facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

নিজের শেয়ার বেশি দামে বেচতে দর বাড়াচ্ছে কারসাজি চক্র


১২ আগস্ট ২০১৮ রবিবার, ১২:৪৮  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


নিজের শেয়ার বেশি দামে বেচতে দর বাড়াচ্ছে কারসাজি চক্র

শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে ব্যাংক খাতই সার্বিক বিচারে ছিল ঊর্ধ্বমুখী। বাদবাকি সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। সপ্তাহের শেয়ারবাজারের লেনদেন পর্যালোচনায় এমন চিত্র মিলেছে। তবে ১৫ কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতির প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করলেও কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। বরং এ তালিকার কয়েকটি শেয়ারের দর বেড়েছে।

বাজার-সংশ্নিষ্টদের মতে, কারসাজি চক্র নিজেদের শেয়ার বিক্রি করতে নানা গুজব ছড়িয়ে তালিকাচুত্যির শঙ্কায় থাকা শেয়ারের দর বাড়ানোর চেষ্টা করছে। দৃশ্যত তাদের গুজবে আস্থাও রাখছেন কিছু বিনিয়োগকারী। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বেশিরভাগই স্বল্প মূলধনী ও জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগের থেকে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছেন। অনেকে ভালো শেয়ারে ঝুঁকছেন।

এদিকে ব্যাংকের শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক বিনিয়োগকারী নতুন করে ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এতে খাতটির লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। তবে অধিকাংশ শেয়ারের দরপতনের পরও খাতওয়ারি লেনদেনের শীর্ষে থেকেছে বস্ত্র খাত। অবশ্য এ খাতের নতুন তালিকাভুক্ত আমান কটন ফাইব্রসের অবদানই বেশি ছিল।

পর্যালোচনার তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইতে ১০৪ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ২১১টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৬টির দর। তালিকাভুক্ত এক কোম্পানি ও দুটি ফান্ডের লেনদেন হয়নি। অধিকাংশ শেয়ারের দর কমার পরও প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫৪০৭ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। অপর দুই সূচক ডিএস-৩০ এবং ডিএসই শরিয়াহ্‌ সূচক কমেছে।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩ হাজার ৪৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় যা মাত্র সাড়ে আট কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ সার্বিক নিম্নমুখী ধারার কারণে শেয়ার লেনদেন কমেছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সর্বাধিক দর বেড়েছে তালিকাচ্যুতির শঙ্কায় থাকা মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজের। কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩২ শতাংশ বেড়েছে। একই শঙ্কায় থাকা একই ব্যবসায়িক গ্রুপের অপর কোম্পানি মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক্কের শেয়ারদরও সাড়ে ২১ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানি দুটিকে ডিএসই চিঠি দেওয়ার খবর প্রকাশের পর এগুলোর শেয়ারদরে বড় পতন হয়েছিল। এমনকি ক্রেতাশূন্য অবস্থাও তৈরি হয়েছিল। তবে সর্বশেষ দু`দিনে দরবৃদ্ধির পাশাপাশি ঠিক বিপরীত অবস্থা দেখা গেছে। এর বাইরে গত সপ্তাহে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর সাড়ে ২৬ শতাংশ বেড়ে ৬৯ টাকা ছাড়িয়েছে। প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের দর সাড়ে ১৯ শতাংশ বেড়ে ২২ টাকায় এবং রিজেন্ট টেক্সটাইলের দর প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়ে ২৫ টাকা ছাড়িয়েছে। এছাড়া মুন্নু স্টাফেলার্স ও লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের দর ১৭ শতাংশ হারে এবং সিমটেক্সের দর ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

বিপরীতে তালিকাচ্যুতির শঙ্কায় থাকা সাভার রিফ্যাক্টরিজের শেয়ারদর সাড়ে ৩০ শতাংশ কমে ১০০ টাকার নিচে নেমেছে। একই ঝুঁকিতে থাকা আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ারদর ১৪ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের ১৩ শতাংশ, সমতা লেদারের ১৩ শতাংশ ও শ্যামপুর সুগার মিলসের পৌনে ১২ শতাংশ দর কমেছে।

এ ছাড়া পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২০ শতাংশ, ফাইন ফুডসের সাড়ে ১৬ শতাংশ, রেনউয়িক যজ্ঞেশ্বরের ১৩ শতাংশ, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের সাড়ে ১২ শতাংশ এবং লিবরা ইনফিউশনসের সাড়ে ১১ শতাংশ দর কমেছে।

খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ২৩টিরই বাজারদর বেড়েছে। সার্বিকভাবে খাতটির শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ। ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারদর সর্বাধিক প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়ে ৩৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে। পৌনে ৯ শতাংশ দর বেড়ে যমুনা ব্যাংকের শেয়ারদর সাড়ে ১৭ টাকা হয়েছে। ৫ থেকে সোয়া ৬ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে প্রাইম, ব্র্যাক, এবি, প্রিমিয়ার ও ঢাকা ব্যাংকের। বিপরীতে শাহ্‌জালাল ব্যাংকের শেয়ারদর ১ শতাংশ এবং ব্যাংক এশিয়ার সোয়া ২ শতাংশ দর কমেছে।

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের সাত কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৪টির দর কমেছে। সার্বিক বিচারে খাতটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে ২ শতাংশ। তারপরও এ খাতের এফএএস ফাইন্যান্সের দর সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়ে সাড়ে ১১ টাকা হয়েছে। দর বেড়েছে ফার্স্ট, প্রাইম, ফারইস্ট ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের। সর্বাধিক ১০ শতাংশ দর হারিয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের তিন কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৫টিরই দর কমেছে। ৩ শতাংশ হারে দর বেড়েছে খুলনা পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের। সর্বাধিক পৌনে ৮ শতাংশ দর হারিয়েছে বিডি ওয়েল্ডিং এবং সাড়ে ৭ শতাংশ দর হারিয়েছে ইস্টার্ন ল্যুব্রিকেন্টস। অন্যান্য খাতের মধ্যে বীমা খাতের ২৫ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ও বেড়েছে ১৭টির। প্রকৌশল খাতের আটটির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৮টির, বস্ত্র খাতে ১১টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৩৪টির, ওষুধ ও রসায়ন খাতের সাতটির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২২টির দর কমেছে। অন্য সব খাতে একই অবস্থা দেখা গেছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: