০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বুধবার, ০২:৩৭ পিএম
এমএ ওয়াদুদ মিয়া
শেয়ার বিজনেস24.কম
শরীয়তপুরে ভুল প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ায় কারণে ৩৯ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নড়িয়া উপজেলার নরকলিকাতা গ্রামের মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসির বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা ভুল প্রশ্নে নেওয়া হয়!
কেন্দ্র সচিব বলেন, হল সুপারের অসতর্কতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কক্ষ পরিদর্শক ও হল সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ডেপুটি কন্ট্রোলারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থী সায়মা আকতারসহ একাধিক ছাত্রী জানান, চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় নড়িয়া-২ কোডে ৫৪৬ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ওই কেন্দ্রের ১২১ নং কক্ষে পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন, পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১ জন ও শহীদ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬ জন মোট ৩৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। যাদের রোল ৪৫৫৯৩ থেকে ৪৫৫৯৪৩, ৯৫৬১১৯ থেকে ৪৫৬১২৯ এবং ৪৫৯৯৯ থেকে ৪৫৬০১৪ পর্যন্ত।
কক্ষ পরিদর্শক ইকাদুল শেখ এবং আনোয়ার হোসেন, হল সুপার বিজয় কুমার মন্ডল ও কেন্দ্র সচিব ফরিদ আল হোসাইনের অসতর্কতা ও গাফলতির কারণে ২০১৭ সালের রচনামূলক প্রশ্নপত্রের পরিবর্তে ২০১৬ সালের পুরানো রচনামূলক প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। আর পরীক্ষার্থীরা ওই ভুল প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এ ভুল ধরলে ব্যাপারটি জানাজানি হয়। পরে কেন্দ্র সচিব স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে শুধুমাত্র ঢাকা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তারেক বিন আজিজকে ব্যাপারটি অবহিত করেন। এ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। তারা তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ভেবে সাংবাদিকদেরকে অবহিত করেন।
মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীর এক অভিভাবক ফারুক খান বলেন, আমার মেয়েও এ কেন্দ্রের একজন পরীক্ষার্থী। তাকে ২০১৬ সালের পুরাতন প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তাতে মেয়ের পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। আমি আমার মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বিবেচনার জন্য জোর দাবি জানাই।
কক্ষ পরিদর্শক ইকাদুল শেখ বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিটিং করে বলেছেন পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র দেখা যাবে না। এ কারণে আমরা প্রশ্নপত্র দেখিনি। পরীক্ষার পরে পরীক্ষার্থীদের কাছে জেনে কেন্দ্র সচিবকে বিষয়টি অবহিত করেছি।
হল সুপার বিজয় কুমার মন্ডল বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে ভুল বশত দুই সেট প্রশ্নপত্র ১২২ নং কক্ষে চলে যায়। পরবর্তী নতুন করে ১২১ নং কক্ষে প্রশ্ন পাঠানো হয়। ওই প্রশ্নপত্রই ছিল ২০১৬ সালের। অসতর্কতার কারণেই এটা হয়েছে।
কেন্দ্র সচিব ফরিদ আল হোসাইন বলেন, হল সুপার বিজয় কুমার মন্ডলের অসতর্কতার কারণে পুরানো প্রশ্নপত্রে ৩৯ জনের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আমি জানার পর ঢাকা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানিয়েছি। সে আমাকে শতভাগ নিশ্চিত করেছেন পরীক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না। এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়া কক্ষ পরিদর্শক ও হল সুপারকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নলিনী রঞ্জন রায় বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে জানানো হয়নি।
শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।