facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

বিআইবিএমের গবেষণা

ঋণ হস্তান্তর নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে


২৪ নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার, ০৩:০৬  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


ঋণ হস্তান্তর নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে

লোন টেকওভারকে (ঋণ হস্তান্তর) কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই না করেই ঋণ কিনে নিচ্ছে ব্যাংকগুলো, পরবর্তীতে যা খেলাপি হয়ে পড়ছে। এতে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি বাড়ছে বলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্যাংকারদের মতামতের ভিত্তিতে তৈরি গবেষণা প্রতিবেদনটি গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘লোন টেকওভার ইন বাংলাদেশ : ইজ ইট এ হেলদি প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ৪০ শতাংশ ব্যাংকার মনে করেন হস্তান্তরিত ঋণ এরই মধ্যে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে। নিকট ভবিষ্যতে হস্তান্তরিত এসব ঋণ খাতটিতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন ৫০ শতাংশ ব্যাংকার।

এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহকের ঋণ ক্রয় বা টেকওভার এ খাতের সাধারণ চর্চা। গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার ঋণ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটছে। এর আগে ২০১৬ সালে টেকওভারকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ১৬১ কোটি টাকা।
বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। চার সদস্যের গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন— বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মহব্বত হোসেন, লেকচারার তোফায়েল আহমেদ ও রাহাত বানু।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ ব্যাংকারের মতে, পরিচালনা পর্ষদের অযৌক্তিক চাপে ঋণ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। ঋণ হস্তান্তরে অদক্ষতা রয়েছে বলে জানান ৫ শতাংশ ব্যাংকার।

ঋণ হস্তান্তরে এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করা উচিত বলে জানান সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত ইসলাম। বৈঠকে এ ব্যাংকার বলেন, ঋণ হস্তান্তরের অনেক খারাপ দৃষ্টান্ত আছে। কিছু গ্রাহক ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের জন্য সরকারি ব্যাংককে টার্গেট করেন। তারা বিভিন্ন কায়দাকানুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সে টাকা আর পরিশোধ করেন না। ঋণ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে, তা ব্যাংক খাতের জন্য ক্ষতিকর। এটি বন্ধ করতে হবে।

ঋণ হস্তান্তরিত হওয়ার সময় সবগুলো বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করা উচিত বলে জানান পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী। গতকালের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঋণ হস্তান্তরের সময়ে সব বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে হস্তান্তর করা উচিত।

বৈঠকের প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তরা এখন ব্যাংকিং খাতে ঢুকে পড়েছে। সম্প্রতি একটি ব্যাংকে গত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন নয় মাস ধরে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ২-৪ লাখ টাকা দিলে হয়তো এমডি পাওয়া যাবে। কিন্তু ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্য লোক পাওয়া যাবে না। ব্যাংকার ভালো হলে নীতিমালার দরকার পড়ে না।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: