১২ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার, ১১:১০ এএম
সোহেলী চৌধুরী
শেয়ার বিজনেস24.কম
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতোই এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামকেও ব্যবহার করছে শেয়ারবাজারের কিছু কারসাজি চক্র। তারা শেয়ারবাজার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের চটকদার ও প্রলোভনমূলক তথ্য ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ রকম একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মার্কেট সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স বিভাগ।
ইতোমধ্যে টেলিগ্রাম গ্রুপটির কার্যক্রম বিএসইসির নজরদারিতে রয়েছে। প্রতারণা ও কারসাজির পর্যাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শিগগিরই কারসাজি চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কৌশল প্রণয়ন ও অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে বিএসইসি এ কাজ করছে বলে জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ বিকাশ নম্বর (০১৮১১৭৬২৩৬৯) ব্যবহার করে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে বলে শনাক্ত করা হয়েছে। ওই টেলিগ্রাম গ্রুপের সদস্যরা নিশ্চিত করছে যে, গ্রুপটি তাদের সদস্যদের শেয়ার কেনাবেচা করার নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আর ওই বিকাশ নম্বর ব্যবহার করে গ্রুপটি সদস্যদের কাছ থেকে সাবস্ক্রিপশন বাবদ অর্থের বিনিময়ে সিকিউরিটিজ ট্রেডিং থেকে মুনাফা অর্জন করছে, যা সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী বেআইনি।
চক্রটির প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। তদন্ত পরিচালনার জন্য বিকাশ নম্বরের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রয়োজন। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য কমিশনের প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়।
এদিকে বিএসইসির প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বেশ কিছু টেলিগ্রাম গ্রুপ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়বে- এমন তথ্য তথ্যের বিনিময়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই গ্রুপের সদস্য বানানো হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। আর এ জন্য সাবক্রিশন ফি বাবদ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ কাজের জন্য টেলিগ্রম গ্রুপটি একটি উল্লিখিত বিকাশ নম্বর ব্যবহার করছে। ইতোমধ্যে ওই বিকাশ অ্যাকাউন্টে কী পরিমাণ টাকা এসেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে ওই অ্যাকাউন্টে আসা টাকা আর কোন কোন অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর হয়েছে, সেই বিষয়টিও খোঁজ নিচ্ছে বিএসইসি।
জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে যে কোনো কারসাজি ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে মনিটরিং করছে বিএসইসি। এ ধরনের বেশ কিছু সক্রিয় কারসাজি চক্র বিএসইসির নজরদারিতে রয়েছে। এর মধ্যে দুই-একটি কারসাজি চক্রের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আরও কিছু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সকল কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ কাজ শেষ হলে কারসাজি ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত গ্রুপ পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।