facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

তিন মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন


১০ মে ২০২২ মঙ্গলবার, ০৫:৪৩  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


তিন মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন

দুই দিন ফুরফুরে মেজাজে কাটানো পুঁজিবাজারে হঠাৎ করেই পতন হলো। তবে টানা দ্বিতীয় দিন লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়িয়ে তা গত প্রায় তিন মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছল।

আগের দুই দিনের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার লেনদেন শুরু হয় সূচক বেড়েই। প্রথম আধা ঘণ্টাতেই সূচক বেড়ে যায় ২৮ পয়েন্ট। গত ৪ এপ্রিলের পর প্রথমবারের মতো সূচক ৬ হাজার ৭০০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে লেনদেন হতে থাকে।

এরপর কিছুটা কমলেও বেলা একটার সময়ও সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করেই বিক্রয় চাপ তৈরি হয়। দ্রুত নামতে থাকে সূচক।

এক ঘণ্টা ২৩ মিনিটে সূচক পড়ে যায় ৫৯ পয়েন্ট। শেষ সাত মিনিটে সেখান থেকে কিছুটা বেড়ে লেনদেন শেষ হয় ৩২ পয়েন্ট কমে।

আগের দুই দিন সূচক ৫৪ পয়েন্ট বাড়ার পাশাপাশি ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের পর প্রথমবারের মতো এক হাজার দুই শ কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে সোমবার। বিক্রয়চাপের মধ্যেও আগের দিনের লেনদেনকে ছাড়িয়ে যায় পুঁজিবাজার।

শেষ পর্যন্ত হাতবদল হয় এক হাজার ২৫৮ কোটি ৫৮ হাজার টাকার, যা গত ১৩ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ২৭৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

টানা দুই দিন দুই শরও বেশি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি দেখার পর আজ দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। এক দিনেই হারিয়েছে ২০৫টি কোম্পানির দর। বিপরীতে বেড়েছে ১৩০টির। আর ৪৫টি দর ধরে রাখতে পারে।

খাতভিত্তিক বিবেচনা করলে দারুণ দিন গেছে সাধারণ বিমা খাতে। এই খাতের ৩১টি কোম্পানির দর বেড়েছে, বিপরীতে হারিয়েছে ৬টি আর অপরিবর্তিত থাকে দুটির দর।

অবশ্য জীবন বিমা খাতের কোম্পানিগুলোতে দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। এই খাতের দুটি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে হারিয়েছে ১১টি।

এ ছাড়া বস্ত্র খাতে বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। এই খাতের ১৯টি কোম্পানি দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ৩১টির দর। বাকি ৯টি দর ধরে রাখতে পারে।

ব্যাংক, আর্থিক খাত, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং বিবিধ খাতে যত কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে তার চেয়ে অনেক বেশি।

দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা পাঁচ শতাংশের আশেপাশে দর কমেছে ১১টি কোম্পানির। সম্প্রতি এক দিনে এত বেশি কোম্পানির দর সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমায় লেনদেন হতে দেখা যায়নি।

আগের দিন এই সংখ্যাটি ছিল দুই, তার আগের দিন একটি।

অন্যদিকে দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে চারটি কোম্পানির। আগের দিন এই সংখ্যাটি ছিল পাঁচটি, তার আগের দিন আরও বেশি।

সূচক সবচেয়ে বেশি ৪.০১ পয়েন্ট কমিয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির দর কমেছে ২.০৪ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৪৬ টাকা ৮০ পয়সা। সেটি কমে হয়েছে ১৪৩ টাকা ৮০ পয়সা।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩.৮১ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ, আইসিবি। কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ২.৮৮ শতাংশ।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ২.৮৮ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো। কোম্পানিটির দর ০.৬০ শতাংশ কমায় এই পরিমাণ সূচক কমেছে।

এছাড়া রবির শেয়ারদর ০.৯৩ শতাংশ কমায় ২.৪ পয়েন্ট, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের দর ১.৪২ শতাংশ কমায় ১.৯৫ পয়েন্ট, পাওয়ারগ্রিডের দর ২.৫৮ শতাংশ কমায় ১.৭৪ পয়েন্ট, সোনালী পেপারের দর ৪.২৪ শতাংশ কমায় ১.৩৫ পয়েন্ট, জিপিএইচ ইস্পাতের দর ৩.১ শতাংশ কমায় ১.২ পয়েন্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর ৪.১২ শতাংশ কমায় ১.১৬ পয়েন্ট, আইডিএলসির দর ৩.১৭ পয়েন্ট কমায় ১.০৮ পয়েন্ট সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচক কমেছে ২১.৫৮ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১.৫৭ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে পূবালী ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ারদর ৩.৭৬ শতাংশ বাড়ার কারণে এই সূচক বেড়েছে।

এর বাইরে এসিআই ফর্মুলেশনের শেয়ারদর ১০ শতাংশ বাড়ায় সূচকে ১.৩৪ পয়েন্ট, এনভয় টেক্সটাইলের দর ৯.৫৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১.০৭ পয়েন্ট বেড়েছে।

এছাড়া ইউনিলিভার, বেক্সিমকো ফার্মা, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্কয়ার টেক্সটাইল, বিকন ফার্মা ও লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স সূচকে কিছু পয়েন্ট যোগ করতে পেরেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি মিলে যোগ করতে পেরেছে ৮.৬১ পয়েন্ট।

সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে এসিআই ফর্মুলেশনের দর। কোম্পানিটির দর আগের দিন ছিল ১৮৬ টাকা। এক দিনে ১৮ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ২০৪ টাকা ৬০ পয়সা।

আরও তিনটি কোম্পানির দর বেড়েছে দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি। এর মধ্যে বঙ্গজের দর ৯.৯৪ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিডমিল লিমিটেডের দর ৯.৬০ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দর ৯.৫৯ শতাংশ, এনভয় টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৯.৫৮ শতাংশ।

শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের দর ৭.৭৪ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর ৬.৮৯ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্সের দর ৫.৯৬ শতাংশ, আলিফ ম্যানুফেকচারিংয়ের দর ৫.৮৮ শতাংশ এবং রিংশাইন টেক্সটাইলের দর ৫.৪৯ শতাংশ বেড়েছে।

আরও দুটি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, একটির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৯টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ১৭টির দর ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

টানা তৃতীয় দিন এই তালিকার শীর্ষে ছিল ইমামবাটন, যার দর এই তিন দিন কমল একদিনে যত কমা সম্ভব ততটাই।

আজ কমেছে ঠিক ঠিক ৫ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৫৬ টাকা। সেটি কমে গয়েছে ৫৩ টাকা ২০ পয়সা।

এক যুগেও লভ্যাংশ নিতে না পারা কোম্পানিটির দর গত ফেব্রুয়ারি থেকে অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে বাড়তে ‍আড়াইগুণ হয়ে গিয়েছিল।

কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়ে গিয়ে এখন কমছে।

দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা বা কাছাকাছি গিয়ে লেনদেন শেষ করেছে সাভার রিফ্রাকটরিজ, জেএমআই হসপিটাল, মনস্পুল পেপার, সেনিনসুলা, ন্যাশনাল পলিমার, ন্যাশনাল টি কোম্পানি, সোনালী পেপার, এডভেন্ট ফার্মা ও শ্যামপুর সুগার।

আরও তিনটি কোম্পানির দর ৪ শতাংশের বেশি, ২৭টির দর ৩ শতাংশের বেশি এবং ৪১টির দর কমেছে ২ টাকার বেশি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: