facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইডথ বিক্রি বেড়ে দ্বিগুণ


১৫ জুলাই ২০১৭ শনিবার, ০৬:৫০  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইডথ বিক্রি বেড়ে দ্বিগুণ

ভারতে ব্যান্ডউইডথ রফতানি ও স্থানীয় কোম্পানির কাছে আইপিএলসি (ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিজ সার্কিট) ভাড়ার ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল)। সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে শুধু ব্যান্ডউইডথ খাতে কোম্পানিটির টার্নওভার প্রায় দ্বিগুণে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি আইপি ট্রানজিট সার্ভিস থেকে ৬৫ শতাংশ আয় বাড়ায় জুলাই-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পনির নিট বিক্রি ৮২ শতাংশ বেড়েছে। এতে তিন প্রান্তিক শেষে কোম্পানির করপরবর্তী মুনাফা শতভাগের বেশি বেড়েছে।

কোম্পনির কর্মকর্তারা বলছেন, সাবমেরিন কেবলে টেকনিক্যাল সমস্যা হলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় একটা সময় স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানিনির্ভর ছিল। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসায় স্থানীয় পর্যায়ে আইপিএলসি বিক্রি বেড়েছে। পাশাপাশি ভারতের বাজারে ব্যান্ডউইডথ রফতানি শুরু হওয়ায় মুনাফা বেড়েছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল চালু হওয়ায় কোম্পানির মোট বিক্রিতে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে।

সর্বশেষ প্রকাশিত কোম্পানির তিন প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬-১৭ হিসাব বছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সাবমেরিন কেবলের মোট বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা বেড়ে ৭৪ কোটি ৮ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে ব্যান্ডউইডথ ভাড়া বাবদ আয় ১৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা বা ৭১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির এ খাতে আয় আসে ৩৫ কোটি ৯ লাখ টাকা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। একই সময়ে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের কাছে ট্রানজিট সার্ভিস চার্জ বাবদ আয় ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বা ৬২ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৫-১৬ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতে কোম্পানির আয় ছিল ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা সর্বশেষ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে ৩০ কোটি ১৭ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি ভারত সঞ্চার নিগমের কাছে ব্যান্ডউইডথ রফতানি ও সার্ভিস থেকে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ৪১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। তাছাড়া কক্সবাজার ও ঢাকার গ্রাহকদের কাছ থেকে চার্জ বাবদ ৮৫ লাখ টাকা এবং ব্যান্ডউইডথ রফতানি বাবদ ২৩ লাখ টাকা আয় করেছে কোম্পানিটি।

এদিকে হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কর পরিশোধের পর সাবমেরিন কেবলের মুনাফা হয়েছে ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে নিট মুনাফা বেড়েছে ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা ১২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

এদিকে ভারতে রফতানি শুরু করার পর মিয়ানমারসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশে ব্যান্ডউইডথ রফতানির জন্য অবকাঠামো উন্নয়নে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরভিত্তিক ব্লুবেরি টেলিকম প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি কোম্পানি গঠনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বিএসসিসিএল। প্রস্তাবিত কোম্পানির ১০ শতাংশ মালিকানা থাকবে সরকারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির হাতে। কোম্পানিটি আশা করছে, অবকাঠামো থেকে বিএসসিসিএল বছরে প্রায় ৫ কোটি টাকা আয় করতে পারবে। এর বাইরে ব্যান্ডউইডথ রফতানি করে বছরে অন্তত ১২ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে।

অবকাঠামো প্রকল্প সম্পর্কে তারা জানান, ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সাবমেরিন কেবল লাইনটি কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারের বন্দরনগরী সিত্তি পর্যন্ত যাবে। এতে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় ধরা হয়েছে। কেবল স্থাপনের কাজটি শেষ হতে অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে। এ কেবলের মাধ্যমে ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ রফতানি করতে পারবে বিএসসিসিএল। মিয়ানমার ছাড়াও কম্বোডিয়া, লাওস বা ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোতেও ব্যান্ডইউডথ সরবরাহে কাজে আসবে পরিকল্পিত এ অবকাঠামো।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সুবাদে বিএসসিসিএলের সক্ষমতা ২০০ থেকে প্রায় দেড় হাজার জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় স্থানীয় বাজারে প্রথম সাবমেরিন কেবলের পূর্ণ সক্ষমতারও সদ্ব্যবহার করতে পারছে না কোম্পানিটি। ভবিষ্যত্ চাহিদার কথা মাথায় রেখে সংযোজিত অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ রফতানির মাধ্যমে কোম্পানির আয় বাড়ানোর নীতিগত অবস্থান নিয়েছে সরকারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি।

বিএসসিসিএল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাজারে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ রফতানি করছে, যেখান থেকে বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা আয় হচ্ছে। এর বাইরে ভুটানেও ব্যান্ডউইডথ রফতানির ব্যাপারেও কাজ করছে বিএসসিসিএল।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন বিএসসিসিএল শেয়ারহোল্ডাররা। সে হিসাব বছরে বিএসসিসিএলের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ১ টাকা, আগের বছর যা ছিল ৭৮ পয়সা। ডিএসইতে সর্বশেষ ১১৯ টাকায় বিএসসিসিএলের শেয়ার হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ১০৬ ও সর্বোচ্চ দর ছিল ১৩৫ টাকা ৯০ পয়স

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: