
কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের জন্য বিকশিত স্থান উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি’র কেন্দ্রিয় কমিটির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কক্সবাজারে মানুষের জন্য কল্যাণকর একটি পর্যটন নীতি তৈরি জরুরি। এই কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সমস্যা দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। রোহিঙ্গাদের মানবিক বিবেচনায় স্থান দিতে গিয়ে আমরা কক্সবাজারবাসির ক্ষতি করছি কিনা তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। তাই দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বর্তমান সরকার, বিশ্ববাসিকে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান।
শনিবার দুপুরে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী ও ইনস্টিটিউটের শহীদ দৌলত ময়দানে আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ এর জনসভায় তিনি এ কথা বলেছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কক্সবাজার সহ দেশের জনগণ সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা বলেছি, জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।
কে পিআর বুঝে, কে পিআর বুঝে না- এটার জন্য সংস্কার আটকে থাকবে না মন্তব্য করে এনসিপি আহবায়ক বলেন, “ আমরা বুঝি- জনগন সংস্কার বুঝে, জনগণ সংস্কার চায়। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে অবশ্যই পিআর হতে হবে। নির্বাচন কমিশন ও দুদক সহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিরপেক্ষ সাংবিধানিক কমিটি গঠন করতে হবে। “
সংস্কার কোন দলের পক্ষে-বিপক্ষে নয় মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, এটা বাংলাদেশের পক্ষে এবং জনগণের পক্ষে। আগামী ৩ আগস্ট ঢাকার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে।
শেখ হাসিনা অপরাধের গডফাদার মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, নিজের মতো সারাদেশে গডফাদার তৈরি করেছিল। নারায়নগঞ্জে যেমন গডফাদার ছিল, কক্সবাজারেও গডফাদার ছিল। আমরা নতুন করে কোন গডফাদারের আর্বিভাব হতে দেবো না।
এনসিপি কক্সবাজারকে দেশের অন্যতম স্থান হিসেবে পরিচয় করার জন্য কাজ করবে। নতুন বাংলাদেশে নতুন কক্সবাজার হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বক্তব্যের শেষে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে কক্সবাজারে শহীদ রোহিঙ্গা নাগরিক নুরুল মোস্তফাকে সরকারের গেজেটভূক্ত করারও দাবি জানান নাহিদ ইসলাম।
জনসভায় দলের দক্ষিণাজ্ঞলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, পরর্বতি বাংলাদেশ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরকে নিয়ে। তাই বঙ্গোপসাগরকে নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
বদিকে বিতাড়িত করেছি মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, এখন আমাদের মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে, ইয়াবা বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।
রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে হাসিনা চরম অন্যায় করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান দ্রুত করতে হবে। কক্সবাজারের পর্যটন নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে কক্সবাজারের মানুষের সাথে আলাপ করতে হবে। কক্সবাজারের চিংড়ি চাষী, লবণ চাষীদের সাথে আলাপ করতে হবে।
তিনি পরবর্তি বাংলাদেশ হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর মন্তব্য করে বলেন, তার জন্য এনসিপি তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
কেন্দ্রিয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজাউদ্দিনের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, কেন্দ্রিয় নেতা ডা. তাসলিম জারা, অনিক রায় প্রমুখ।
এর আগে দুপুর পৌণে ১ টায় কক্সবাজার কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল থেকে এনসিপি কেন্দ্রিয় নেতাদের প্রতিনিধি দলটি পদযাত্রা সহকারে কক্সবাজার শহর অভিমুখি রওনা দেন। পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর ২ টার দিকে পাবলিক লাইব্রেরী ও ইনস্টিটিউটের শহীদ দৌলত ময়দানে এসে পৌঁছায়। এসময় সড়কের উভয় পাশে এনসিপি নেতাদের একনজর দেখতে অসংখ্য উৎসুক জনতার ভিড় জমে। এনসিপি নেতারা জনসভাস্থলে পৌঁছালে মুহুর্মুহু শ্লোগানে নেতাকর্মিরা স্বাগত জানান।
জনসভা শেষে এনসিপি নেতাদের বহর বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে রামু, ঈদগাঁও ও চকরিয়ায় পথসমাবেশে তাদের বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও তা হয়নি।