facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৩


২৬ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার, ১০:২০  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৩

এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা (২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পাচার করে আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মৎস্য ভবন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার অন্য দু`জন হলেন— ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড ট্রেজারি শাখার প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও মূল পরিকল্পনাকারী ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল হক।

গ্রেফতারের আগে একই অভিযোগে এই তিনজনসহ মোট আটজনকে আসামি করে রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।

অন্য পাঁচ আসামি হলেন— ব্যাংকের সাবেক এমডি শামীম আহমেদ চৌধুরী, মো. ফজলুর রহমান, ব্যাংকের হেড অব করপোরেট মাহফুজ উল ইসলাম, হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল আজিম।

সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হয় ওই তিন আসামিকে। শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তিন আসামিকে পুলিশ হেফাজতে হাজতখানায় রাখা হয়।

এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিশ্বাস ভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখার অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) থেকে দুবাইয়ে পাচার করে আত্মসাৎ করেছেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি ওই অর্থ পাচার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুদকে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনটি অভিযোগ হিসেবে আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করে অর্থ পাচারের প্রমাণ পায় দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, অর্থ পাচার করে আত্মসাতের নাটকটি সাজিয়েছিলেন সাইফুল হক। দুবাইয়ের একজন ব্রোকারের (দালাল) মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের একটি অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে অর্থ পাচারের পরিকল্পনাটি সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হককে ২০১৩ সালের অক্টোবরে জানানো হয়েছিল। ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে মতিঝিলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ওই বৈঠকে সাইফুলের সঙ্গে ছিলেন তার বন্ধু দুবাইয়ের নাগরিক খুররম আবদুল্লাহ। তারা নাটকের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক অফশোর কোম্পানি পিজিএফের সহযোগী কোম্পানি পিনাকল গ্লোবাল ফান্ডে বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন।

ওই ১৬৫ কোটি টাকা আত্মসাতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক এমডি মো. ফজলুর রহমান, শামীম আহমেদ চৌধুরী, গ্রাহক সাইফুল হকসহ উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা।

তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী, এবি ব্যাংক ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করলে পিনাকল গ্লোবাল ফান্ড বিনিয়োগ করবে ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপর মোট একশ` মিলিয়ন ডলারের একটি পৃথক তহবিল গঠিত হবে। তহবিলের ব্যবসায়িক মুনাফা হিসেবে পিনাকল ৩ শতাংশ সুদ পাবে। আর এবি ব্যাংক ওই অর্থ বিনিয়োগ করে ৮ শতাংশ হারে সুদ পাবে। তাদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পরে সাবেক ওই চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম দুবাই সফর করে।

টিমের অন্য দুই সদস্য ছিলেন ব্যাংকের পরিচালক সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন ও ট্রেজারি শাখার প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল। তাদের বৈঠক, দুবাই সফর, চুক্তি করাসহ সব কাজই ছিল লোক দেখানো।

দুদক জানায়, ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে ওই অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটে। এই সময়ে এম ওয়াহিদুল হক ব্যাংকের চেয়ারম্যান, মো. ফজলুর রহমান ও শামীম আহমেদ চৌধুরী এমডির দায়িত্বে ছিলেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: