facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

উন্নয়নের পথে ৯ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ


১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার, ১০:২৩  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


উন্নয়নের পথে ৯ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশের অর্থনীতির বেশ কয়েকটি সফলতা থাকলেও নয়টি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম।

বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) প্রথম দিনের প্রধান আলোচনা পর্বে বুধবার মূল প্রবন্ধে এই চ্যালেঞ্জগুলের কথা তুলে ধরেন তিনি।

ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর আলোচনা পর্বে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশ সামাজিক উন্নয়ন সূচকে বিশেষ করে গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাতৃ মৃত্যুর হার কমানো, জন্ম নিয়ন্ত্রণ, মেয়েদের স্কুলে পাঠানো এবং টিকাদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।

এছাড়া মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অতিক্রম, ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচনের অর্জনের কথা তুলে ধরেই চ্যালেঞ্জগুলোর কথা বলেন তিনি।

চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে

সম্পদ আহরণ, জনসংখ্যার চাপ বহন করা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, প্রাকৃতিক দুর্য়োগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, সম্পদের সদ্ব্যবহার, দক্ষতা ও শিক্ষা মান উন্নয়ন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা, সুশাসন এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করা।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েনচাই ঝ্যাং বাংলাদেশের উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তার সংস্থার সহায়তার প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) চাহিদা অনুযায়ী এডিবি বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। ওই লক্ষ্যমাত্রার অধীনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষা, শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, মাতৃ স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং নিরাপদ পানির সংস্থানসহ অনেক সামাজিক উন্নয়ন অর্জন করেছে।

“এখন বাংলাদেশের গৃহীত টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি) চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়ও বাংলাদেশের যে সহযোগিতা দরকার এডিবি তাই করবে। বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় সহায়তা এডিবি দিতে প্রতিশ্রুত।”

তিনি বলেন, আগামী তিন বছরের জন্য এডিবি বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী যোগাযোগ, জ্বালানি, নগরায়ন এবং সেবা খাতের উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্য়োগ মোকাবেলায় সহায়তা দিয়ে যাবে।

বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন বলেন, বাংলাদেশের যুব সমাজকে উন্নয়নের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে তিন শর্ত পূরণ করতে হবে।

প্রথমত, অবকাঠামো, জ্বালানি খাতের উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা এবং আধুনিক নগরায়ন নিশ্চিত করা।

বিশ্ব ব্যাংক কর্মকর্তার মতে, এসব খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হলে প্রতিবছরই ব্যাপকভাবে যুব সমাজের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এটা করতে পারলে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরাও আকৃষ্ট হবে।

তার মতে, দ্বিতীয়টি হল মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য কারিগরি শিক্ষা ও শিশু পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে। তাহলে আগামী ওই স্বাস্থ্যবান একটি জাতি হিসেবে অধিক উৎপাদনের যোগান দিতে পারবে এদেশের যুবকরা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথিরা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথিরা
অ্যানেট ডিক্সনের মতে তৃতীয়টি হল, এদেশের সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে বিরতিহীনভাবে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলতে হবে। সুশাসনের ওপর জোর দিতে হবে, যা একটি শক্তিশালী সিভিল সার্ভিস, বিচার ব্যাবস্থা, সরকারি ব্যাংক, কর আহরণ ব্যবস্থা এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত রেন্সজে টিরিংক বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা সহযোগিতা করতে আগ্রহী। কিন্তু বাংলাদেশ আঞ্চলিক জোট বিমসটেক, বিবিআইএন এবং সার্কসহ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট গুলোকে আরও বেশি কার্য়করের উদ্যোগ নিয়ে বিশাল লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।”

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সুশাসনের উপর জোর দেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও বেশি কার্যকরের পরামর্শও দেন তিনি।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের উপরও আরও জোর দেওয়ার উপর গুরুত্ব দেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে বিদেশি সাহায্য নির্ভরতা কমে এলেও দাতাদের কাছ থেকে যা পাওয়া যায়, তাও গুরুত্বপূর্ণ।

“বাংলাদেশের অর্থনীতি আর বিদেশি সাহায্যনির্ভর নয়। দাতাদের কাছ থেকে আমরা যা পাই, তা খুব নগন্য। প্রতিবছর তাদের কাছ থেকে আমরা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ১ দশমিক ৩ ভাগের কাছাকাছি সহায়তা পাই।

“তবে এ সহায়তাও বাংলাদেশের জন্য বিরাট গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশে এখনও যথেষ্ট সম্পদের অভাব রয়েছে।”

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: