facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

গোজামিল করে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ তুলছে বিবিএস ক্যাবলস


১৫ মে ২০১৭ সোমবার, ০৯:৫২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


গোজামিল করে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ তুলছে বিবিএস ক্যাবলস

গোজামিল তথ্য দিয়ে আইপিও অনুমোদনের পর শেয়ারবাজার থেকে অর্থ তুলতে যাচ্ছে বিবিএস ক্যাবলস।

কোম্পানির নগদ অর্থ প্রবাহ বা ক্যাশ ফ্লো ও ইপিএস (শেয়ারপ্রতি আয়) হিসাবেও চাতুরতার আশ্রয় নিয়ে গোজামিল রয়েছে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন পাওয়ার জন্য বিবিএস ক্যাবলসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশনে(বিএসইসি) যে সংশোধিত প্রসপেক্টাস দাখিল করা হয়েছে তা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে বেনকো ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, যারা এ প্রসপেক্টাস দাখিল করেছে।

সংশোধিত প্রসপেক্টাসের ৫৯ পৃষ্ঠায় গত ৫ বছরের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ইনকাম স্টেটমেন্টে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) গণনায় বিএএস-৩৩ অনুযায়ী, শেয়ার ওয়েটেডকরে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ইপিএস হিসাব করা হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সালে ওয়েটেড না করে হিসাব মান লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই এখানে বড় ধরনের গোজামিল রেখে ভুল ইপিএস গণনা করা হয়েছে। এ বছর কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২৯.১৬ টাকার পরিবর্তে ১৪.৩৫ টাকা ইপিএস দেখিয়েছে। এ ছাড়া ২০১৪ সালে ভুলভাবে ২৪.৩৩ টাকার ইপিএস ২৬.১৭ টাকা দেখিয়েছে।

নগদ প্রবাহ (ক্যাশ ফ্লো) হিসাবেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছে বিবিএস ক্যাবলস। হিসাব মান অনুযায়ী, প্রতি বছর ওয়েটেড শেয়ার দিয়ে শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হিসাব করা হলেও ২০১২ সালে করা হয়নি। ফলে এ বছর এনওসিএফপিএস ঋণাত্মক ২০৬.৬৯ টাকা হলেও কমিয়ে ১০১.৮০ টাকা দেখানো হয়েছে। যা কোম্পানিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

বিএএস-১ অনুয়ায়ী, তুলনা করার জন্য চলতি বছরের পাশাপাশি আগের বছরের একই সময়ের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু বিবিএস ক্যাবলস কর্তৃপক্ষ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ‘স্টেটমেন্ট অব চেঞ্জেস ইন ইক্যুইটি’ হিসাবের তথ্য প্রকাশ করলেও আগের বছরেরটি করেনি।

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ তোলার তিন মাসের মধ্যে ২০ কোটি টাকা ব্যবহার করা হবে বলে প্রসপেক্টাসের ১৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে একই বিষয়ে ১৪৬ পৃষ্ঠায় আবার ৬ মাসে ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে গোজামিল করা হয়েছে।

হিসাব মান অনুয়ায়ী, বাংলাদেশে ডাইলুটেড ইপিএস গণনার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, এখানে কোনো কিছুই কমন শেয়ারে রূপান্তর হয় না। এক্ষেত্রে বিবিএস ক্যাবলসও এর বাইরে নয়। যে সুযোগ নেই বলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ প্রসপেক্টাসের ১৬৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছে। তবে ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আবার ডাইলুটেড ইপিএস হিসাবে যথাক্রমে ২.৪৬ টাকা ও ২.০১ টাকা দেখিয়েছে। সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও ভুল ডাইলুটেড ইপিএস দেখিয়েছে। একইসঙ্গে একই বিষয়ে পৃষ্ঠাভেদে ভিন্ন তথ্য দিয়েছে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে কমন শেয়ারে কোনো পরিবর্তন না আসায় ওয়েটেড করা লাগেনি বলে প্রসপেক্টাসের ১৬৯ পৃষ্ঠায় তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এ বছর ৯০ কোটি টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে বলে ১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ বছর শেয়ার ওয়েটেড করেও ইপিএস দেখিয়েছে। এ হিসাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে।

৬০ পৃষ্ঠা অনুযায়ী, ২০১৪ সালে নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ হয়েছে ৮১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। এ হিসাবে এ বছর শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ দাঁড়ায় ১.৬৪ টাকা। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিট পরিচালন নগদ প্রবাহে ৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা হিসাবে নিয়ে শেয়ারপ্রতি ৭.৮৭ টাকা দেখিয়েছে। একইসঙ্গে এ ভুল ৭.৮৭ টাকাকে হিসাবে নিয়ে আবারও ভুল শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ/ইপিএস দেখিয়েছে।

এসব বিষয়ে শেয়ারবিজনেসের পক্ষ থেকে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া দেয়নি। এমনকি কোম্পানরি বাড্ডার প্রধান কার্যালয়ে কোম্পানি সচিব নাজমুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তিনি দেখা করেননি।



শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: