facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে ১৬ প্রস্তাব


১৩ অক্টোবর ২০২১ বুধবার, ০৩:০৯  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে ১৬ প্রস্তাব

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) ১৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের মন্দাভাব কাটিয়ে পুঁজিবাজারে বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। বিএসইসির’র সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং সকল অংশীজনের সহযোগিতার ফলে পুঁজিবাজরে প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে তারল্য সংকট দূর হয়েছে। অথচ পুঁজিবাজারের প্রাণ মিচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের তেমন আগ্রহ তৈরি হয়নি। অতিতে ফান্ড ব্যবস্থাপনার অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাই ফান্ড ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য আমরা ১৬টি প্রস্তাব বিএসইসি’র চেয়ারম্যানের কাছে দাখিল করেছি।

মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর উন্নয়নে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ১৬টি প্রস্তাব হলো-


১. বিশ্ব পুঁজিবাজারে মার্কেট মেকারের অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে মিউচ্যুযাল ফান্ড খাতটি। ফলে বছর শেষে মোট আয়ের উপর ভালো লভ্যাংশের আশায় বিনিয়োগকারীরা এই খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। তাই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট ইপিএসের উপর ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসাবে প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

২. একটি সার্থক ও সফল পুঁজিবাজারের জন্য ন্যূনতম বাজার মূলধনের ২৫ শতাংশ মিউচ্যুয়াল ফান্ড থাকা প্রয়োজন। অথচ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা খুবই নগণ্য। এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশ বর্তমানে সাধারণ দুই ধরনের মিউচ্যুয়াল ফান্ড রয়েছে, একটি মেয়াদী আর অন্যটি বে-মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড। মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীগণ টাকার প্রয়োজন হলে যে কোনও সময় ইউনিট বিক্রি করে টাকা তুলে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বে-মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির তহবিল সংকট দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে লেনদেনযোগ্য মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড ন্যূনতম ১০ বছর প্রবাহমান থাকে। যেসব মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভ্যাংশ প্রদান করছে না এবং ইউনিট প্রতি আয় নেগেটিভ সেসব মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর প্রথম থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত বিশেষ অডিট কার্যক্রম শুরু করে ব্যবস্থাপনা ফি বাজেয়াপ্ত করে তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ আকারে প্রদান করা।

৩. ভবিষ্যতে যে সব মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভ্যাংশ প্রদান করবে না, তারা যেন ব্যবস্থাপনা ফি নিতে না পারে যে জন্য আইন প্রণয়ন করা।

৪. প্রত্যেক সম্পদ ব্যবস্থাপককে বছরে ন্যূনতম একটি মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড আনতে হবে।

৫. খাতভিত্তিক এবং সূচকভিত্তিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রচলন করতে হবে।


৬. পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে থাকে তাদের মোট বিনিয়োগ পত্রকোষের ন্যূনতম ১০ শতাংশ মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক করা।

৭. বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃক ইস্যুকৃত ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সার্কুলারের আওতায় প্রত্যেক ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি টাকা যে প্রণোদনা তহবিল গঠন করা হয়েছে, তার ৩নং পাতার ২নং ধারার বিনিয়োগ নীতিমালার (ঘ) উপ-ধারা (ঙ) তে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সব মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড একাধিক ক্রমে বিগত ৩ বছর ন্যূনতম ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে শুধুমাত্র সেইসব মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উপরোক্ত সার্কুলার অনুযায়ী বিনিয়োগ কার্যক্রম যথাযথভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৮. বিএসইসি’র নিজস্ব অ্যানালাইসি টিমের মাধ্যমে প্রণোদনা তহবিলের টাকা দিয়ে কোন কোন মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করা যাবে তার একটি তালিকা প্রস্তুত করে বিএসইসি’র নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা।

৯. প্রস্তুতকৃত তালিকাটি পুঁজিবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের উন্মুক্ত স্থানে প্রকাশ করে রাখতে হবে। যাতে করে বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত না হন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অমান্য করে অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে প্রণোদনা তহবিলের টাকা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিনিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করতে না পারে তা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১০. মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইস্যু সাইজ ৫০ কোটি টাকার পরিবর্তে ২০ কোটি টাকা করা যেতে পারে। যাতে করে অধিক হারে মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড বাজারে আসতে পারে।

১১. প্রণোদনা তহবিলের যে ১০ শতাংশ বিনিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করতে হবে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে দ্রুত নীতিমালা অনুযায়ী মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ দ্রুত সম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১২. মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বার্ষিক সাধারণ সভা করার প্রভিধানকরণ। বর্তমানে বিদ্যমান বিষয়টি এজিএম এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা।

১৩. মিউচ্যুয়াল ফান্ড পাবলিক মানি হিসেবে বিবেচনা করে কমিশন কর্তৃক নিয়মিত মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিদর্শন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ।

১৪. সম্পদ ব্যবস্থাপকদের গৃহীত ব্যবস্থাপনা ফি এর হার হ্রাসকরণ এবং সম্পদ ব্যবস্থাপকদের গৃহীত ব্যবস্থাপনা ফি এর ৫০ শতাংশ নিয়মিত এবং ৫০ শতাংশ কার্যক্ষমতার ভিত্তিতে হওয়া।

১৫. মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর স্বচ্ছতার জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ব্যবস্থাপক লাইসেন্স গ্রহণ করা এবং ইতিমধ্যে যে সব মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর উদ্যোক্তা হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের নিজস্ব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কর্তৃক তাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচলনার প্রভিধান জারি করা।

১৬. বিএসইসি কর্তৃক প্রণীত নির্দিষ্ট ফরমেট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতিবেদন প্রকাশ করার প্রবিধান করা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: