facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

পদ্মা সেতু চালুর পরেও যাতায়াতে মানুষের চরম দুর্ভোগ


২৯ জুন ২০২২ বুধবার, ১০:৫১  এএম

এম.এ ওয়াদুদ মিয়া

শেয়ার বিজনেস24.কম


পদ্মা সেতু চালুর পরেও যাতায়াতে মানুষের চরম দুর্ভোগ

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শরীয়তপুরবাসীকে। একদিকে বাস চলাচলে অনুপযোগী সরু রাস্তা, অপরদিকে "শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস" নামে একটি কোম্পানী অন্য কোন কোম্পানীর বাস চলাচল করতে দিচ্ছে না। অন্য কোন কোম্পানীর বাস নামালে তাদেরকে বাঁধা দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সরকারি বাস সার্ভিস বিআরটিসি`র বাসও চলাচল করতে দিচ্ছে না। ইতিমধ্যে বিআরটিসি বাসে দুই দফা ভাংচুরসহ যাত্রীদেরকে অপমান করে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে জেলা বাস মালিক গ্রুপ পরিচালিত "শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস" সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও অতিরিক্ত ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি চরম থেকে চরমোতর হয়েছে।

যার প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের মনে কঠিন ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এক দিকে উন্নত বাসের সংকট, অপরদিকে রাস্তার বেহাল অবস্থা। সেই সাথে যোগ হয়েছে বাস মালিক গ্রুপের স্বেচ্ছাচারিতা। সব মিলিয়ে শরীয়তপুরের সড়ক পথে একটা হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। 

জেলা প্রশাসন এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও প্রকৃত অর্থেই কোন সমাধানই কার্যকর হচ্ছে না।

বাস মালিক গ্রুপের লাইন সেক্রেটারি বিল্লাল তালুকদার এবং শরীয়তপুর পরিবহণের পরিচালক আনোয়ার হোসেনের মাধ্যমে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সরকার পরিচালিত "বিআরটিসি", পদ্মা ট্রাভেলস লিমিটেড, জেলা বাস মালিক গ্রুপ পরিচালিত "শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস লিমিটেড" সহ বিভিন্ন কোম্পানী শরীয়তপুর-ঢাকা বাস সার্ভিস চালু করে। কিন্তু জেলা বাস মালিক গ্রুপ পরিচালিত "শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের" বাস ছাড়া অন্যসব কোম্পানির বাস চালতে বাঁধা দেয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ২৬ জুন ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আসা বিআরটিসি`র একটি বাস শরীয়তপুরের বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসটি আটকে রেখে ভাংচুর করে। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক বাস মালিক সমিতির নেতাদের নিয়ে সভা করেন। 

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পরীক্ষামূলক ভাবে আগামী এক মাস বিআরটিসির আটটি বাস ঢাকা-শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলা শহর থেকে চলবে কিন্তু শরীয়তপুর শহর থেকে কোন যাত্রী উঠাতে পারবে না। 

এই সিদ্ধান্তের পরেও মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা থেকে আসা গোসাইরহাটগামী একটি বিআরটিসি বাস শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় বাঁধা দেয়া হয় এবং বাসে থাকা সকল যাত্রীদেরকে জোর করে নামিয়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে বিআরটিসি বাসের ডিপো ইনচার্জ বুলবুল আহামেদ বলেন, শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ বিষয়টি আমি বিআরটিসির চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এদিকে, শরীয়তপুর-ঢাকা বাসভাড়া সরকার ২১৯ টাকা নির্ধারণ করলেও বাস মালিক গ্রুপ ২৫০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা আদায় করছে। 

শরীয়তপুর সদর উপজেলার দাসার্ত্তা গ্রামের ডাঃ ইউনুস শেখ, মনির হোসেন, লাল মিয়া এবং নুর হোসেন বেপারী বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রায় ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাস পাইনি।

শরীয়তপুর পরিবহনের লাইনম্যান মহসিন বলেন, আমাদের সব কাগজপত্র থাকার পরও বাস মালিক গ্রুপ আমাদের বাস চালাতে দিচ্ছে না। বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে। এটা চরম অন্যায়। 

পদ্মা ট্রাভেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলা বাস মালিক গ্রুপের লোকজন আমাদের বাস জেলা শহরে চলতে দিচ্ছে না। তাই আমরা আপাতত জাজিরা দিয়ে ঢাকায় বাস চালানোর চেষ্টা করছি।

সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- নড়িয়া, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ থেকে ছয়টি বিআরটিসি বাস চলবে। তবে শরীয়তপুর সদর থেকে কোনো যাত্রী নেয়া যাবে না। 

জেলা বাস মালিক গ্রুপের এক নেতা জানান, তাদের সঙ্গে সমন্বয় না করায় বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, বাস মালিক গ্রুপ ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ নামে একটি বাস সার্ভিস চালু করেছে। শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে নন-এসি বাসের ভাড়া ২৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, সব বাস মালিক সমিতির লোকজনকে নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে-বিআরটির বাস বিভিন্ন উপজেলায় চলবে। তিনি আরও বলেন, শহরে অন্য বাস ঢুকতে বাঁধা দেয়া এবং বিআরটিসির বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: