facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে বিএসইসির প্রতিবাদ


২২ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার, ০৫:৪৯  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে বিএসইসির প্রতিবাদ

চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের বিরুদ্ধে ‘অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের’ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যা নিয়ে ২১ ও ২২ আগস্ট জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপতৎপরতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

আজ বৃহস্পতিবার বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মো. সাইফুর রহমান সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহকে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এতে এক বা একাধিক সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কোন ভিত্তিহীন অভিযোগ করলেই তা প্রমাণিত বলে ধরে নেওয়া যায় না। এ ধরনের কল্পিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বহুল প্রচারিত পত্রিকাসমূহ ফলাও করে প্রচার এবং পদত্যাগের দাবি অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। একইসাথে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চরম ব্যত্যয়। ফলে কমিশন সংশ্লিষ্ট সকল মহল থেকে এ জাতীয় সংবেদনশীল বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।

এর আগে গত ৭ আগস্ট অভিযোগের আলোকে দুদকের পক্ষ থেকে বিএসইসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

তবে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার বিপর্যয়ের পর দেশের পুঁজিবাজার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০১১ সালের মে মাসে ড. এম খায়রুল হোসেনকে চেয়ারম্যান করে বর্তমান কমিশন গঠন করে। ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে সুদীর্ঘ ৮ বছর পুঁজিবাজার উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই সময়ে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকরীদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় আইনগত সংস্কার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার আজ এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।

বিগত ৮ বছরে বর্তমান কমিশনের নেতৃত্বে আইনভিত্তিক ও প্রযুক্তি নির্ভর যে পুঁজিবাজার গড়ে উঠেছে তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তথা বিনিয়োগকারীসহ সকল স্টেকহোল্ডারদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ বিশ্বাস করে। এ অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের ৯২৪তম বোর্ড সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম. খায়রুল হোসেন ও কমিশনারদের আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ প্রদানের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

বর্তমান কমিশনের বহুবিধ সংস্কারমূলক কাজের অংশ হিসেবে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয়। এর মধ্যে ছিল- শেয়ারবাজারে অনিয়ম চিহ্নিত করার মাধ্যমে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাজার পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান প্রক্রিয়া জোরদার করার লক্ষ্যে আপনি আন্তর্জাতিকমানের সার্ভেইলেন্স সফটওয়্যার স্থাপন করে বাজারের সচ্ছতার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ; বিএসইসির উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণের জন্য সরকার কর্তৃক বিশেষ স্কিম ঘোষণা; পুঁজিবাজারের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার জনগণকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ এবং এর ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করতে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম প্রচলন; তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সম্বিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করা; পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পুঁজিবাজারে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে কমিশন সময়োপযোগী বিভিন্ন মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা হাতে নেন এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে এর বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এই সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভীত আগামীতে আরও শক্তিশালী হবে।

বিএসইসি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে দক্ষতা ও সততার জন্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশন কর্তৃক “এ” ক্যাটাগরি সদস্যপদ অর্জনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। যা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বিএসইসির এ অর্জন বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রতি দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

২০১০ পরবর্তী পুঁজিবাজারের পুর্নগঠন বা সংস্কারের অংশ হিসেবে “দা এক্সচেঞ্জস ডিমিউচ্যুয়ালাইজশন এ্যাক্ট-২০১৩” এর মাধ্যমে এক্সচেঞ্জগুলো ডিমিউচ্যুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জে রূপান্তরিত হয়। যা দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। পরবর্তী সময়ে ডিমিউচ্যুয়ালাইজশন স্কিম অনুযায়ী দীর্ঘ কর্মকান্ডের পর চীনা কনসোর্টিয়াম (সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জ) ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়। এই চুক্তির ফলে ডিএসই এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এতে ডিএসইর কৌশলগত ও কারীগরি সহায়তার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে যায়।

এসএমই বা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তালিকাভুক্তিকরণ ও লেনদেনের জন্য একটি পৃথক বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সরকারি ট্রেজারি বন্ডের লেনেদেন চালু, ইটিএফ, ডেরিভেটিভসের মত এডভান্সড প্রোডাক্ট চালুর জন্য কাজ করছে। এছাড়া ওটিসি মার্কেটের আধুনিকায়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এই সকল কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালনে বিএসইসির আয়োজন ও উদযাপনে আইওএসসিও সহ বিশ্ববাসী মুগ্ধ হয়েছে। বর্তমান কমিশন দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিনিয়োগ শিক্ষা মেলা এবং বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাকনফারেন্স আয়োজন, পুঁজিবাজার ডিজিটালাইজেশন ও জিডিটাল ওয়ার্ল্ড আয়োজন ও উদযাপন, সেবি সহ বিভিন্ন দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প দক্ষতার সাথে পরিচালনা করেছেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: