১৩ জুন ২০১৮ বুধবার, ০৯:১৩ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
বোনাস লভ্যাংশ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের পর দর সমন্বয়ের দিনে বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টসের শেয়ার সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। গত নভেম্বরে ৯০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পর দর সমন্বয়ের দিনসহ পরের কয়েকদিনে স্ট্রাইল ক্রাফটের শেয়ারও সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছিল।
গত বছরের জন্য বার্জার পেইন্টস কোম্পানির পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের ২০০ শতাংশ নগদ ও ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী ১৭ জুলাই এজিএমে এ লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এ এজিএমের রেকর্ড ডেট ছিল গত সোমবার।
রেকর্ড ডেটের আগে রোববার ডিএসইতে শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইস ছিল দুই হাজার ৭৫৯ টাকা ১০ পয়সা। ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ শেয়ারটির সমন্বয় করা দর নির্ধারণ করে এক হাজার ৩৭৯ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় অর্ধেক। একই সঙ্গে সার্কিট ব্রেকার আরোপ থাকায় শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দরের সীমা ছিল যথাক্রমে এক হাজার ২৯৩ টাকা ৪০ পয়সা ও এক হাজার ৪৬৫ টাকা ৮০ পয়সা।
গতকাল ডিএসইতে বার্জার পেইন্টসের শেয়ার ওই সর্বোচ্চ দর এক হাজার ৪৬৫ টাকা ৮০ পয়সাতেই কেনাবেচা হয়, যা সমন্বয় করা দরের তুলনায় ৮৬ টাকা বা ৫ শতাংশ বেশি। দর সমন্বয়ের দিনে গতকাল মঙ্গলবার নগদ লভ্যাংশ ছাড়াও বাজারদর বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ দাম বেশি পেলেন শেয়ারহোল্ডাররা।
যদিও ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় শেয়ারপ্রতি এক হাজার ২৯৩ টাকা কমে এক হাজার ৪৬৫ টাকা ৮০ পয়সায় নেমেছে। অর্থাৎ গত রোববারের তুলনায় দর হারিয়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ বাজারে গতকাল ১৮৯ লেনদেনের মাধ্যমে বার্জারের ১১ হাজার ৬৮০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। প্রতিটি লেনদেনেই শেয়ারটির দর ছিল সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর।
ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, বার্জার পেইন্টস ছাড়াও গতকাল হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), জেএমআই সিরিঞ্জ, মুন্নু স্টাফেলার্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। তবে লেনদেনের শেষ পর্যায়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ওই দরে স্থির থাকেনি।
এদিকে ঈদের ছুটির আগে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পৌনে ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫৩৬৫ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। সিএসইর প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে ৯৯৮০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। শুধু শেয়ারদর ও সূচকই নয়, লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। গতকাল দুই বাজারে সর্বমোট ৪৭১ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা সোমবারের তুলনায় ১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেশি।
আর গত সপ্তাহেও দরবৃদ্ধির ক্ষেত্রে দুর্বল মৌল ভিত্তির শেয়ারগুলোর প্রাধান্য ছিল। সে ধারায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। ছোট-বড় প্রায় সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারের বাজারদর বেড়েছে। ক্রমাগত কমতে থাকা মৌল ভিত্তির ভালো শেয়ারগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে। এতে সর্বশেষ দু`দিনে বাজারের প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে প্রায় ৪২ পয়েন্ট।
তবে গতকালও কমেছে মোবাইল ফোন অপারেটরদেরগুলোর মধ্যে একমাত্র তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্রামীণফোনের শেয়ারদর। আরও দুই টাকা ৪০ পয়সা দর হারিয়ে ৩৭৪ টাকা ৬০ পয়সায় কেনাবেচা হয় এটি। গতকালের সর্বনিম্ন লেনদেন মূল্য ছিল ৩৭৩ টাকা ৩০ পয়সা।
তবে আরেকটি দামি শেয়ার হিসেবে বিবেচিত ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে। ৩০ পয়সা বেড়ে সর্বশেষ ৭৭ টাকা ৬০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। আইসিবির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দর ১৪১ টাকা ৪০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। আইডিএলসির দরও ৬০ পয়সা বেড়ে ৬৬ টাকা ৯০ পয়সায় উঠেছে। লংকাবাংলার দর বেড়েছে। জ্বালানি খাতের লিনডে বিডির দরও বেড়েছে। তবে কয়েকদিন ধরে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ারদর বৃদ্ধি অনেককে ভালো শেয়ারে উদ্বুদ্ধ করছে। গতকাল
শেয়ারটি ২৪৭ টাকা ৮০ পয়সায় কেনাবেচা হয়, যা আগের দিনের তুলনায় নয় টাকা ৪০ পয়সা বেশি।
প্রকৌশল খাতের আফতাব অটোমোবাইল, বিএসআরএম লিমিটেড, ইফাদ অটোস, নাভানা সিএনজি ও সিঙ্গার বাংলাদেশের শেয়ারদর বেড়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ইবনে সিনা, জেএমআই, মারিকো, রেকিট বেনকিজারের শেয়ারদরও বেড়েছে। তবে এর আগে পড়তে থাকা স্কয়ার ফার্মার শেয়ারদর শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। গতকালও শেয়ারটি প্রায় চার টাকা বেড়ে ২৮৬ টাকায় কেনাবেচা হয়।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।