facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

‌`প্রভাবশালী মহল ‌‌চাচ্ছে না সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের ওপর যাক`


২৫ মার্চ ২০১৯ সোমবার, ১০:৪৭  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


‌`প্রভাবশালী মহল ‌‌চাচ্ছে না সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের ওপর যাক`

জাতীয় নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে যেখান থেকে উত্থানের শুরু, গত কয়েক সপ্তাহের টানা দরপতনে দেশের শেয়ারবাজার ক্রমে সে অবস্থায় ফিরছে। এরই মধ্যে ৩০০ কোটি টাকার অবস্থানে ফিরেছে। অনেক কোম্পানির শেয়ারদর তিন মাস আগের অবস্থানে নেমেছে। ফলে বাজার মূল্যসূচকও নামছে নিচের দিকে।

গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম দিনে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৪ কোটি টাকার শেয়ার, যা গত তিন মাসের বা গত বছরের ২৩ ডিসেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন এ বাজারে ৩৫৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় দফায় শক্তিশালী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে- এমন আভাসে গত ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে এসে আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এ সময় বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগে আসে। তাতে নির্বাচনের এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। ২৭ জানুয়ারি লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ১৯৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার।

তবে ওই উত্থান ছয় সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়নি। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া শেয়ারবাজারের উত্থান থেমেছিল চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি। এ সময়ে সব খাতের প্রায় সব শেয়ারের দরবৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারের প্রধান সূচক ৭৩২ পয়েন্ট বেড়ে ৫৯৫০ পয়েন্টে ওঠে। অবশ্য ২৭ জানুয়ারি চলতি দফার দরপতন শুরুর দিন লেনদেনের প্রথম কয়েক মিনিটে সূচকটি আরও ৪২ পয়েন্ট বেড়ে এ সময়ের সর্বোচ্চ অবস্থান ৫৯৯২ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। এরপর শুরু হওয়া দরপতন টানা আট সপ্তাহ চলেছে।

গতকাল রোববার প্রথম কার্যদিবসেও বড় দরপতনের মধ্য দিয়ে এ পতন টানা নবম সপ্তাহে গড়াল। লেনদেন হওয়া ৬০ শতাংশ শেয়ারে দরপতনের বিপরীতে ২৭ শতাংশের দর বেড়েছে। ২৭ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ৪৩৮ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৫১২ পয়েন্টে নেমেছে। সূচকের এ অবস্থান গত ৩ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। ওইদিনের লেনদেন শেষে সূচকটির সর্বশেষ অবস্থান ছিল ৫৪৯৬ পয়েন্টে। এ সময়ে ৩৫২ কোম্পানির মধ্যে ৩১২টিই দর হারিয়েছে।

চলতি দরপতনের কারণ বিষয়ে জানতে চাইলে শীর্ষ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাজারে গুজব আছে প্রভাবশালী একটি মহল চাচ্ছে না `এ বছর বাজার সূচক ৬০০০ পয়েন্টের ওপর যাক`। বার্তাটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় বড় বিনিয়োগকারীরা নিষ্ফ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন।

তবে দরপতন টানা নবম সপ্তাহে গড়ানোর প্রেক্ষাপটে একে আর কোনো মৌলভিত্তিক বিশ্নেষণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর করপোরেট গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক বাকি খলিলি।

তিনি বলেন, যে কোনো কারণেই হোক, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দরপতনের আতঙ্ক ভর করেছে। এ থেকে উত্তরণই প্রধান চিন্তার বিষয় হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, এখনই অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিসহ সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া। পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংক এবং মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানির বিনিয়োগ সক্ষমতা আছে সেগুলোকে বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহিত করা দরকার। এ ছাড়া আস্থা ফেরাতে নীতিনির্ধারক মহল থেকে সুনির্দিষ্ট বার্তা দেওয়া।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৯ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২০৬টির বা ৬০ শতাংশের দর কমেছে, বেড়েছে ৯৪টির বা ২৭ শতাংশের। এতে ডিএসইএক্স ৫৮ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ হারিয়ে ৫৫১২ পয়েন্টে নেমেছে। সূচকের এ পতন গত ৩১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর লেনদেনেও ছিল একই চিত্র। গতকাল সূচকের পতনে সর্বাধিক ভূমিকা ছিল ব্যাংক খাতের শেয়ারের দরপতন। ৩০ ব্যাংকের মধ্যে ২৫টি দর হারানোয় গড়ে খাতটি পৌনে এক শতাংশ দর হারিয়েছে। তাতে সূচক কমেছে ৪০ পয়েন্ট। তবে খাতওয়ারি হিসেবে বীমা খাতের দরপতন ছিল সবচেয়ে বেশি। এ খাতের ৪৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৮টির দর কমেছে। এতে এ খাতের সব শেয়ারের গড়ে আড়াই শতাংশ দরপতন হয়েছে।

ব্র্যাক ও ব্যাংক এশিয়া গত বছরের তুুলনায় এ বছর কম লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর প্রভাবে ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে। এর মধ্যে ব্র্যাকের সোয়া ৭ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে প্রায় ১৫ পয়েন্ট। ব্যাংক এশিয়ার সাড়ে ১০ শতাংশ দরপতনে সূচক হারিয়েছে আরও ৪ পয়েন্ট।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: