facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

নাবিক মুক্তির আগে যেভাবে অর্থ পেল সোমালিয়ার জলদস্যুরা


১৪ এপ্রিল ২০২৪ রবিবার, ১০:২৯  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


নাবিক মুক্তির আগে যেভাবে অর্থ পেল সোমালিয়ার জলদস্যুরা

 

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ৩২ দিন পর মুক্তি পেয়েছে। সোমালিয়ার সময় শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিট) জাহাজটি থেকে দস্যুরা নেমে যায়।

এরপরই জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় এমভি আবদুল্লাহর দুই পাশে দুটি যুদ্ধজাহাজ পাহারা দিয়ে সোমালিয়া উপকূল ত্যাগ করতে থাকে।

বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের এই জাহাজ উদ্ধারে কীভাবে মুক্তিপণের অঙ্ক দস্যুদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তা নাবিকেরা জাহাজের ডেকে থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। এমনই একজন নাবিক তাঁর পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন, ছোট উড়োজাহাজ থেকে জাহাজের পাশে ডলারভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়। জাহাজের পাশে আগে থেকেই স্পিডবোটে করে অপেক্ষায় ছিল দস্যুরা। ডলারভর্তি ব্যাগ পানি থেকে সংগ্রহ করে দস্যুরা। এরপর প্রায় আট ঘণ্টা পর গভীর রাতে দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে যায়।

আরেকজন নাবিকের বর্ণনা তুলে ধরে পরিবারের এক সদস্য প্রথম আলোকে জানান, ডলারভর্তি ব্যাগ পানিতে ফেলার আগে নাবিকদের জাহাজের ডেকে নিয়ে এসে এক লাইনে দাঁড় করায় দস্যুরা। এ সময় পেছন থেকে নাবিকদের দিকে অস্ত্র তাক করে ছিল দস্যুরা। উড়োজাহাজ থেকে নাবিকদের প্রতি ইশারায় হাত তোলার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এরপর সব নাবিক হাত তোলেন। অর্থাৎ সব নাবিক জীবিত আছেন, এমন নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই উড়োজাহাজ থেকে ডলার ফেলা হয়। তবে ব্যাগে কত ডলার ছিল, তা নিয়ে মালিকপক্ষ কোনো কিছু জানায়নি।

শনিবার বিকেলে মুক্তিপণের অর্থ পেলেও দস্যুরা তাৎক্ষণিকভাবে জাহাজ থেকে নেমে যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, জলে-স্থলে নজরদারি এড়াতেই গভীর রাতে দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। মুক্তিপণের অর্থ পরিশোধের সময় জিম্মি জাহাজটির অদূরে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ। আবার স্থলভাগে ছিল সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশের টহল।

জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় গণমাধ্যমকে জাহাজটি মুক্ত হওয়ার খবর দেন। যুদ্ধজাহাজের পাহারায় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল ত্যাগ করার কথা জানান তিনি। তবে মুক্তিপণ নিয়ে কোনো কথা বলেননি শাহরিয়ার জাহান।

১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটি জিম্মি করার পর সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূলের কাছে নিয়ে যায় দস্যুরা। ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা প্রথম মুক্তিপণের দাবি জানায়। প্রায় দুই সপ্তাহ দর-কষাকষির পর মুক্তিপণের অঙ্ক চূড়ান্ত হয়।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, দর-কষাকষি চূড়ান্ত হওয়ার পরই মুক্তিপণের অঙ্ক পৌঁছানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। দস্যুরা নগদ ডলার ছাড়া নাবিকদের মুক্তি দেয় না। সে জন্য উড়োজাহাজে করে নগদ ডলার পৌঁছে দিতে হয় জিম্মি জাহাজের পাশে। আফ্রিকা অঞ্চলে এ রকম ছোট এয়ারক্রাফট পাওয়া যায়, যেগুলো খুব নিচু এলাকা দিয়ে উড়তে পারে।

এর আগে ২০১০ সালে ছিনতাই হওয়া একই কোম্পানির জাহাজ এমভি জাহান মণি ১০০ দিনের মাথায় ছেড়ে দেয় দস্যুরা। সে সময় একইভাবে মুক্তিপণের অর্থ সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে ওই জাহাজের নাবিক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানিয়েছিলেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: