয়ে যে তহবিল গড়ে তোলা হচ্ছে, তাতে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের অলস অর্থ ও শেয়ারও স্থানান্তর হবে। শুরুতে এ তহবিলের সম্পদ হবে কমপক্ষে ২২ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা নগদ। ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে তিন বছরের বেশি সময় পড়ে থাকা অর্থ পেলে তহবিলটি আরও বড় হবে।

ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের গ্রাহকদের (বিনিয়োগকারী) সমন্বিত হিসাবে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা টাকা ও শেয়ার নিয়ে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড’ বা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। কমিশন আশা করছে, আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে এ তহবিল গঠন ও কার্যক্রম শুরু করবে।

এসইসির এ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত বিধিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, সব অবণ্টিত লভ্যাংশ এবং ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে তিন বছরের অধিক সময় পড়ে থাকা অর্থ ও শেয়ার এ তহবিলে স্থানান্তর করতে হবে। তিন বছরের হিসাব হবে লভ্যাংশ ঘোষণা বা অনুমোদনের দিন বা রেকর্ড ডেট থেকে। এক্ষেত্রে নগদ লভ্যাংশ বা অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা থাকায় কোনো সুদ অর্জিত হলে, তাও এ তহবিলে প্রদান করতে হবে।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, তহবিলে শেয়ার বা টাকা হস্তান্তরের পরও তা দাবি করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী। নিজের দাবির প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি বা ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনের এক মাসের মধ্যে শেয়ার বা টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

কোম্পানির অবণ্টিত বা অদাবিকৃত লভ্যাংশ তহবিলে হস্থান্তর নিয়ে কারও কোনো আপত্তি না থাকলেও তিন বছর পড়ে থাকলেই ব্রোকার বা মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে অর্থ বা শেয়ার তহবিলে হস্তান্তর করা নিয়ে আপত্তি রয়েছে কিছু ব্রোকারেজ হাউজের। তাদের মতে এটি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করতে পারে।

এ বিষয়ে ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিনিয়োগকারীর পড়ে থাকা অর্থ ও শেয়ার ওই তহবিলের হস্তান্তরের বিষয়টি এখনো আমার কাছে স্পষ্ট নয়। এ ধরনের বিধান করা হলে তা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। অনেক বিনিয়োগকারী রয়েছেন, যারা শেয়ার রেখে বিদেশে অবস্থান করছেন, বিও হিসাব নবায়নের জন্য কয়েক বছরের টাকাও রাখেন। আবার অনেকেই শেয়ার জামানত রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। কিছু বিনিয়োগকারী রয়েছেন, যারা বছরের পর বছর শেয়ার ধরে রাখেন, শুধুমাত্র লভ্যাংশ নেন। তাদের কাছে শেয়ার অন্যান্য সম্পদের মতো। এ ধরনের অ্যাকাউন্টে লভ্যাংশ এলে তা অবণ্টিত বা অদাবিকৃত বা অনিষ্পত্তিকৃত রয়েছে বলার সুযোগ নেই। বছরের পর বছর লেনদেন না হওয়া এসব বিনিয়োগকারীর শেয়ার ও অর্থ কীভাবে তহবিলে হস্তান্তর হবে, তার একটি যৌক্তিক নিয়ম করা উচিত।

তবে কমিশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন লেনদেন না হলে ব্যাংক হিসাব নিষ্ক্রিয় করা হয় এবং ওই হিসাবের টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুঁজিবাজারেও এমন বিধান করা হবে। কোনো বিও অ্যাকাউন্টে তিন বছর লেনদেন না হলে তা নিষ্ক্রিয় করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা যদি সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেন, তবে কমিশন বিবেচনা করবে।

বিধিমালার খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে কোন বিনিয়োগকারীর কতটা অবণ্টিত লভ্যাংশ বা অর্থ বা শেয়ার পড়ে আছে, তা সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ তহবিলে হস্থান্তর করতে হবে। তবে এ তালিকা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে প্রকাশের কোনো প্রস্তাব বিধিমালায় নেই। প্রতিবেশী ভারতসহ অনেক দেশে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিসহ ওই তহবিলকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ তালিকা প্রকাশ ও হালনাগাদ করতে হয়।

খসড়া বিধিমালায় প্রস্তাব করা হয়েছে, স্থিতিশীলকরণ তহবিলটি ব্যবস্থাপনায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ড অব গভর্নরস থাকবেন, যার চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনজন সদস্য মনোনীত করবে এসইসি। বাকি সদস্যরা মনোনীত হবেন দুই স্টক এক্সচেঞ্জ, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন বিএপিএলসি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস বা কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টসদের সংগঠন আইসিএবি বা আইসিএমএবি থেকে। এছাড়া তহবিল প্রধানের পদ হবে চিফ অফ অপারেশন। তিনিও বোর্ড অব গভর্নরসে এক্সিকিউটিভ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রথম বোর্ড গঠন করবে এসইসি।

তহবিল পরিচালিত হবে বোর্ড অব গভর্নরসদের ™^ারা। এজন্য তিনজন করে সদস্য নিয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি নামে অন্তত পাঁচটি বোর্ড সাব-কমিটি গঠন করতে হবে। তহবিল থেকে বাজারের তারল্য প্রবাহ এবং গভীরতা বৃদ্ধির জন্য শেয়ার কেনাবেচা বা ধার প্রদান বা ধার গ্রহণ করা হবে। শেয়ার কেনাবেচা করতে গিয়ে তহবিলের কোনো লোকসান না হয়, তার জন্য সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন করা হবে, থাকবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অডিট কমিটি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: