facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০৪ মে শনিবার, ২০২৪

Walton

ফের বাড়ছে ব্যাংক ঋণের সুদহার


৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার, ০১:৩৪  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফের বাড়ছে ব্যাংক ঋণের সুদহার

ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের প্রতিশ্রুতির কারণে গত জুলাই থেকে ঋণের সুদহার কমছিল। তবে টানা কয়েক মাস কমার পর নভেম্বরে এসে আবার বেড়েছে। গত নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো গড়ে ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করেছে। আর সরকারি ব্যাংকগুলো সুদ নিয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে বেসরকারি ব্যাংকে ঋণের গড় সুদহার ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকে ছিল ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মূলত আমানতের সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে ঋণের সুদহারও বেড়েছে। নতুন বছরে সুদহার আরও বাড়তে পারে বলে জানান সংশ্নিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে ব্যাংক খাতের ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এর আগে জুনে গড়ে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ হয়। সেখান থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে কমে। গত জুনে ব্যাংকগুলো গড়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে আমানত নেয়। ঋণের সঙ্গে আমানতের সুদহার ধারাবাহিকভাবে কমে অক্টোবরে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামে। নভেম্বরে বেড়ে তা ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ হয়েছে।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রীয় মালিকানার অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, সুদহার বৃদ্ধির বিষয়টি নির্ভর করে বাজার চাহিদার ওপর। সাম্প্রতিক সময়ে চাহিদা বৃদ্ধির ফলে সুদহার বাড়ছে। তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশনার সরকারি ব্যাংকগুলো আমানতে ৬ শতাংশ এবং ঋণে ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। এখন বাড়লেও তা সীমার নিচে রয়েছে। তবে অনেক বেসরকারি ব্যাংক এ নির্দেশনা পরিপালন করেনি।

সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংকগুলোর আমানতে সুদহার কমলেও সঞ্চয়পত্রের হার অপরিবর্তিত থাকায় গ্রাহকরা এখন ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে টাকা রাখছে বেশি। এতে করে আশানুরূপ আমানত পাচ্ছে না অধিকাংশ ব্যাংক। নির্বাচনের আগে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ বিতরণে বিভিন্ন পক্ষের চাপ পরে থাকবে না এমন ধারণা বাজারে রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকে তারল্যের ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

২০ জুন ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির বৈঠক থেকে জুলাই থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ বিতরণের ঘোষণা দেওয়া হয়। অধিকাংশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত কার্যকর না করলেও ঘোষণার পর থেকে সুদহার কমতির দিকে ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, নভেম্বরে বেসরকারি খাতের অনেক ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার ১২ শতাংশের ওপরে আছে। ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে গড় সুদহার সবচেয়ে বেশি বেসরকারি খাতের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের। নভেম্বরে ব্যাংকটি গড়ে ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করেছে। নভেম্বরে ঋণের গড় সুদহার ১২ শতাংশের ওপরে ছিল ৮ ব্যাংকের। ব্যাংকগুলো হলো- এনআরবি কমার্শিয়াল, মধুমতি, ব্র্যাক, ফারমার্স, মিডল্যান্ড, ইউনিয়ন, মেঘনা ও এনআরবি ব্যাংক। পর্যায়ক্রমে গড় সুদহার ১১ শতাংশের ওপরে ছিল বেসরকারি খাতের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, প্রিমিয়ার, ওয়ান ও এবি ব্যাংকের। আর ১৪টি ব্যাংকের গড় সুদহার ছিল ১০ শতাংশের ওপরে।

গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ঋণ চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে গত ৩০ জানুয়ারি ঋণ-আমানত অনুপাত কমিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে সুদহার ব্যাপক বাড়তে শুরু করে। অনেক ব্যাংক তখন ডাবল ডিজিট সুদে আমানত নিতে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ বিতরণের আশ্বাস দেন ব্যাংকের উদ্যোক্তারা। তবে তারাও কিছু দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ এপ্রিল ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক বৈঠক থেকে ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণের হার বা সিআরআর কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময়ে রেপোর সুদহার কমানো এবং সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: