facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

পর্যবেক্ষণে বিনিয়োগকারীরা


০৫ ডিসেম্বর ২০২১ রবিবার, ০৩:২০  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


পর্যবেক্ষণে বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের আগে আগে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারে নতুন করে বিনিয়োগ না করে অপেক্ষায় আছেন।

বৈঠকে ভালো কিছু হবে, এমন আশায় বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না, তবে কেনাবেচা বেশ কম। তিন কর্মদিবস পর লেনদেন আবার নেমে এসেছে হাজার কোটি টাকার নিচে।

রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ৩ মিনিটেই সূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে শুরু হয় লেনদেন। বেলা সোয়া ১১টায় সূচক বেড়ে যায় ৪৮ পয়েন্ট। তবে সেখান থেকে বেলা ১২টা ৭ মিনিট পর সূচক টানা পড়তে থাকে।

আগের দিনের চেয়ে সূচকের অবস্থান ৫ পয়েন্ট কম ছিল সে সময়। এরপর আবার পতনের আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে শেষ পর্যন্ত সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় ৬ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে।

এ নিয়ে টানা তিন কর্মদিবসে সূচক বাড়ল ২৬২ পয়েন্ট। তবে লেনদেনে পড়েছে ভাটা। বৃহস্পতিবার ১ হাজার ২৪৫ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিল লেনদেন। সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৮৯৪ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

দিন শেষে বেড়েছে ২৪৫টি কোম্পানির দর, কমেছে ৭৯টির। দর ধরে রাখতে পেরেছে আরও ৪৯টি।

প্রায় সব খাতেই গেছে ভালো দিন। তবে প্রধা খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো গেছে বিমায়। বেশ কিছুদিন পরে বস্ত্র খাতে একটি ভালো দিন দেখল বিনিয়োগকারীরা। প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগকারীরাও হাসিমুখে শেষ করেছে লেনদেন।

লেনদেনে সেরা ব্যাংক খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের প্রধান কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার দিনভর উঠানামা করেছে। শেষ পর্যন্ত ২০ পয়সা কমেছে শেয়ারদর।

আড়াই মাস ধরে দর সংশোধনে থাকা পুঁজিবাজারে সম্প্রতি টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয় বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে বিরোধ ইস্যুতে।

গত ৩০ ডিসেম্বর দুই পক্ষের বৈঠকের পর পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা মা এক্সপোজার লিমিট ও বন্ডে বিনিয়োগ নিয়ে মতভিন্নতার অবসানের আশা তৈরি হয়।

সেই বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কেউ বক্তব্য না দিলেও বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, শেয়ারের ক্রয়মূল্যে এক্সপোজার লিমিট গণনা ও বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তারা নীতিগতভাবে এসব বিষয়ে একমত হয়েছেন।

পরদিন পুঁজিবাজারে হয় উত্থান। একদিনেই সূচক বাড়ে ১৪৩ পয়েন্ট। তবে সেদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তৈরি হয় উব্দেগ।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএসইসি কমিশনারের বরাত দিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, সেসব সঠিক নয়।

এই খবরে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে লেনদেন শুরুই হয় ৮৪ পয়েন্ট পতনের মধ্য দিয়ে। তবে এ সময় তার আগের রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশ তুমুল আলোচনা তৈরি করে, ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। শেষ পর্যন্ত লেনদেন শেষ হয় ৮৯ পয়েন্ট সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে।

আগামী ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠক ডেকেছে মন্ত্রণালয়। এতে বিএসইসি চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ডাকা হয়েছে।

ওই বিকেলে রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের যে আন্তরিকতা আছে, তা প্রকাশ হবে সামনের কিছু দিনে।

এসব ঘটনার পর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে যায় পুঁজিবাজার। এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা আলোচনা, পর্যালোচনা, তর্ক-বিতর্ক তৈরি হয়। বাজার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কী আসছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান পাল্টাবে কি না, বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে-এ নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ হতে থাকে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে।

দিনভর উত্থান পতনে থাকা পুঁজিবাজার শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক অবস্থান নিয়ে লেনদেন শেষ করতে পারার পেছনে প্রধান অবদান ছিল ওয়ালটনের। ৩.৪ শতাংশ দর বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১০.৩৩ পয়েন্ট।

গ্রামীণ ফোন, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি, রবি, একমি ল্যাবরেটরিজ, সিটি ব্যাংক, গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, ব্র্যাক ব্যাংক, সোনালী পেপার ও ওরিয়ন ফার্মা ছিল সূচক বাড়াতে প্রধান ভূমিকায়।

এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচকে যোগ হয়েছে ২৩.২৭ পয়েন্ট।

অন্যদিকে সূচক নিচের দিকে টেনে নামানোর প্রধান চেষ্টায় ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার, যেটির ১.০৭ শতাংশ দরপতনে সূচক পড়েছে ১.৪২ পয়েন্ট।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি, সামিট পাওয়ার, এমজেএলবিডি, শাহজিবাজার পাওয়ার, পাওয়ারগ্রিড, বেক্সিমকো ফার্মা, বিএসআরএম লিমিটেড, বিকন ফার্মা ও রেনাটাও ছিল একই ভূমিকায়।

তবে দরপতনের হার বেশি না হওয়ায় এই ১০টি কোম্পানি সূচক নিচে নামাতে পেরেছে কমই। সব মিলিয়ে কমেছে ৭.৫৩ পয়েন্ট।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: