facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

৯৮৮ কোটি টাকা মুনাফা


২১ মে ২০১৮ সোমবার, ০৫:২১  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


৯৮৮ কোটি টাকা মুনাফা

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জানুয়ারি থেকে মার্চ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা ১৫ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে একটি বাদে ২৯টি ব্যাংক নিট ৯৮৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যা গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ১৭০ কোটি টাকা কম। অধিকাংশ ব্যাংকের নিট মুনাফা কমেছে। ব্যাংকগুলোর প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। পূবালী ব্যাংক ছাড়া বাকিগুলো প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকগুলো নিট ১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা মুনাফা করে।

আগ্রাসীভাবে ঋণ বিতরণ করায় কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট সৃষ্টি হওয়ায় গত জানুয়ারির শুরুতে ঋণ আমানত অনুপাত পূর্বের ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৮০ শতাংশ করার আগাম ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে ওই ঘোষণার পরই ব্যাংক খাতে অস্থিরতা শুরু হয়। যদিও পরে এ অনুপাত সাড়ে ৮৩ শতাংশ নির্ধারিত হয়েছে।

অনেক ব্যাংক তড়িঘড়ি করে আমানত বাড়াতে গিয়ে উচ্চ সুদ অফার করছে। ঋণের সুদহারও বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সিআরআর কমানোসহ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক নীতি সহায়তা দিয়েছে। তাতে এখনও ফল আসেনি। এরই মধ্যে তালিকাভুক্ত ব্যাংক কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগই মুনাফা কমার খবর দিয়েছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ প্রান্তিকে টাকার অঙ্কে নিট মুনাফার হিসাবে ১১ ব্যাংকের নিট মুনাফা বেড়েছে, কমেছে ১৮টির। তবে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বিবেচনায় ১০ ব্যাংকের ইপিএস বেড়েছে, কমেছে ১৮টির। ইপিএস বেড়েছে স্যোসাল ইসলামী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, ব্যাংক এশিয়া, যমুনা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, আইএফআইসি, ব্র্যাক, ডাচ্‌-বাংলা, এনসিসি এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের।

ইপিএস কমেছে ওয়ান, স্ট্যান্ডার্ড, প্রাইম, এবি, উত্তরা, ইস্টার্ন, ন্যাশনাল, আল-আরাফা, সিটি, এক্সিম, সাউথ ইস্ট, রূপালী, ট্রাস্ট, শাহজালাল, মার্কেন্টাইল, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ঢাকা, ইসলামী ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। আইসিবি ইসলামী ব্যাংক আগে থেকেই লোকসানে। প্রথম প্রান্তিকে এবং আলোচ্য প্রান্তিকে এর পাশাপাশি লোকসান দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। ঢাকা ব্যাংকের ইপিএস দুই পয়সা কমলেও নিট মুনাফা বেড়েছে ৫২ লাখ টাকা। বোনাস শেয়ারের কারণে শেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে এমনটি হয়েছে। তবে একই কারণে শেয়ার বৃদ্ধির পরও ইপিএস বেড়েছে আইএফআইসি, ব্র্যাক, ব্যাংক এশিয়া, মিউচুয়াল ট্রাস্ট এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের। এসব ব্যাংকের ইপিএস ৭ থেকে ৭১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

পর্যালোচনার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্যোসাল ইসলামী ব্যাংকের মুনাফা বেড়ে সাড়ে তিনগুণ হয়েছে। ব্যাংকটি সর্বশেষ প্রান্তিকে ২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছে, যা গত বছর ছিল মাত্র ৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ইপিএস ১০ পয়সা থেকে বেড়ে ৩৬ পয়সা হয়েছে। একই সময়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নিট মুনাফা ১০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

ব্যাংক এশিয়ার ইপিএস ৩৫ পয়সা থেকে বেড়ে ৬০ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। ইপিএস বৃদ্ধির হার ৭১ শতাংশ। তবে নিট মুনাফা বেড়েছে ৯২ শতাংশ। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫৯ কোটি ২২ টাকা হয়েছে। যা আগের বছর ছিল ৩০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। যমুনা ব্যাংকের ইপিএস ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকের ইপিএস হয়েছে ৫২ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৩৯ পয়সা। মিউচুয়াল ট্রাস্টের ইপিএস ২৮ শতাংশ বেড়ে ৭৩ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। গত বছর প্রথম প্রান্তিকে এ ব্যাংকের ইপিএস ছিল ৫৭ পয়সা।

আইএফআইসি ব্যাংকের ইপিএস ১৫ শতাংশ বেড়ে ২৬ পয়সা থেকে ৩০ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। যদিও নিট মুনাফা ১৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৪৫ শতাংশ। একটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট ও ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদানের পর ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন তথা শেয়ার বহুলাংশে বেড়েছে। এ কারণে নিট মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ইপিএসের প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে। ব্র্যাক, ডাচ্‌-বাংলা, প্রিমিয়ার ও এনসিসি ব্যাংকের ইপিএস আড়াই থেকে ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

গত প্রান্তিকে সর্বাধিক ইপিএস কমেছে ওয়ান ব্যাংকের। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ২৩ পয়সা। এ বছর তা মাত্র ৩৩ পয়সায় নেমেছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ ব্যাংকটি নিট ৮১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা মুনাফা করে, যা এ বছর ২৪ কোটি ৯ লাখে নেমেছে।

ইপিএস পতনে এর পরের অবস্থানে থাকা স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ইপিএস ৫৮ শতাংশ কমে ১৯ পয়সা থেকে নেমেছে ৯ পয়সায়। প্রাইম ব্যাংকের ইপিএস ৫৬ শতাংশ থেকে ৩৪ পয়সায় নেমেছে। একইভাবে এবি ব্যাংকের ইপিএস ৪৮ শতাংশ কমে ১৬ পয়সায় এবং উত্তরা ব্যাংকের ইপিএস ৪৬ শতাংশ কমে ৩৯ পয়সায় নেমেছে। ন্যাশনাল ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ইপিএস কমেছে ৪৫ শতাংশ হারে। ব্যাংক দুটির ইপিএস ছিল যথাক্রমে ১২ পয়সা ও ৬৯ পয়সা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: