facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০৪ মে শনিবার, ২০২৪

Walton

ইবাদত-বয়ানে মশগুল ইজতেমা ময়দান


০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার, ১১:১৪  এএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


ইবাদত-বয়ানে মশগুল ইজতেমা ময়দান

টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন আজ। ভোরে ফজরের নামাজের পর চলছে ধর্মীয় বয়ান। বয়ান করেছেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। বাংলা তরজমা করেছেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন। ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের নানা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াও মূল বয়ান মঞ্চের পাশে অনুষ্ঠিত হবে গণবিয়ে। আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে যোবায়েরপন্থীদের তাবলীগ জামাতের প্রথম পর্ব।

ইজতেমার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমা ময়দানের ১০৫টি খিত্তা ছাড়াও সড়ক, মহাসড়কের পাশে ও অলি-গলিতে অবস্থান নিয়েছেন দেশ বিদেশের লাখো মুসল্লি। ফজরের নামাজের পর পিনপতন নিরবতায় ধর্মীয় বয়ান শুনছেন তারা। বয়ানের পর এগুলো থেকে নেওয়া শিক্ষা নিয়ে প্রতিটি খিত্তায় দলবেঁধে নিজস্ব আমিরের (দলনেতা) নেতৃত্বে হবে আলোচনা।

তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বিরা আরবি, উর্দু ও হিন্দিতে বয়ান করলেও তাৎক্ষণিকভাবে এগুলো বাংলা, ইংরেজীসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া যারা তাবলীগের দাওয়াতী কাজে বের হবেন খিত্তা অনুযায়ী তাদের তালিকাভুক্ত করা হবে। বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে যৌতুক বিহীন গণবিয়ে।

ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৫ হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ময়দানের ভেতরে ও বাইরে কাজ করছে। সিসিটিভি ও ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে পুরো ময়দান ও আশেপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, সরকারের বিভিন্ন দফতরের লোকজন সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।

এদিকে, ধুলা, ময়লা, শীত, বৃষ্টিসহ নানা প্রতিকূলতা উপক্ষো করে ময়দানে আসা সকল মুসল্লিদের মনোযোগ এখন আলেমদের বয়ানের দিকে। আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে টঙ্গীর তুরাগ তীর মুখিরত। ফজরের নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত অবিরাম চলছে বিভিন্ন ভাষায় বয়ান। দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট আলেমগণ বিভিন্ন বিষয়ের উপর বয়ান করছেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনোনিবেশ করে ঈমান, আখলাক ও দ্বীনের বিভিন্ন বয়ান শুনেন। প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন শনিবার বাদ ফজর থেকে তুরাগ তীরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে লাখ-লাখ মুসল্লি উদ্দেশে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বয়ান।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে শনিবার বাদ ফজর মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান, তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন।

বাদ জোহর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল গোদরা। বাদ আসর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান। বাদ আসর যৌতুক বিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।

সকালে বয়ানে ওলামায়ে কেরাম বলেন, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে জানমাল দিয়ে মেহনত করতে হবে। ঈমান আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না।

বয়ানে বলা হয়, দাওয়াতের মেহনত হলো নবুওয়াতি মেহনত। এই মেহনত খুলুসিয়াত ও আজমতের সাথে যারা করবে তাদের যেকোনো আমলের ফজিলত বহুগুণ বেড়ে যায়। ইজতেমায় মূল বয়ান উর্দূতে হলেও অংশ নেওয়া বিভিন্ন ভাষাভাষী মুসল্লিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।

আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এই ঢল চলবে। এর মধ্যে ইজতেমা ময়দান ভরে গেছে। রোববার হেদায়তি বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে এবারের প্রথম পর্বের বিশ্বইজতেমা। সবকিছু ঠিক থাকলে রোববার ১০টার পরে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ হলো যৌতুকবিহীন বিয়ে। সম্পূর্ণ শরিয়ত মেনে তাবলিগের রেওয়াজ অনুযায়ী ইজতেমার আজ শনিবার বাদ আসর ইজতেমার বয়ান মঞ্চের পাশেই বসবে যৌতুকবিহীন বিয়ের আসর বসবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

ইজতেমার প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন খিত্তা থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চিল্লায় অংশ নিতে ইচ্ছুক মুসল্লিদের তাশকিলের কামরায় নিয়ে তালিকাভুক্ত করা হবে। পরে কাকরাইল মসজিদের তাবলিগের মুরব্বিদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে এলাকা ভাগ করে তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাবলীগ কাজে পাঠানো হবে।
বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ যৌতুকবিহীন বিয়ে।

কনের সম্মতিতে ও তার অনুপস্থিতিতে বর এবং কনে পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় ওই বিয়ে। অভিভাবকরা দম্পতিদের নাম তালিকাভুক্ত করান। বিয়ের পর বয়ান মঞ্চ থেকেই মোনাজাতের মাধ্যমে নব দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করা হবে। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় মোহর ফাতেমীর নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী মোহরানার পরিমাণ ধরা হয় দেড়শ’ তোলা রুপা বা তার সমমূল্য অর্থ। এবার শতাধিক জোড়া বিয়ে সম্পাদন হবে বলে জানা গেছে। এদিকে, বার্ধক্য জনিত ও অসুস্থ হয়ে প্রথম পর্বে এখন পর্যন্ত ১০ জন মুসল্লি মারা গেছেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: