facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

পুঁজিবাজার চাঙায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বেশকিছু প্রস্তাব দিয়ে চিঠি


১৭ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার, ১১:১০  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


পুঁজিবাজার চাঙায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বেশকিছু প্রস্তাব দিয়ে চিঠি

পুঁজিবাজারে এক্সপোজার লিমিট নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। বাজারমূল্যে নয়, ক্রয়মূল্যে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা উচিত বলে মনে করে ডিএসই। এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তন চেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) গভর্নর ফজলে কবিরকে চিঠি পাঠায় ডিএ্সই কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে এক্সপোজার লিমিট নির্ধারণ প্রক্রিয়া ছাড়াও আরও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

ডিএসই কর্তৃপক্ষ চিঠিতে পুঁজিবাজারের কিছু বিষয়ে গভর্নরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবুল হাসেম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনের নিমিত্তে কিছু বিষয়ে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পুঁজিবাজারে এক্সপোজার গণনাকে সহজ ও বাজার বিকাশে সহায়তা করা, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৬-এর ‘ক’ অনুযায়ী একক ভিত্তিতে এক্সপোজার গণনার ব্যবস্থা করা, যেসব সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য নেই (যেমন বন্ড, ডিবেঞ্চার ও অতালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ড) তাদেরকে ও কৌশলগত বিনিয়োগকে এক্সপোজার হিসাবের বাইরে রাখা।

এছাড়া চিঠিতে ব্যাংক থেকে সাবসিডিয়ারিকে প্রদত্ত ঋণের শুধু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অংশ এক্সপোজার হিসেবে গণনা করতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে চিঠিতে পুঁজিবাজারে সরকারি ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন চালু করার লক্ষ্যে ডিএসই ও বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রত্যয় গ্রহণ করেছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের কথা উঠে এসেছে।

সম্প্রতি বন্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগকে এক্সপোজার লিমিট থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ইস্যু করা বন্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগকে পুঁজিবাজার এক্সপোজার থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে যেসব ব্যাংক আইসিবির বন্ডে বিনিয়োগ করবে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে না। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি সব তফসিলি ব্যাংকের এমডিদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১’-এর ১২১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আগ্রহী ব্যাংকগুলোকে আইসিবি কর্তৃক ইস্যু করা সাত বছর মেয়াদি দুই হাজার কোটি টাকার সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১’-এর ২৬ক(১)খ ধারার বিধান পরিপালন থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। এ অব্যাহতি প্রদানের কারণে ওই সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডে বিনিয়োগ করা অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পুঁজিবাজার বিনিয়োগপত্র কোষের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

ডিএসই কর্তৃপক্ষ জানায়, এক্সপোজার লিমিট গণনা নিয়ে তারা দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বলেছে, কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। আর এটি না করার কারণে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর একজন কর্মকর্তা বলেন, এক্সপোজার ক্রয়মূল্যে হওয়া উচিত। এটি বাজারমূল্যে হিসাব করলে জটিলতা বেশি হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, কেউ যদি এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন এবং তার লিমিটি থাকে এক লাখ টাকা। পরে এর দর বেড়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা হয়। এ ক্ষেত্রে লিমিট ঠিক রাখতে গেলে শেয়ার বিক্রি করা ছাড়া তার কোনো গতি থাকে না।

ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান বলেন, বাজারমূল্যে এক্সপোজার হিসাব করলে বাধ্য হয়েই শেয়ার বিক্রি করতে হয়। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ পড়ে। এতে বাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখনও কোনো সাড়া পাইনি। বিষয়টি আমরা ফলোআপ করব।

ডিএসইর অন্য একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে যতই বলা হোক তারা এটা ঠিক করবে না, কারণ তাদের সেই ধরনের মানসিকতা নেই। কারণ আমরা আগে বহুবার তাদের বলেছি কিন্তু তারা বিষয়টিতে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। বারবার তারা শুধু আশার কথাই বলেছেন। তাই এবার তারা বিষয়টি মেনে নেবেন, তা ভাবতে পারছি না। তবে পুঁজিবাজার তথা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এক্সপোজার লিমিট ঠিক করা উচিত। যেহেতু বাজারমূল্য হিসাব করলে এক্সপোজার লিমিট নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়, সেহেতু ক্রয়মূল্য হিসাব করে এ জটিলতার অবসান করা উচিত।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: