১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার, ০৯:৩৭ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
কুইন্সটাউন ইভেন্ট সেন্টারের মাঠটা ছবির মতো সুন্দর। মাঠের একদিকে বিমানবন্দর, অন্যদিকে পাহাড়। পাশাপাশি সবুজের সমারোহটা চোখের জন্য দারুণ সুখানুভূতিরই। কিন্তু এমন দুর্দান্ত এক মাঠেই আজ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটিংটা একেবারেই প্রত্যাশামতো হয়নি। নিউজিল্যান্ডে যুব বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৫ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ যুবদল।
চমৎকার রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়ায় টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ যুবদলের অধিনায়ক সাইফ হাসান। কিন্তু ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় দল। তবে ওপেনার পিনাক ঘোষের উইকেটটি নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে। ডিলন পেনিংটনের বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে বাঁহাতি পিনাকের অফ স্টাম্প মিস করছিল বলে মনে হয়েছে। তবে পিনাকের উইকেটটি যদি হয় দুর্ভাগ্যজনক, তাহলে অধিনায়কের ভুল অমার্জনীয়। স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যাওয়া অধিনায়ক সাইফ পরের বলেই লং অফে ইথান বাম্বারের বলে হ্যারি ব্রুকসকে ক্যাচ দেন। এর আগে অবশ্য বাম্বারের বলেই জ্যাক ডেভিসকে ক্যাচ দিয়েছিলেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভয়ংকর বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশের বিপদ আরও বাড়ে দলীয় ২৭ রানে কানাডার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা তৌহিদ হৃদয় আম্পায়ারের আরও একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে এলবিডব্লু হয়ে গেলে। তৌহিদ আফিফের সঙ্গে বিপদটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পাল্টা আক্রমণের চেষ্টাও করছিলেন। কিন্তু ১২ রানে তিনি ফিরে গেলে পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে যায় বাকিদের জন্য। কিন্তু তারপরও দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় আফিফ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব চেষ্টা করেছিলেন। নিজেদের মধ্যে ৯৪ রানের এক জুটি গড়ে দলকে পথ দেখিয়েছিলেন। নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু অফ স্পিনার ইভান উডসের এক ওভারে আমিনুল ও আফিফ ফিরে গেলে আবারও বিপর্যয়ে পড়ে যায় দল। আফিফ এই টুর্নামেন্টে নিজের ব্যাটে দারুণ ধারাবাহিকতাই ধরে রেখেছেন। আজ ৬৩ রান করেছেন, ৮৫ বলে ৮টি চারের সাহায্যে। আমিনুল ৬৪ বলে করেছেন ৩১, ২টি চার মেরে।
আফিফ ও আমিনুলের দুর্দান্ত জুটিটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে বড় সংগ্রহের স্বপ্নটাও ফিকে হয়ে যায় বাংলাদেশের। লক্ষ্যটাও নির্দিষ্ট হয়ে যায় ইনিংসের বাকি ওভারগুলো ব্যবহার করে আসার ব্যাপারে। সে লক্ষ্যে অবশ্য পুরোপুরি না হলেও প্রায় সফলই বলা যায় বাংলাদেশকে। দল শেষ পর্যন্ত অলআউট হয়েছে ৪৯.২ ওভারে। আফিফ ও আমিনুলের পর উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মাহিদুল ইসলাম আঁকন ও হাসান মাহমুদ হাল ধরেছিলেন। মাহমুদ ২৩ আর মাহিদুল ২০ রান করেন। শেষ ব্যাটসম্যান টিপু সুলতান অপরাজিত ছিলেন এক বল খেলে। তিনি অবশ্য রানের হিসাব খোলার সুযোগই পাননি।
ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন বাম্বার ও উডস। একটি করে উইকেট পেয়েছেন পেনিংটন, টম স্ক্রিভেন ও লুক হোলমান।
নিউজিল্যান্ডের ওটাগোর এই কুইন্সটাউন ইভেন্ট সেন্টারে ২৩৬ রানের বেশি তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই। সেটি অবশ্য বড়দের আন্তর্জাতিক ম্যাচের হিসাব। কিন্তু আজ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা একটু সতর্ক হলেই ম্যাচটায় নিজেদের সুবিধাজনক জায়গায় দেখতে পেতেন। কিন্তু সে সুযোগ তারা হারিয়েছেন। এখন অপেক্ষা বোলাররা কেমন করেন, সেটি দেখার।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।