২০ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার, ০৯:২৬ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার বিজনেস24.কম
২০১৯ সালে বীমা কোম্পানিগুলোর এজেন্ট কমিশনের হার বেঁধে দেয় বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর ফলে দেশের সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর মুনাফায় উল্লম্ফন দেখা গেছে। এখন এই মুনাফার ন্যূনতম অংশ যাতে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করা হয়, সে জন্য সাধারণ বীমা কোম্পানির লভ্যাংশের ন্যূনতম সীমা বেঁধে দিয়েছে আইডিআরএ। গতকাল সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে এক বৈঠকে ন্যূনতম ২০ শতাংশ লভ্যাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে বীমার এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আইডিআরএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশই এজেন্ট কমিশন বাবদ নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ছিল। আয়ের বড় অংশ এজেন্ট কমিশন বাবদ ব্যয় হওয়ার কারণে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর মুনাফা কম হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের কারণেও মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আইডিআরএ এজেন্ট কমিশন ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও নির্দেশিত সীমায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর ফলে চলতি বছর করোনার মধ্যেও সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর মুনাফা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর এই মুনাফা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণে এবার পদক্ষেপ নিল আইডিআরএ। এর মাধ্যমে সরকারের রাজস্বও বাড়বে বলে মনে করছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইডিআরএর একজন কর্মকর্তা জানান, এজেন্ট কমিশন ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ফলে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর মুনাফা আকর্ষণীয় হারে বেড়েছে; যা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে। আমরা বীমা কোম্পানির আয় থেকে সরকারের রাজস্বও বাড়াতে চাই। একই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডাররাও যাতে ন্যায্য লভ্যাংশ পান। এসব নিশ্চিত করতেই ২০২০ সালের জন্য সাধারণ বীমা কোম্পানির ন্যূনতম লভ্যাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছি আমরা।
আইডিআরএর কর্মকর্তারা জানান, বীমা কোম্পানিগুলো যাতে যথাসময়ে বীমাদাবি পরিশোধ করে সে বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য একটি মান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। যদি কোনো কোম্পানি বীমাদাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে নির্ধারিত মান অর্জন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মেয়াদ নবায়ন আটকে যেতে পারে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এজেন্ট কমিশন কমানোর ফলে প্রায় সব সাধারণ বীমা কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়ে গেছে। গত রবিবার পিপলস ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কোম্পানিটির নিট মুনাফা আগের বছরের তুলনায় চার গুণ বেড়েছে। শুধু পিপলস ইন্স্যুরেন্স নয়, প্রায় সব সাধারণ বীমা কোম্পানির নিট মুনাফায় উল্লম্ফনের কারণে কয়েক মাস ধরেই এ খাতের শেয়ারের দর বাড়তে শুরু করেছে। গত চার মাসে পুরো সাধারণ বীমা খাতের বাজার মূলধন দ্বিগুণ বেড়েছে। গতকালও সাধারণ বীমা খাতের শেয়ার দর সাড়ে ৩ শতাংশ বেড়েছে। অন্তত ছয়টি কোম্পানির শেয়ার দর সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ সীমায় কেনাবেচা হয়েছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।