facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে ব্যাংকের শেয়ারে


১৩ আগস্ট ২০১৮ সোমবার, ০৮:৩৫  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে ব্যাংকের শেয়ারে

 

চলতি সপ্তাহেও ব্যাংকের শেয়ারদর বৃদ্ধি দিয়ে সপ্তাহের লেনদেন শুরু হয়েছে। বিপরীতে লভ্যাংশ ঘোষণা মৌসুমে উৎপাদন ও সেবামুখী খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমছে। বাজার সংশ্নিষ্টরা জানান, কয়েকটি বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগে যাওয়ায় বাজারে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল রোববারের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২০৯টির দর কমেছে, যা মোটের ৬২ শতাংশ। বিপরীতে ৯৫টির দর বেড়েছে, যা মোটের ২৮ শতাংশ। বাকি ৩৩টির দর অপরিবর্তিত ছিল। অধিকাংশ শেয়ারদর কমলেও ব্যাংক খাতের দর বৃদ্ধির কারণে ডিএসইএক্স সূচক দিনব্যাপী ওঠানামার পরও আগের দিনের অবস্থান ৫৪০৭ পয়েন্টে থেমেছে। অপর শেয়ারবাজার সিএসইতেও ছিল প্রায় একই চিত্র।

বাজারের এ আচরণ স্বাভাবিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তারা জানান, কয়েকটি বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান লভ্যাংশ ঘোষণার আগে উৎপাদন ও সেবামুখী খাতের শেয়ার বিক্রি করছে। বিপরীতে ব্যাংকের শেয়ারে নতুন করে বিনিয়োগ করছে। এর কারণ ব্যাখ্যায় তারা বলেন, লভ্যাংশ ঘোষণার আগে বস্ত্রসহ অন্য কিছু খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো এখনই মূলধন বৃদ্ধিজনিত মুনাফা তুলে নিচ্ছে। অন্যদিকে ব্যাংকের শেয়ারদর অনেকটা কম থাকায় এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলেও মনে করেন তারা। গত বছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারিতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তখন ব্যাংক ও বীমা খাতের লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুম হলেও ওই সময় এসব শেয়ারের দর কমেছিল।

গতকালের খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ২৭টির দর বেড়েছে, কমেছে দুটির দর। প্রায় সব শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় খাতটির সার্বিক শেয়ারদর বেড়েছে পৌনে ৪ শতাংশ। এ ছাড়া ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ১২টির দর বেড়েছে, কমেছে আটটির এবং তিনটির দর অপরিবর্তিত। তবে এ খাতের সার্বিক শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ কমেছে।

এই দুই খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়লেও কমেছে বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ারদর। এ খাতের ৪৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৫টিরই দর কমেছে। বেড়েছে নয়টির এবং বাকি তিনটির দর অপরিবর্তিত ছিল। অধিকাংশ শেয়ারের দর কমায় খাতটির সার্বিক শেয়ারদর প্রায় ২ শতাংশ কমেছে।

একই অবস্থা ছিল উৎপাদন ও সেবামুখী খাতগুলোতে। যেমন- জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ১৯ কোম্পানির মধ্যে ১৪টির দর কমেছে; এতে এ খাতের সার্বিক শেয়ারদরের পতন হয়েছে ২ শতাংশ। একইভাবে প্রকৌশল খাতের ৩৬ কোম্পানির মধ্যে ২৪টির দর কমেছে, সার্বিক দরপতনের হার আড়াই শতাংশ। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২৯ কোম্পানির মধ্যে ২৭টিরই দর কমেছে, খাতের সার্বিক দরপতন হয়েছে পৌনে ৩ শতাংশ। বস্ত্র খাতের ৫০ কোম্পানির মধ্যে ৩৪টির দর কমায় এ খাতের দরপতনও আড়াই শতাংশের ওপর ছিল। বাকি ১১ খাতের লেনদেন হওয়া ১২১ কোম্পানির মধ্যে ৮৮টির দর কমেছে। শেয়ারদর ও সূচকে এমন অস্থিরতার মধ্যেও গতকাল ৬ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে যে চার কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ওই দরে স্থির ছিল, সেগুলো হলো- ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন কেবলস, ফাইন ফুডস ও শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। লেনদেনের বড় অংশে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হওয়া বাকি দুই শেয়ার হলো- রিজেন্ট টেক্স ও শ্যামপুর সুগার মিলস।

বিপরীতে গতকাল অন্তত ১১ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ওই দরে স্থির থাকা ছয় কোম্পানির মধ্যে গত সপ্তাহে তালিকাভুক্ত হওয়া আমান কটন ফাইব্রসও ছিল। বাকি শেয়ারগুলো হলো- দুলামিয়া কটন, ইমাম বাটন, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, জুট স্পিনার্স ও লিবরা ইনফিউশন। লেনদেনের কিছু অংশে সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হওয়া বাকি পাঁচ শেয়ারগুলো হলো- ড্রাগন সোয়েটার, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং সাভার রিফ্যাক্টরিজ। এদিকে সার্বিক দরপতনের পরও বস্ত্র খাতের লেনদেন গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় প্রায় ৬২ কোটি টাকা বেড়ে ২১০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: