facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০১ মে বুধবার, ২০২৪

Walton

প্রত্যাশার চেয়েও বেড়েছে চীনের আমদানি-রফতানি


০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার, ১১:০৮  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রত্যাশার চেয়েও বেড়েছে চীনের আমদানি-রফতানি

জানুয়ারিতে চীনের ব্যবসা-বাণিজ্যে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। এ সময় দেশটি বিশেষজ্ঞদের ধারণার চেয়েও বেশি পণ্য আমদানি ও রফতানি করেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির বাণিজ্যে এ চাঙ্গাভাব আন্তর্জাতিক চাহিদা বৃদ্ধিকেই নির্দেশ করছে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমে এসেছে; গত বছর যা ছিল রেকর্ড উচ্চতায়। খবর রয়টার্স, এএফপি ও সিএনবিসি।

বৃহস্পতিবার চীনের পরিসংখ্যান দপ্তর জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে চীনের আমদানি ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং রফতানি ১১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে প্রকাশিত ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা খাতের জরিপ তথ্যেও চলতি বছরটি স্থিতিশীলতার সঙ্গে শুরুর আভাস পাওয়া গেছে। দূষণ প্রতিরোধ ও ঝুঁকিপূর্ণ অর্থায়ন বন্ধে কঠোর নীতিমালা গ্রহণ করা সত্ত্বেও দেশটি এ গতিশীলতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

পরিসংখ্যান দপ্তরের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, এক বছর আগের তুলনায় জানুয়ারিতে চীনের রফতানি ১১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। ডিসেম্বরে বেড়েছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন, জানুয়ারিতে টানা দ্বিতীয় মাসের মতো রফতানি প্রবৃদ্ধি কমে ৯ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াবে। কিন্তু পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে দেখা গেছে, আমদানি সংশ্লিষ্টদের পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ সময় আমদানি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ। গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর এটি আমদানি প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে দ্রুতগতি। বিশেষজ্ঞরা জানুয়ারিতে আমদানিতে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।

ডিসেম্বরে চীনের আমদানি প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে কমে সাড়ে ৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। বায়ুদূষণ কমাতে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ধাতব গলানোর কারখানা এবং মিলগুলোকে বেইজিং উৎপাদন হ্রাসে বাধ্য করায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমদানি কমবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। জানুয়ারিতে আমদানি বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে কমোডিটি পণ্য। এ সময় রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে চীন। আমদানির রেকর্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আকরিক লোহা।

আমদানি-রফতানি দুটিই বেড়ে যাওয়ায় ১১ মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে চীন সবচেয়ে কম বাণিজ্য উদ্বৃত্ত পেয়েছে। এ সময় দেশটির বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৪ কোটি ডলার; যা পূর্বাভাসকৃত ৫ হাজার ৪১০ কোটি ডলারের চেয়ে অনেক কম। ডিসেম্বরে চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৫ হাজার ৪৬৯ কোটি ডলার। জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমেছে। জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমে ২ হাজার ১৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমে যাওয়া চীনের জন্য সুসংবাদ; কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়টি নিয়েই বেইজিংকে মাসের পর মাস আক্রমণ করে যাচ্ছেন। তবে দুই দেশের এখনো যে পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত। কারণ দেশ দুটির বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি খুবই সংবেদনশীল ইস্যু। এ প্রসঙ্গে এএনজেড ব্যাংকের চীনবিষয়ক অর্থনীতিবিদ বেটি ওয়াং বলেন, ‘চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক ঘিরে যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে, তা অদূর ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মেয়াদের প্রথম বছরেই দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে ৩৭ হাজার ৫২০ কোটি ডলার হয়েছে; যা প্রায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে গত বছর চীনের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ছিল রেকর্ড ২৭ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার। বিভিন্ন ধরনের চীনা পণ্যে শুল্কারোপের মাধ্যমে এ ঘাটতি কিছুটা কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে ট্রাম্প প্রশাসন।

২০১৭ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যে চাঙ্গা অবস্থার সুবিধা পেয়েছে চীন। এ কারণেই ২০১৩ সালের পর চীনের বাণিজ্যে দ্রুততম গতি লক্ষ করা গেছে। চলতি বছরেও বৈশ্বিক চাহিদা শক্তিশালী থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিবাদের কারণে তা ২০১৮ সালে চীনের রফতানিতে প্রভাব ফেলতে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: