facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়ার কারণ


১৬ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ০৯:৫১  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়ার কারণ

পুঁজিবাজার তালিকাভূক্ত বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেডের সরকারি রাজস্ব আদায়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সহায়তা ও ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বুধবার এনবিআরের আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর (মূসক) শাখা থেকে বিএসইসি চেয়ারম্যান বরাবর এ চিঠি দেওয়া হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এলটিইউ সূত্র জানায়,গ্রামীণফোন লিমিটেড এলটিইউ এর অধিক্ষেত্রভূক্ত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। গ্রামীণফোনের নিকট মূসক বাবদ এনবিআর ২ হাজার ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগে মামলা থাকলেও রাজস্ব পরিশোধে গ্রামীণফোন কোন ধরনের সাড়া দিচ্ছে না। বিপুল পরিমাণ এ বকেয়া রাজস্ব আদায়ে বাধ্য হয়ে ব্যবস্থা নিতে বিএসইসি চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে এলটিইউ।

বকেয়া রাজস্বের মধ্যে সিম রিপ্লেসমেন্টে সংক্রান্ত ১ হাজার ২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা ও ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ১৯ কোটি ৬ লাখ টাকা,৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সিম ট্যাক্স ৪৫২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, বিধি বর্হিভূত রেয়াত বাবদ ২৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ৯৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সিম রিপ্লেসমেন্টে (সিম পরিবর্তন) গ্রামীনফোন প্রথম দফায় ১ হাজার ২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছর, ২০১৩-১৪ অর্থবছর এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নতুন সিম কেনার জন্য ৬০০ টাকা হারে পরিশোধ করতে হতো গ্রাহকদের।

সে সময়ে সিম বিক্রিতে মূসক ছিল ৩০০ টাকা। তবে সিম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোনো ট্যাক্স নেওয়া হতো না। এই সুযোগের অপব্যবহার করে পুরাতন সিম নতুন করে বিক্রি করে গ্রামীনফোন। এতে প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ২৩ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়।

চলতি বছরের ৫ জুন আপীলাত ট্রাইব্যুনাল সরকার পক্ষে রায় দেয়। পরে গ্রামীনফোন হাইকোর্ট বিভাগের আপীল বিভাগ ও ভ্যাট আপীল দায়ের করে।

সিম রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ফাঁকির বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, এ পাওনা আদায়ে প্রাথমিক দাবিনামা জারি করা হয়েছে। সিম রিপ্লেসমেন্টের বিষয়ে আপীলাত ট্রাইব্যুনালের রায় সরকার পক্ষে থাকায় এ মূসক গ্রামীনফোনকে পরিশোধ করতেই হবে।

স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ১৯ কোটি ৬ লাখ টাকার বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, এ মূসক ফাঁকির বিষয়ে চলতি বছরের ৭ জুন আপীলাত ট্রাইব্যুনাল, আপীল বিভাগ সরকারের পক্ষে রায় দেয়।

সিম ট্যাক্সের ৪৫২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার ফাঁকির বিষয়ে বলা হয়েছে, গ্রামীনফোন ২০০৬ সালের আগস্ট থেকে ২০০৭ সালের মার্চ পর্যন্ত সিম কার্ডের ওপর প্রযোজ্য মূসক ও সম্পূরক শুল্ক হিসেবে ৩৪৮ কোটি ৯ লাখ ৭১ হাজার ৬৯৪ টাকা ফাঁকি দিয়েছে। আপীলাত ট্রাইব্যুনালে এ বিষয়ে শুনানী হয়েছে। তবে ট্রাইব্যুনাল অপেন কোর্টে সরকার পক্ষে রায় হওয়া আইন সঙ্গত মর্মে মত দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে এ মূসক ও সম্পূরক শুল্ক পরিশোধ না করায় মূসক আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(৩) অনুযায়ী ২% হারে সুদসহ মোট ৪৫২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা হয়েছে।

স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার মূসক ফাঁকির বিষয়ে বলা হয়, আপীলাত ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। শুনানী শেষে রায়ের অপেক্ষায় আছে। কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগ ও আপীল বিভাগ থেকে সরকার পক্ষে ইতোমধ্যে রায় হয়েছে। স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার মূসক তিনটি মোবাইল অপারেটর ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিশোধ করছে।

২০১৩ সালের আইন বর্হিভূত ২৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা রেয়াত সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগে একটি মামলা বিচারাধীন। তবে বিধি বর্হিভূতভাবে এ রেয়াত গ্রহণ করায় সরকারের পক্ষে রায় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৯৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বিধি বর্হিভূত রেয়াত গ্রহণ সম্পর্কে চিঠিতে বলা হয়, এ বিষয়ে মামলা আপীলাত ট্রাইব্যুনালে বিচারধীন। মূসক আইন লঙ্গন করায় এ বিষয়ে সরকারের পক্ষে রায় হবে বলে আশা করছে এলটিইউ।

স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা সম্পর্কে বলা হয়, গ্রামীনফোন ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ মূসক ফাঁকি দিয়েছে। আপীলাত ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ ও আপীল বিভাগ সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছে। স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার মূসক তিনটি মোবাইল অপারেটর ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিশোধ করছে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে পৃথকভাবে চিঠি দিয়েছে এনবিআর।

এ বিষয়ে এলটিইউ এর একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সরকারি রাজস্ব প্রদানে গড়িমসি করছে। বিশেষ করে আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বকেয়া পাওনা পরিশোধ করছে না। এমনকি রাজস্ব পাওনা বিষয়ে একাউন্টসে কোন ধরনের প্রভিশন বা কোন ধরনের শর্ত রাখেনি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা বিএসইসিকে চিঠি দিয়েছি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: