১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ শনিবার, ০৮:১৫ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সীমানায় জেগে ওঠা চর অন্য জেলার সীমানায় যুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে ‘সন্দ্বীপ সীমানা রক্ষা আন্দোলন কমিটি’ নামের একটি সংগঠন। কমিটির দাবি, ঠেঙ্গারচর ও জাহাইজ্জার চর (স্বর্ণদ্বীপ) সন্দ্বীপের সীমানার মধ্যে থাকলেও তা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আন্দোলন কমিটির নেতারা বলেন, প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও সন্দ্বীপের সীমানা রক্ষা করা হবে। দরকার হলে ঠেঙ্গারচর ও জাহাইজ্জার চর অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় সন্দ্বীপের কালাপানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল হক চৌধুরী, জেলা যুবদলের সহসভাপতি ফোরকান উদ্দিন, সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউল হাসান, আন্দোলন কমিটির সমন্বয়কারী মোকতাদের আজাদ খান প্রমুখ অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সন্দ্বীপের সীমানা নির্ধারণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সন্দ্বীপের মূল ভূখণ্ড বিভিন্ন সময়ে সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়ায় লাখো মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। আবার সন্দ্বীপ-সংলগ্ন সাগরে নতুন নতুন চরও জেগে উঠছে। কিন্তু সন্দ্বীপের সীমানা থেকে এই চর কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
সন্দ্বীপের সীমানা চিহ্নিত করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ২০০১ সালের জরিপ অনুযায়ী সন্দ্বীপের মোট আয়তন ৭৬২ বর্গকিলোমিটার। এর আগে এবং পরে কিছু চর জেগে উঠেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের সামনেই চলছে চর দখল আর পাল্টা দখলের লড়াই। চর দখল নিয়ে চলছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সীমানা চিহ্নিত করা হলে এই অবস্থার অবসান হবে।
সভায় অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল দিদারুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুধু নোয়াখালীর নন, সারা দেশের নেতা তিনি। আমাদের ভূখণ্ড তিনি ছিনিয়ে নিতে পারেন না।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজের শিক্ষক মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘সন্দ্বীপ নিয়ে গবেষণা করেছি। লন্ডন ও ইতালির জাদুঘরে সন্দ্বীপের মানচিত্র দেখে এসেছি। একসময় ১ হাজার ৮ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে সন্দ্বীপের আয়তন ছিল। কিন্তু সেটা ভেঙে ছোট হয়ে গেছে। আবার আশপাশে চর জেগে উঠেছে। বাপ-দাদার ভিটেমাটি তথা গড়ে ওঠা চরে আমাদের স্বীকৃতি চাই।’
মতবিনিময় সভায় উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান বলেন, অব্যাহত ভাঙনের কারণে এখন সন্দ্বীপের আয়তন ২২৫ বর্গকিলোমিটার। অনেকের বাপ-দাদার আমলে ভিটেবাড়ি ভেঙে গেছে। আবার সেখানে চর জেগে উঠেছে, যার মালিক সন্দ্বীপবাসী। অথচ ২০১৩ সালের জরিপে কিছু চর নোয়াখালীর অংশ দেখিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
ঠেঙ্গারচর ও জাহাইজ্জার চর সন্দ্বীপেরই। ঠেঙ্গারচরে সরকার রোহিঙ্গা পুনর্বাসন করতে চায়। সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কিন্তু এই চর যে সন্দ্বীপের, সেই স্বীকৃতি দিতে হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।