facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

১৫ খাত

মুনাফা বেড়েছে ৯৮ কোম্পানির, কমেছে ৬৩টির


০৯ মে ২০১৮ বুধবার, ০১:৩৮  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


মুনাফা বেড়েছে ৯৮ কোম্পানির, কমেছে ৬৩টির

জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সর্বশেষ প্রান্তিকে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত উৎপাদন ও সেবাধর্মী ১৫ খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফায় মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। এ সময়ে ৯৮ কোম্পানির নিট মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) উভয়ই গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। আর কমেছে ৬৩ কোম্পানির। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৮৯ কোম্পানির জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য মিলেছে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর ১০টি গত বছরের একই সময়ে লোকসানে ছিল। তাছাড়া এ সময়ে লোকসানে পড়েছে নয় কোম্পানি, যেগুলো আগের বছরের একই প্রান্তিকে মুনাফায় ছিল। আর ২২ কোম্পানি বরাবরের মতো লোকসানের বৃত্তে আটকে আছে।

শেয়ারবাজারে উৎপাদন ও সেবাধর্মী তালিকাভুক্ত কোম্পানি ২০৪টি। এর মধ্যে ১৮১টির হিসাব বছর শেষ হয় জুনে। এসব কোম্পানি তাদের চলতি হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসেরও আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে। বাকি আট কোম্পানি বহুজাতিক। এগুলো চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গতকাল পর্যন্ত দেশি ১০ কোম্পানি তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। এগুলো হলো- বিডি ওয়েল্ডিং, সিএনএ টেক্সটাইল, মিথুন নিটিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, তাল্লু স্পিনিং, তুংহাই নিটিং, বঙ্গজ, এমারেল্ড অয়েল, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। এ ছাড়া চার বহুজাতিক মারিকো বাংলাদেশ, সিঙ্গার বাংলাদেশ, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোবাকো এবং বার্জার পেইন্টসও জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন

প্রকাশ করেনি।

টাকার অঙ্কে নিট মুনাফা :সার্বিক হিসাবে গত প্রান্তিকে তালিকাভুক্ত ১৮৯ কোম্পানি মোট প্রায় দুই হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। এ সময়ে মুনাফায় থাকা ১৫৮ কোম্পানি দুই হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। বিপরীতে ৩১ কোম্পানি ৯২ কোটি ৬০ লাখ টাকা লোকসান করেছে।

শুধু সর্বশেষ প্রান্তিকেই নয়, চলতি হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে দেশি ১৮১ কোম্পানি মোট পাঁচ হাজার ৫৪৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে। এর আগের হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় যা সাড়ে ১২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ১৫২টি নিট মুনাফা করেছে পাঁচ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। বিপরীতে ২৯টি লোকসান করেছে ২৩৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

জানু-মার্চ প্রান্তিক : প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ প্রান্তিকে ১৩ কোম্পানির ইপিএস আগের বছরের একই প্রান্তিকের দ্বিগুণ থেকে ১৫ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- মুন্নু সিরামিক, মুন্নু স্ট্যাফেলার্স, রহিম টেক্সটাইল, ইস্টার্ন কেবলস, আজিজ পাইপস, ড্রাগন সোয়েটার, সাফকো স্পিনিং, ম্যাকসন্স স্পিনিং, নাভানা সিএনজি, হামিদ ফেব্রিক্স, বিবিএস কেবলস, মেঘনা সিমেন্ট ও বিএসআরএম লিমিটেড।

অবশ্য মুনাফার বড় প্রবৃদ্ধি হলেও এসব কোম্পানির বেশিরভাগের সর্বশেষ ইপিএস খুবই কম। যেমন মুন্নু সিরামিকের ইপিএস ২ পয়সা থেকে বেড়ে ৩০ পয়সা হয়েছে। একই ব্যবসায়িক গ্রুপের অপর কোম্পানি মুন্নু স্ট্যাফেলার্সের ইপিএস ২৩ পয়সা থেকে বেড়ে এক টাকা ৪৩ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।

চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে এ দুই কোম্পানির মুনাফা বাড়ছে। তবে এ তথ্য প্রকাশের আগের উভয় শেয়ারের দরে ব্যাপক উল্লম্ম্ফন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস হওয়া এবং শেয়ার কারসাজির অভিযোগ আছে। বিষয়টি তদন্তে গত সাত মাসে দুটি কমিটি করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে কোম্পানি-সংশ্নিষ্টরা জানান, নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ গ্যাস সংকটের সমাধান হওয়ায় উৎপাদন ও বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ওপর ভর করে বেড়েছে মুনাফা। ইপিএসে প্রবৃদ্ধির দিক থেকে এর পরের অবস্থানে ছিল রহিম টেক্সটাইল। গত প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়ে তিন টাকা ৪৩ পয়সায় উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৭৬ পয়সা। এ ছাড়া ইস্টার্ন কেবলসের ইপিএস ১১ পয়সা থেকে বেড়ে ৪৬ পয়সা হয়েছে। আজিজ পাইপসের ইপিএস ৬ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ পয়সা হয়েছে।

তবে ইপিএসে প্রবৃদ্ধির দিক থেকে এগিয়ে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে নাভানা সিএনজি, বিবিএস কেবলস ও বিএসআরএম লিমিটেডের ইপিএস সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এর মধ্যে নাভানা সিএনজির ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৮০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৬২ পয়সা। বিবিএস কেবলসের ইপিএস দুই টাকা ৩১ পয়সা হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৮৬ পয়সা। আর বিএসআরএম লিমিটেডের ইপিএস হয়েছে তিন টাকা ৭৮ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল এক টাকা ৫৬ পয়সা।

এ ছাড়া গত বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে লোকসানে থাকলেও এ বছর হঠাৎ বড় মুনাফার খবর দিয়ে চমকে দিয়েছে রহিমা ফুড করপোরেশন, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ও এপেক্স ট্যানারি। এর মধ্যে বন্ধ কোম্পানি রহিমা ফুডের ইপিএস হয়েছে আট টাকা ৮৯ পয়সা। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এ মুনাফা ব্যবসা থেকে আসেনি। জমি বিক্রি থেকে মূলধনী মুনাফার কারণে ইপিএসে উল্লম্ম্ফন হয়েছে।

বড় কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণফোনের ইপিএস কমেছে ১২ পয়সা। সর্বশেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় করেছে চার টাকা ৭৪ পয়সা। ব্যবসা বাড়লেও ফোরজি লাইসেন্স, স্পেকট্রামসহ নেটওয়ার্ক উন্নতির কাজে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে মুনাফা কমেছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: