facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

আইপিও শেয়ারে আসছে সার্কিট ব্রেকার


০২ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার, ০১:০৫  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


আইপিও শেয়ারে আসছে সার্কিট ব্রেকার

সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতেই আইপিওতে আসা কোম্পানির শেয়ারের দামের অতি মূল্যায়িত হওয়া ঠেকানোর পরিকল্পনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এ জন্য আইপিও শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিন থেকে নির্দিষ্ট হারে সার্কিট ব্রেকার আরোপের পরিকল্পনা চলছে।

সংশ্নিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, লেনদেনের প্রথম দু`দিনে ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হবে। এ ক্ষেত্রে ভিত্তি ধরা হবে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা দরকে। তৃতীয় দিন থেকে স্বাভাবিক সার্কিট (১০ শতাংশ) ব্রেকার চালু থাকবে।

এ নিয়ম কার্যকর হলে অভিহিত মূল্য ১০ টাকায় আইপিওতে আসা কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ ১৫ টাকায় উঠতে পারবে। এরপর প্রথম দিনের ক্লোজিং প্রাইস সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে স্থির থাকলে দ্বিতীয় দিনেও সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দর সাড়ে ২২ টাকায় কেনাবেচা হওয়ার সুযোগ থাকবে।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। ধরা যাক, কোনো কোম্পানি এ পদ্ধতিতে ৩৬ টাকা দরে আইপিও শেয়ার বিক্রি করেছে। সে ক্ষেত্রে লেনদেনের প্রথম দিনে শেয়ারটি সর্বোচ্চ ৫৪ টাকায় এবং প্রথম দিন শেষে ক্লোজ প্রাইস ৫৪ হলে দ্বিতীয় দিনে সর্বোচ্চ ৮১ টাকায় কেনাবেচা হতে পারবে।

সূত্র আরও জানায়, ২০১৭ সালে এ বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা ছিল; কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে এ বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চেও বাজারের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আইপিও শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রথম দিন থেকে সার্কিট ব্রেকার আরোপ হলে সংশ্নিষ্ট কোম্পানির প্রকৃত বাজারদর যাচাই করার সুযোগ থাকবে না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে কোনো শেয়ারের প্রকৃত দর যাচাই হয় না। এক বা একাধিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী চাইলে শেয়ারদরকে অসাধু প্রক্রিয়ায় বাড়াতে পারে, যা বন্ধ করার ভালো ব্যবস্থা নেই।

গত কয়েক বছরে আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি লেনদেনের প্রথম দিনে তিন থেকে আটগুণ দর উঠেছে। পরে ক্রমাগত দর হারাতে থাকে। আইপিওতে আসা শেয়ারগুলো এভাবে দর হারানোর কারণে সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত দুই বছরে আইপিওর নির্দিষ্ট মূল্য পদ্ধতিতে ১৫টি এবং বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে চার কোম্পানি শেয়ার বিক্রি করে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি বাদে বাকি ১৮টি বর্তমানে প্রথম দিনের তুলনায় ২৫ থেকে ৭৫ শতাংশ কম দরে কেনাবেচা হচ্ছে।

গত বছরের ১৭ মে তালিকাভুক্ত হওয়া ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং লেনদেনের প্রথম দিনের তুলনায় এখন চার ভাগের এক ভাগ দরে কেনাবেচা হচ্ছে। প্রথম দিনে সর্বোচ্চ ৬৬ টাকা দরে কেনাবেচা হয়। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হয় ১৬ টাকায়।

আইপিওর বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আমান কটন ফাইব্রসের শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ ৮১ টাকায় কেনাবেচা হয়। এখন শেয়ারটির দর ২৪ টাকা। গত বছরের ২ জুলাই তালিকাভুক্ত হওয়া বসুন্ধরা পেপার ৭২ টাকা দরে আইপিও শেয়ার বিক্রি করেছিল। লেনদেনের প্রথম দিনে তা ১৬০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছিল। এখন শেয়ারটির দর ৫০ টাকার ঘরে। গত দুই বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিনে ইস্যু মূল্যের তুলনায় চারগুণের বেশি দরে কেনাবেচা হয়। অথচ এক বছরের মধ্যে ওই দরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে অর্ধেক কোম্পানির শেয়ার।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: