facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

মুনাফা তুলে নেয়ার চাপ শেয়ারবাজারে


১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার, ১১:২১  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


মুনাফা তুলে নেয়ার চাপ শেয়ারবাজারে

টানা ঊর্ধ্বমুখী ধারার পর চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে পুঁজিবাজার থেকে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে করে সপ্তাহের শেষ দিনে অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির শেয়ার নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জিলবাংলা সুগারের লেনদেন স্থগিত ও জিকিউ বলপেনের শেয়ার কারসাজির তদন্তের ঘোষণায় বিনিয়োগকারীরা সতর্কতা অবলম্বন করছেন।

 

এতে করে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির অধিকাংশের দর কিছুটা কমেছে।

জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোতে ব্যাপক সংস্কার ও তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে বাধ্যবাধকতা আরোপকে কেন্দ্র করে গত দেড় মাস ধরে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) এমন পদক্ষেপে জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে ঝোঁক বাড়ে বিনিয়োগকারীদের। ফলে স্বল্প সময়ে অধিকাংশ দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দর দ্বিগুণ হয়ে যায়। একই সঙ্গে যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, সেসব শেয়ারেরও চাহিদা বাড়তে থাকে। পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকেও নজরদারি শিথিল করা হয়। এই সুযোগ নিয়ে কয়েকটি লোকসানি কোম্পানির শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে কয়েকগুণ বাড়ানো হয়।

 

তবে চলতি সপ্তাহে কারসাজির মাধ্যমে দরবৃদ্ধি করা দুই কোম্পানির শেয়ার নিয়ে এসইসি তদন্তের ঘোষণা দিলে স্বল্প মূলধনীর অন্যান্য শেয়ারেও এর প্রভাব পড়ে। এর ফলে গত দুই দিন ধরেই স্বল্প মূলধনী শেয়ারগুলো থেকে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেওয়ার চাপ দেখা গেছে।

 

অবশ্য মুনাফা তুলে নেওয়ার চাপ অন্যান্য খাতেও দেখা গেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগস্টে দেশের পুঁজিবাজারের সূচকে বড় ধরনের ঊর্ধ্বগতির পর চলতি মাসে কিছুটা স্থিতিশীলতা রয়েছে। তবে এর মধ্যেও গত দুই সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ১৭৬ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময়ে অনেক শেয়ারের দর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে গত দুই দিনে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মূলধন নিরাপদ রাখতে মুনাফা তুলে নিয়েছেন। এতে করে গতকাল ডিএসইর ২০টি খাতের মধ্যে ১২টি বাজার মূলধন হারিয়েছে। তবে ব্যাংক, সাধারণ বীমা, এনবিএফআই ও ভ্রমণ খাত ইতিবাচক ধারায় ছিল।

 

গতকাল ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে স্বল্প মূলধনী পাট, কাগজ ও তথ্য প্রযুক্তি খাত। এ খাতগুলো ১ দশমিক ৬ থেকে ২ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাজার মূলধন হারিয়েছে। এর বাইরে বড় মূলধনী কোম্পানি ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রকৌশল ও জ¦ালানি খাতের কোম্পানিগুলো থেকে মুনাফা তুলে নেওয়ায় দর হারিয়েছে সংশ্লিষ্ট শেয়ার। এছাড়া সিমেন্ট ও জীবন বীমা কোম্পানি খাতের বাজার মূলধনও কমেছে। বিপরীতে ভ্রমণ খাতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ দর বেড়েছে। আর সাধারণ বীমা ১ দশমিক ২২ শতাংশ ও এনবিএফআইয়ের শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বাজার মূলধন বেড়েছে।

 

গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া ৩৫৪টি সিকিউরিটিজের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২১০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমলেও ব্যাংকসহ পুরো আর্থিক খাত ইতিবাচক ধারায় থাকায় সূচক বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট হারিয়ে ৫১০৪ পয়েন্টে নেমেছে। আগের দিনের তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমলেও তা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হয়েছে ১ হাজার ১৩ কোটি টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ১৩৩ কোটি টাকা কম।

 

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো মুন্নু সিরামিক, ব্র্যাক ব্যাংক লি., বেক্সিমকো ফার্মা, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, নিটল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স ও সায়হাম কটন।      

 

দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু সিরামিক, জিএসপি ফাইন্যান্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং, সায়হাম কটন, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স ও জনতা ইন্স্যুরেন্স।

 

অন্যদিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো জিকিউ বলপেন, হাক্কানী পাল্প, মেঘনা পেট, ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ফু-ওয়াং সিরামিক, আরএসআরএম স্টিল, এক্সপ্রেস ইন্সুরেন্স, ইমাম বাটন, ন্যাশনাল ফিড মিল ও আইসিবি ইসলামি ব্যাংক।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: