facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

ডিএসইতে কমছে চীনা জোটের বিনিয়োগ


২৫ মার্চ ২০১৮ রবিবার, ০১:৪৯  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


ডিএসইতে কমছে চীনা জোটের বিনিয়োগ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ারহোল্ডাররা ২০১৭ সালের ৩০ জুন হিসাব বছরের পূর্বঘোষিত ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করেছেন।

এরফলে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী অংশের শেয়ারে শর্ত অনুযায়ী সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত চীনা জোটের বিনিয়োগের পরিমান কমবে। গত ২২ মার্চ ডিএসইর বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) পরিচালনা পর্ষদ ঘোষিত নগদ লভ্যাংশে অনুমোদন দেন সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা।

ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ শেয়ার নির্ধারন করা রয়েছে। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিয়ে চীনা জোট ডিএসইর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ারের দর ২২ টাকায় কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ জুন হিসাব বছরের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ প্রস্তাব দেয় চীনা জোট। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে যে, ডিএসইর সম্পদে মূল্যে যদি কোনো পরিবর্তন ঘটে, তাহলে দরপ্রস্তাবেও পরিবর্তন আসবে। এ হিসেবে যেহেতু ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা নগদ লভ্যাংশের অনুমোদন দিয়েছেন, সে কারণে ডিএসইর শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য কমে যাবে। তাই ডিএসইতে চীনা জোটের বিনিয়োগ অন্তত ৪৫ কোটি টাকা কমে যেতে পারে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে শর্তসাপেক্ষে ডিএসইর শেয়ার ক্রয়ে চীনা জোটের সংশোধিত প্রস্তাব জমা দিতে আরো এক মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে। গত ১৯ মার্চ শেয়ার ক্রয়চুক্তিসহ চীনা জোটের বিনিয়োগ প্রস্তাবটি বিএসইসিতে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানোর আগে ডিএসইর সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নেয়াসহ পাঁচটি শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আইনী বাধ্যবাধকতার কারণে এজিএমে চীনা জোটের প্রস্তাব বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নেয়া যায়নি। এ অবস্থায় বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) ডেকে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নিতে হবে। এজন্য ২১ দিন আগে নোটিশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ মার্চ এজিএমের নোটিশ দেওয়া হতে পারে। এ হিসেবে আগামী ১৭ এপ্রিল ইজিএম অনুষ্ঠিত হতে পারে।

বর্তমানে ডিএসইর পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে ১ হাজার ৮০৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের হিসাবে ডিএসইর মোট শেয়ার সংখ্যা হচ্ছে ১৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০। এখন ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ নিলে ডিএসইকে ১৮০ কোটি টাকার বেশি বিতরন করতে হবে।

ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে উন্মুক্ত দরপত্রে শেয়ার ক্রয় চুক্তিতে চীনা জোট বেশকিছু শর্তারোপ করে। যদিও প্রস্তাব যাচাই বাছায়ে বিএসইসির কমিটির ব্যাখ্যা চাওয়ার প্রেক্ষিতে তিনটি ছাড়া অন্যসব শর্ত প্রত্যাহার করে নেয় চীনা জোট। তবে যে শর্ত বহাল ছিল তারমধ্যে অন্যতম ছিল শেয়ার মূল্য নির্ধারন। এক্ষেত্রে ২০১৭ সালের ৩০ জুন হিসাব বছরের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে চীনা কনসোর্টিয়াম ডিএসইর প্রতি শেয়ার ২২ টাকায় দরপ্রস্তাব করে। কিন্তু যদি পরবর্তিতে ডিএসইর সম্পদে মূল্যে কোন পরিবর্তন ঘটে, তাহলে দরপ্রস্তাবেও পরিবর্তন আসবে বলে শর্তে উল্লেখ ছিল।

এ অবস্থায় ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদনের ফলে চীনা জোটের প্রস্তাবিত শেয়ার দরে মূল্য সমন্বয় হবে। এ হিসেবে প্রতি শেয়ারে এক টাকা কমে শেয়ার দর ২২ টাকার পরিবর্তে ২১ টাকার প্রস্তাব দিতে পারে চীনা জোট। ফলে ডিএসইতে চীনাদের বিনিয়োগ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা কমতে পারে। এতে চীনা জোটের বিনিয়োগ প্রস্তাব ৯৯২ কোটি টাকার পরিবর্তে ৯৪৭ কোটি টাকায় নেমে আসবে।


নিট মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ নেয়ার কারণে ডিএসইর সম্পদ মূল্য কমতে দেখা যাচ্ছে। ২০১৬ সালের ৩০ জুন ডিএসইর মোট সম্পদ মূল্য ছিল ২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা, যা ২০১৭ সালে ২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকায় নেমে আসে। ২০১৬ সালে শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১১ টাকা ৩৪ পয়সা, যা ২০১৭ সালের ৩০ জুন ১১ টাকা ৩ পয়সায় নেমে আসে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হতে আগ্রহ প্রকাশ করে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব জমা দেয় চীনা জোট। একই দিন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নেতৃত্বে গঠিত ভারতীয় জোটও ডিএসইর কৌশলগত শেয়ার কিনতে প্রস্তাব জমা দেয়। তবে ভারতের তুলনায় চীনের জোট বেশি দর প্রস্তাব করায় ডিএসইর কৌশলগত শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে তারা এগিয়ে থাকে। পরবর্তিতে কৌশলগত অংশীদার করতে চীনা জোটের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে তা অনুমোদনের জন্য গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিএসইসিতে পাঠায় ডিএসই।

পরবর্তিতে চীনা জোটের প্রস্তাব যাচাই বাছাই করতে বিএসইসি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে পরবর্তিতে চীনা জোট শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত অধিকাংশ শর্ত প্রত্যাহার করে নেয়। যদিও গত ১৯ মার্চ ডিএসইর কৌশলগত শেয়ারে চীনা জোটের বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি বিএসইসি। তবে পাঁচ শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সংশোধিত প্রস্তাব জমা দেয়ার সুযোগ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

 

 

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: