facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

তিন কোম্পানির শেয়ার বেচাকেনা বেশি বিদেশিদের


০৫ আগস্ট ২০১৯ সোমবার, ০১:২৩  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


তিন কোম্পানির শেয়ার বেচাকেনা বেশি বিদেশিদের

দেশের শেয়ারবাজারে টানা পঞ্চম মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কেনার চেয়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার বেশি বিক্রি করেছেন। এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত টানা নিট বিক্রি করেছিলেন তারা। তাদের নিট বিক্রির ধারা গত বছর থেকে শুরু হলেও এর আগের অন্তত টানা পাঁচ বছর নিট বিনিয়োগে ছিলেন তারা।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ থেকে সদ্য সমাপ্ত জুলাই পর্যন্ত শুধু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে বিদেশিদের নিট বিক্রি করা শেয়ারের মূল্য ছিল ৫১৮ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে জুলাইতে কেনার তুলনায় বিক্রি বেশি ছিল প্রায় ১৬৫ কোটি টাকার বলে সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

গত মাসে ডিএসইর মাধ্যমে বিদেশিরা ৩০৯ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। অন্যদিকে বিক্রি করেছেন ৪৭৪ কোটি টাকার শেয়ার। মাসজুড়ে তারা সর্বমোট ৭৮৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা করেছেন, যা কেনাবেচার উভয় দিক বিবেচনায় ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

জুলাইতে ডিএসইতে সর্বমোট আট হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়। কেনার অংশে বিদেশিদের অংশ ছিল মোটের ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বিক্রির ক্ষেত্রে তাদের অংশ ছিল ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

জাতীয় নির্বাচনের পর বিদেশিদের পোর্টফোলিও থেকে টানা শেয়ার বিক্রির ধারা বন্ধ হয়েছিল। বছরের শুরুতে প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) বিদেশিরা নিট ৪৯৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। ওই দুই মাসে প্রায় ৫৮৪ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির বিপরীতে এক হাজার ৮২ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার কিনেছিলেন।

এর পর থেকে তারা ক্রমাগত বিক্রির ধারায় রয়েছেন। গত পাঁচ মাসে বিদেশিরা এক হাজার ৫৫৬ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। এ সময় বিক্রি করেছেন প্রায় দুই হাজার ৭৫ কোটি টাকার শেয়ার। গত বছরও এপ্রিল থেকে আগস্ট সময়কালে টানা পাঁচ মাসে তাদের কেনার তুলনায় বিক্রি বেশি ছিল ৫৫২ কোটি টাকার।

প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত মাসে দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে মোট ২৫ কোটি ৭ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা করেছেন বিদেশিরা।

তারা গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা ও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার কেনাবেচা করেছিলেন। এর মধ্যে ৩৬০ টাকা দরে গ্রামীণফোনের তিন লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার মোট ১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকায় কেনাবেচা করেন। স্কয়ার ফার্মার এক লাখ ৭৫ হাজার ৭৬৮টি শেয়ার ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ১০ লাখ শেয়ার সাড়ে ৬২ টাকা দরে সোয়া ছয় কোটি টাকায় লেনদেন করেন।

বিদেশিদের বেশি হারে শেয়ার বিক্রির কারণ জানতে চাইলে শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেরিফ এম. রহমান বলেন, গত বছর থেকে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির পরিমাণ বেশি হলেও এর আগে পাঁচ বছরের বেশি সময় তারা টানা নিট বিনিয়োগে ছিলেন। স্বভাবতই এখন অনেকে মুনাফা নিতে চাইবেন। এটা বড় কোনো ঘটনা নয়। তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা শুধু বিক্রি করছেন, বিষয়টি এমন নয়। বরং তারা প্রতি মাসেই শেয়ার কিনছেন। প্রায়ই নতুন বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান শেয়ার কিনছে। অনেকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, খোঁজ-খবরও নিচ্ছেন। বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন- এমন ধারণা ঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বাজারে তাদের যে শেয়ার রয়েছে, তার খুবই ছোট্ট অংশ বিক্রি করে থাকতে পারেন। বাজারে ভালো শেয়ারের যোগান বাড়ানো হলে তাদের বিনিয়োগ বাড়বে।

বিদেশিদের শেয়ার কেনাবেচা করেন এমন আরেকটি ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তাও প্রায় একই কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিদেশিদের শেয়ার রয়েছে অল্প কিছু কোম্পানিতে। মৌলভিত্তি বিবেচনায় তারা ভালো শেয়ার খুঁজলেও সে ধরনের শেয়ারের সরবরাহ বাজারে নেই। একই শেয়ার কেনাবেচা করতে করতে তারা বিরক্ত।

বাজার সংশ্নিষ্টরা জানান, বিদেশিদের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে, এমন কিছু কোম্পানির ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি ও লভ্যাংশ প্রদানের হারও অনেকটা স্থির হয়ে গেছে। ফলে এমন সব শেয়ারের প্রতি তাদের আগ্রহ কমেছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: