facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

কানাডায় বাড়ি কিনতে পারবে না বাংলাদেশিসহ বিদেশিরা


০৩ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার, ১০:১৯  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


কানাডায় বাড়ি কিনতে পারবে না বাংলাদেশিসহ বিদেশিরা

কানাডার ভূখণ্ডে বিদেশীদের গৃহসম্পত্তি কেনার ওপর দেশটির সরকার আরোপিত দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে রোববার। মহামারীর পর দেশটির আবাসন খাতে সম্পত্তির বিক্রয়মূল্য ব্যাপক আকারে বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রীতিমতো আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার।

কভিড মহামারীর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই কানাডায় ভূসম্পত্তি ও বাড়ির দাম বাড়ছে। সিএনএন বিজনেস জানিয়েছে, আবাসন খাতে ব্যাপক মাত্রায় ব্যয়বৃদ্ধির জন্য ক্রেতাদের দায়ী করে আসছিলেন দেশটির রাজনীতিবিদরা। তাদের বিশ্বাস, লাভজনক বিবেচনায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কানাডার আবাসন খাতে বিনিয়োগের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ার কারণেই দেশটিতে এ খাতের ব্যয় আকস্মিকভাবে বাড়তে শুরু করে।

কানাডায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশ থেকে গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ পাচার হয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে নানা মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে কানাডায় অর্থ পাচারকারীদের বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল আবাসন খাত। আকস্মিকভাবে খাতটিতে বিনিয়োগপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডায় ২০২০ ও ২১ সালের প্রায় পুরো সময়ে গৃহসম্পত্তির মূল্য বাড়তে থাকে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর আবাসন খাতে বিদেশীদের বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আইনটি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। এ বিষয়ে জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক দলের প্রচারণামূলক ওয়েবসাইটেও বলা হয়, কানাডার আবাসন খাত এখন মুনাফা শিকারি, ধনী করপোরেশন ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে। এতে ঘরবাড়ি ব্যবহার হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফাটকাবাজি বাড়ছে। একই সঙ্গে দামও হয়ে উঠছে আকাশচুম্বী। ঘরবাড়ি মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য নয়।

কানাডায় স্থায়ী হওয়া বাংলাদেশীদের অভিযোগ, অর্থ পাচারকারীদের অনেকেই কানাডায় সরিয়ে নেয়া অর্থ দেশটির কানাডার আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। দেশটির আবাসন খাতে গৃহমূল্য আকাশচুম্বী হয়ে ওঠার পেছনে এ অর্থ পাচারকারীদেরও ভূমিকা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা শুরুর পর তাদের অনেকেই বিপাকে পড়েন।

‘প্রহিবিশন অন দ্য পারচেজ অব রেসিডেনশিয়াল প্রোপার্টি বাই নন-কানাডিয়ানস অ্যাক্ট’ শীর্ষক আইনটিতে অভিবাসী ও কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) অনুমতিপ্রাপ্তদের আবাসন খাতে বিদেশীদের ভূসম্পত্তি ও ঘরবাড়ি কেনার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ ও ২১ সালে ব্যাপক আকারে বাড়ার পর গত বছর দেশটিতে ভূসম্পত্তি ও ঘরবাড়ির দাম কমতে শুরু করে।

কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের (সিআরইএ) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে গড় গৃহমূল্য ৮ লাখ মার্কিন ডলারের (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী সাড়ে ৮ কোটি টাকারও বেশি) ওপরে উঠে যায়। এর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে গড় গৃহমূল্য কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ।

গৃহমূল্য বৃদ্ধির পেছনে বড় একটি কারণ হিসেবে স্থানীয় ব্যাংকগুলোকেও দায়ী করা হয়। ব্যাংকগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রমেই ঋণের সুদহার বাড়িয়ে তোলায় দেশটিতে বন্ধকি সুদহারও বেড়ে যায়।

সিআরইএর মূল্যসূচক এখন প্রাক-মহামারী অর্থাৎ ২০১৯ সালের শেষ দিককার তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশিতে অবস্থান করছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ মুহূর্তে দেশটিতে বিক্রয়যোগ্য ঘরবাড়ির সংখ্যাও এখন মহামারীপূর্ব পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।

কানাডায় বসবাসের জন্য স্থানান্তর হওয়া ব্যক্তিদের আওতার বাইরে রাখা হলেও চলতি বছরের প্রথম দিনে বলবৎ হওয়া আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিআরইএ। এ নিয়ে এক বিবৃতিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, কানাডা এরই মধ্যে বহু সংস্কৃতির দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। অকানাডীয়দের গৃহসম্পত্তি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বিদেশীদের স্বাগত জানানো দেশ হিসেবে কানাডার সুনাম বিপন্ন হতে পারে। এ নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য সুফলও হতে পারে খুবই সীমিত।

সংস্থাটির আশঙ্কা, এ নিষেধাজ্ঞার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো ওই দুই দেশে কানাডীয়দের সম্পত্তি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। বিশেষ করে যেসব কানাডীয় শীতকালে হিম আবহাওয়া এড়াতে দূরে শীতকালীন আবাস গড়ে তুলছে, তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশী ভূসম্পত্তি ক্রেতাদের মধ্যে কানাডীয়রা শীর্ষে। কানাডীয়দের যুক্তরাষ্ট্রে ক্রয়কৃত গৃহসম্পত্তির অর্ধেকেরও বেশি ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনায় অবস্থিত।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

বিশেষ প্রতিবেদন -এর সর্বশেষ