facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

রিজার্ভের অর্থ চুরি: তদন্ত প্রতিবেদন চায় ফিলিপাইন


০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ সোমবার, ০৯:০০  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


রিজার্ভের অর্থ চুরি: তদন্ত প্রতিবেদন চায় ফিলিপাইন

চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় গতি আনতে বাংলাদেশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন প্রয়োজন বলে মনে করে ফিলিপাইন। এ কারণে রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশের কাছে চেয়েছে ফিলিপাইনের অর্থ বিভাগ। গতকাল এক বিবৃতিতে তারা তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স, ব্লুমবার্গসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম গতকাল এ নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।

চুরি যাওয়া রিজার্ভের মধ্যে দেড় কোটি ডলার বাংলাদেশকে ফেরত দিয়েছে ফিলিপাইন। বাকি অর্থ উদ্ধারের উপায় খুঁজতে গত সপ্তাহে ম্যানিলা সফর করে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল। কীভাবে বাকি অর্থ উদ্ধার করা যায়, তা নিয়ে ফিলিপাইনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাও করেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। আলোচনার পর গতকাল আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ফিলিপাইনের অর্থ বিভাগ।

দেশটির অর্থ সচিব কার্লোস ডমিঙ্গুয়েজ বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত রিজার্ভ চুরির তদন্তের ফলাফলের তথ্য ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ ও অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) সঙ্গে বিনিময় করা। অর্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা বেগবান করতে এটা সহায়ক হবে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকো সেন্ট্রাল এনজি পিলিপিনাসের ডেপুটি গভর্নর নেস্টর এসপেনিলাও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে আইনি প্রক্রিয়ায় ফিলিপাইন সরকারের অবস্থান শক্তিশালী করতেই এ প্রতিবেদন প্রয়োজন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, রিজার্ভের অর্থ চুরি নিয়ে বাংলাদেশে তদন্ত কার্যক্রম বেশ এগিয়েছে বলে ফিলিপাইন সফরকারী প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। এ সময় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে ফিলিপাইন সরকারকে নিয়মিতভাবে জানানোর আশ্বাস দেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।

ফিলিপাইনের স্থানীয় আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে দেশটির সরকার চুরি যাওয়া অর্থের বাকি অংশ পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন কার্লোস ডমিঙ্গুয়েজ। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে তিনি বলেন, চুরি যাওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারে যাতে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য আপনাদের কিছু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এখানে আপনাদের পক্ষ থেকে আমরাই মামলাটি এগিয়ে নিচ্ছি।

চুরি যাওয়া রিজার্ভের মধ্যে দেড় কোটি ডলার এরই মধ্যে বাংলাদেশকে ফেরত দিয়েছে ফিলিপাইন। এ অর্থ ফেরত পেতে সহায়তার জন্য ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ধন্যবাদ জানিয়েছে বলেও ডমিঙ্গুয়েজ স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে চুরি যাওয়া ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রবেশ করে ফিলিপাইনে। দেশটির রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) মাধ্যমে তা বেরিয়ে যায়। আরসিবিসিতে খোলা এনরিকো তিয়োদরো ভাসকুয়েজের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। কাঁচপুর, মেঘনা-গোমতী দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ প্রকল্পে জাইকা থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধের নামে এ অর্থ যায় অ্যাকাউন্টটিতে। জেসি ক্রিস্টোফার ল্যাগ্রোসাসের নামে ব্যাংকটিতে খোলা আরেকটি অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে ৩ কোটি ডলার। ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের বিপরীতে জাইকার ঋণ পরিশোধের নামে ছাড় হয় এ অর্থ। এছাড়া পরামর্শক ফির নামে মাইকেল ফ্রান্সিসকো ক্রুজের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে ৬০ লাখ ডলার। আর আলফ্রেড সান্তোস ভারজারার অ্যাকাউন্টে ঢোকে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ভেড়ামারা কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ প্রকল্পের প্রকৌশল ফির নামে এ অর্থ প্রবেশ করে ভারজারার হিসাবে।

রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তে গত ১৫ মার্চ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ৩০ মে কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও (সিআইডি) এটি তদন্ত করে দেখছে।

ফিলিপাইনের সিনেটেও এ নিয়ে শুনানি হয়েছে। গত মাসে স্থানীয় আরসিবিসির সাবেক ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছে দেশটির সরকার। অর্থের উত্স অবৈধ জেনেও না জানার ভাণ করার অভিযোগ তোলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: