facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

এখন কারসাজি করলে লেনদেনের সময়ই ধরে ফেলবে বিএসইসি


০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার, ০১:৩১  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


এখন কারসাজি করলে লেনদেনের সময়ই ধরে ফেলবে বিএসইসি

পুঁজিবাজার উত্থান-পতনে বিভিন্ন ব্রোকার হাউসের ভূমিকা নিরূপণে লেনদেন চলাকালীন (রিয়েল টাইমে) প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। চলতি বছর সূচকের অব্যাহত পতনের পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এজন্য লেনদেন সংক্রান্ত সফটওয়্যারের সর্বশেষ প্রযুক্তির মডিউল এসইসিতে সরবরাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানিয়েছে কমিশন।

চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারির পর থেকে টানা দরপতন হয় পুঁজিবাজারে। গত ২২ জুলাই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি সাড়ে ১৬ শতাংশ হারিয়ে ৪৯৬৬ পয়েন্টে নেমে আসে। এরপর পরবর্তী এক মাস কিছুটা স্থিতিশীলতা থাকার পর গত ২৫ আগস্ট থেকে আবারও পতন ধারা দেখা দেয় পুঁজিবাজারে। গতকাল এ সূচকটি নেমে আসে ৫০০৭ পয়েন্টে। এমন পরিস্থিতিতে লেনদেন চলাকালীন শীর্ষ ব্রোকার ও এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ গ্রাহকদের শেয়ার কেনাবেচার তথ্য পর্যালোচনার জন্য ডিএসইর সার্ভিল্যান্স ব্যবস্থার সরাসরি সংযোগ চায় এসইসি।

জানা গেছে, এসইসির সার্ভিল্যান্স বিভাগ স্টেট অব দ্য আর্ট সার্ভিল্যান্স প্রযুক্তি ইনস্ট্যান্ট ওয়াচ মার্কেট সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (আইডব্লিউএমএসএস) ব্যবহার করে থাকে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজার পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এসইসির সার্ভিল্যান্স বিভাগ বহুমাত্রিক নজরদারি কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। এর পাশাপাশি ডিএসইর পূর্ববর্তী লেনদেন পদ্ধতি টেসার (দি ইলেকট্রোনিক সিকিউরিটি আর্কিটেকচার) সঙ্গে সংযুক্ত একটি স্বতন্ত্র টার্মিনাল থেকে ব্রোকার পজিশন সংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ নজরদারি কার্যক্রম সম্পাদন করত এসইসি। যার মাধ্যম শীর্ষ ব্রোকার হাউসগুলোর শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়, নিট কেনাবেচা, শীর্ষ গ্রাহকদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়, ব্রোকারদের নির্দিষ্ট সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় ও গ্রাহকদের নির্দিষ্ট সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পেত এসইসি।

পরবর্তী সময়ে ডিএসই টেসা’র পরিবর্তে নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড সিস্টেম কোম্পানির সহযোগিতায় স্বয়ংক্রিয় অত্যাধুনিক ট্রেডিং সফটওয়্যার ডিএসই এক্সট্রিম আইনেট ম্যাচিং ইঞ্জিন ও ডিএসই ফ্লেক্সটিপি চালু করে। কিন্তু ডিএসই ওই সর্বশেষ প্রযুক্তির মডিউলটি কমিশনকে সরবরাহ করেনি। ফলে বাজার উত্থান-পতনে ভূমিকা রাখা শীর্ষ ব্রোকার হাউস ও তাদের শীর্ষ গ্রাহকদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য ও নিট পজিশন লেনদেন চলাকালীন পর্যবেক্ষণ করতে পারে না ডিএসই। এমন পরিস্থিতিতে লেনদেনে ব্যবহৃত সর্বশেষ প্রযুক্তির মডিউলটির একটি টার্মিনাল এসইসিতে স্থাপনের জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

প্রসঙ্গত, টানা দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ ব্রোকার হাউস ও সে সব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ গ্রাহকদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে গত জুলাই মাসে তদন্ত কমিটি করে এসইসি। সম্প্রতি ওই কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। ডিএসইর লেনদেন ব্যবস্থার সর্বশেষ প্রযুক্তির সঙ্গে কোনো সংযোগ না থাকায় শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস ও তাদের শীর্ষ গ্রাহকদের শেয়ার কেনাবেচার তথ্য জানতে স্টক এক্সচেঞ্জের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে এসইসিকে। লেনদেনের সময় যাতে শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের তথ্য রিয়েল টাইমে দেখা যায়, সে জন্যই লেনদেন ব্যবস্থার সংযোগ চায় এসইসি।

বিদেশিদের পাশাপাশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপের কারণে গতকালও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৬ পয়েন্ট হারিয়েছে। জুন হিসাব বছর শেষ হওয়া কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণা শুরু হলেও বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমতে দেখা যাচ্ছে। গতকালও ডিএসইর বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় সূচক কমেছে। একই সঙ্গে লেনদেনও আগের দিনের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে গেছে।

গতকাল সূচক কমাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল গ্রামীণফোনের। শীর্ষ মূলধনী এ কোম্পানির শেয়ার দর গতকাল ৯ টাকা ৪০ পয়সা কমে গেছে। ফলে কোম্পানিটি একাই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৬ পয়েন্ট কমাতে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএটি বাংলাদেশ, ব্র্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আইডিএলসি, ইবিএল, সিটি ব্যাংক, একমি ও বার্জারের শেয়ারের দরপতন সূচক কমাতে ভূমিকা রেখেছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, যেভাবে বিদেশিদের পাশাপাশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিক্রিচাপ আসছে, তাতে সূচকটি আরও নিচে নেমে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: