facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

বোনাস শেয়ার দেয়ায় লাগম টেনেছে বিএসইসি


২৫ মে ২০১৯ শনিবার, ০২:৫২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


বোনাস শেয়ার দেয়ায় লাগম টেনেছে বিএসইসি

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেয়ার প্রবণতায় লাগাম টেনেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত মঙ্গলবার ৬৮৭তম কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন জারি করে তারা। সেখানে সংরক্ষিত মূলধন, পুনর্মূল্যায়নজনিত উদ্বৃত্ত, আনরিয়েলাইজড গেইন থেকে বোনাস শেয়ার ইস্যুর পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি শুধু পুঞ্জীভূত মুনাফা ও শেয়ার প্রিমিয়ামের বিপরীতে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে। লভ্যাংশ দেয়ার পর অবণ্টিত মুনাফা বা রিটেইন্ড আর্নিংস ঋণাত্মক অংকে নেমে গেলেও কোনো কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

নোটিফিকেশনে বিএসইসি বলে, বিনিয়োগকারী ও বাজারের স্বার্থে মূলধন ইস্যু, পাবলিক অফারের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ বিক্রিতে আরো শর্তারোপ প্রয়োজন বলে মনে করছে কমিশন। এরই অংশ হিসেবে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯-এর ২ সিসি ধারাবলে বোনাস শেয়ার ইস্যুর ওপর নিম্নলিখিত শর্তগুলো আরোপ করা হলো।

প্রথমত, সম্প্রসারণ, সুষমকরণ, আধুনিকীকরণ, পুনর্গঠন ও বিস্তারের (বিএমআরই) মতো যৌক্তিক কারণগুলো অনুপস্থিত থাকলে কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি এখন থেকে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

দ্বিতীয়ত, বোনাস শেয়ার ঘোষণা করতে হলে মূল্যসংবেদনশীল তথ্য আকারে বোনাস শেয়ার ইস্যুর কারণ এবং এর বিপরীতে ধরে রাখা অর্থ কীভাবে ব্যবহার করা হবে তা প্রকাশ করতে হবে, যেমনটি আইপিওর অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে করতে হয়।

তৃতীয়ত, শুধু পুঞ্জীভূত মুনাফা বা শেয়ার প্রিমিয়ামের অর্থের বিপরীতে বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যাবে। সংরক্ষিত মূলধন, পুনর্মূল্যায়নজনিত উদ্বৃত্ত, কোনো আনরিয়েলাইজড গেইন তথা এখনো বুঝে নেয়া হয়নি এমন মুনাফা থেকে বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা যাবে না। এছাড়া কোম্পানি গঠনের আগে ব্যবসার মুনাফা কিংবা পরিশোধিত মূলধন হ্রাসজনিত কারণে বর্ধিত তহবিলও বোনাস শেয়ার ইস্যুর কাজে ব্যবহার করা যাবে না। লভ্যাংশ দেয়ার পর অবণ্টিত মুনাফা বা রিটেইন্ড আর্নিংস ঋণাত্মক অংকে নেমে গেলেও কোনো কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

বিএসইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নগদ লভ্যাংশ বিতরণ না করে স্টক লভ্যাংশ বা বোনাস শেয়ার দেয়ার অর্থ হলো মুনাফার টাকা আবার মূলধনে রূপান্তর করা হচ্ছে। কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ বা গুণগত মানোন্নয়নের জন্য পুঁজির প্রয়োজন হলে এটি করা যেতে পারে। আর এমন কোনো যৌক্তিক প্রেক্ষাপট না থাকলে বছর বছর অকারণে শেয়ার সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ আর থাকছে না। কেউ প্রয়োজন ছাড়া বোনাস শেয়ারের মাধ্যমে মূলধন বাড়ালেও তা ব্যবহারের ঘোষণাটি বাস্তবায়ন করে দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে কোম্পানির কোন ধরনের সম্পদ থেকে বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যাবে আর কোনগুলো থেকে যাবে না—এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা আসায় নন-পারফর্মিং কোম্পানিগুলোর বোনাস শেয়ার দেয়ার সক্ষমতাও কিছুটা টান পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ব্যবসা পরিচালনায় লাভ-লোকসান কিংবা দায়-দেনা নির্বিশেষে বহু কোম্পানি বছরের পর বছর শুধু বোনাস শেয়ার দিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জে নিজের ক্যাটাগরি ধরে রেখেছে। বর্ধিত শেয়ার সংখ্যার বিপরীতে নিট মুনাফা বাড়াতে না পারায় সময়ের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি আয়েও (ইপিএস) পেছাচ্ছে তাদের একটি বড় অংশ। চাঙ্গা বাজারে ভালো দামে বোনাস শেয়ার বেচে মুনাফা তুলে নেয়ার সুযোগ থাকায় একশ্রেণীর উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী এ ধরনের প্রবণতা সমর্থন করে আসছিলেন।

তবে টেকসই প্রবৃদ্ধির খোঁজে থাকা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা বরাবরই এর সমালোচনা করছেন। সেকেন্ডারি বাজারের সাম্প্রতিক নিম্নমুখিতায় তা অনেক জোরালো হওয়ার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ নিল।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: