facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

১৬ কোম্পানির তালিকাচ্যুতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসছে


১০ জুলাই ২০১৯ বুধবার, ০৩:০৮  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


১৬ কোম্পানির তালিকাচ্যুতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসছে

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৬ কোম্পানির পাঁচ বছরের বেশি লভ্যাংশ না দেওয়া এবং ৩ বছরের বেশি সময় ধরে উৎপাদন না থাকার কারণে এগুলোকে তালিকাচ্যুতির জন্য অনেকদিন ধরেই রি-ভিউয়ে রেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। আর এসব কোম্পানি ডি-লিস্টিং করা হবে কিনা কিংবা এগুলোর ক্ষেত্রে বিকল্প কোন ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে ১১ জুলাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, মেঘনা পেট ইন্ডাষ্ট্রিজ, বিচ হ্যাচারী লিমিটেড এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (বিডি) লিমিটেডকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লিস্টিং রেগুলেশন, ২০১৫ এর ৫১ (১) (সি) এই আইনের আওতায় রিভিউ করা হচ্ছে। এছাড়া মেঘনা পেট ইন্ডাষ্ট্রিজ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, দুলামিয়া কটন স্পিনিং, সমতা লেদার কমপ্লেক্স, শ্যামপুর ‍সুগার মিলস, জিলবাংলা সুগার মিলস, ইমাম বাটন ইন্ডাষ্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাষ্ট্রিজ, সাভার রিফ্যাক্টরীজ, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, জুট স্পিনার্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, সোনারগাও টেক্সটাইল এবং ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্ক এই কোম্পানিগুলোকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিষ্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ এর ৫১ (১) ধারার আওতায় রি-ভিউ করা হচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লিস্টিং রেগুলেশন, ২০১৫ এর ৫১ (১) (সি) এই আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ইস্যুয়ার স্বেচ্ছায় কিংবা আদালতের নির্দেশে লিক্যুইডেশনে যায় অথবা টানা ৩ বছর ব্যবসায়িক উৎপাদন বন্ধ থাকে তাহলে সে ইস্যুয়ারকে তালিকাচ্যুত করা যেতে পারে।

এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিষ্টিং) রেগুলেশন,২০১৫ এর ৫১ (১) ধারায় কোনো কোম্পানিকে ডি-লিষ্টিং করার জন্য চারটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কোম্পানি যদি ৫ বছর ধরে ডিভিডেন্ড না দেয়, যদি কোনো কোম্পানি টানা তিনটি বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হয়, কোম্পানির স্বেচ্ছায় বা কোর্টের মাধ্যমে অবসায়ন বা তিন বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকে এবং তিন বছর ধরে স্টক এক্সচেঞ্জের লিষ্টিং ফি পরিশোধ না করে তাহলে ডিএসই চাইলে কোম্পানিকে ডি-লিষ্টিং করতে পারে।

এদিকে উল্লেখিত কোম্পানিগুলোকে আদৌ ডি-লিস্টিং করা হবে কিনা সে বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পায়নি ডিএসই। এছাড়া যেহেতু এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের অনেক টাকা বিনিয়োগ রয়েছে তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এগুলোকে তালিকাচ্যুত না করে বিকল্প ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে ডিএসই’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, যেসব কোম্পানি ১ বছর কিংবা তার বেশি সময় ধরে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে সেগুলোর জন্য প্রযোজ্য কমিশনের ২০০২ সালের নোটিফিকেশনের উপর আলোচনা ও সার্বিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কাজ করে যাচ্ছে বিএসইসি। তাই উল্লেখিত কোম্পানিগুলোর বিষয়ে ২০০২ সালে জারি করা নোটিফিকেশনের আওতায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

যেসব কোম্পানির ১ বছর বা তার বেশি সময় ধরে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে সেগুলোর জন্য প্রযোজ্য কমিশনের ২০০২ সালের নোটিফিকেশনে বলা হয়েছে, যেসকল কোম্পানি ১ বছর কিংবা তার বেশি সময় জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে সেগুলোর পরিচালনা পর্ষদ আগামী ৬ মাসের মধ্যে বিশেষ সাধারণ সভার (ইজিএম) মাধ্যমে পুন:গঠন করতে হবে। এ সংক্রান্ত ইজিএম অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্তত তিন সপ্তাহ আগে শেয়ারহোল্ডারদের নোটিশের মাধ্যমে জানাতে হবে এবং একটি বাংলা অপরটি ইংরেজিসহ দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় তা প্রকাশ করতে হবে। পরিচালনা পর্ষদ পুন:গঠনের ক্ষেত্রে নতুন পরিচালক কোম্পানির স্পন্সর, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্য থেকে গ্রুপিংভাবে নির্বাচিত হবে। ইজিএম অবশ্যই অবাধ এবং স্বচ্ছ হতে হবে।

কোম্পানির চেয়ারম্যান হওয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানির স্পন্সর পরিচালকদের শেয়ারহোল্ডিং ৫০ শতাংশের কম রয়েছে সেগুলোর পুন:গঠিত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান স্পন্সর পরিচালক গ্রুপের মধ্য থেকে নির্বাচিত হতে পারবে না। এছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেশনাল বিবেচনায় নিয়োগকৃত হবেন।

পুন:গঠিত পরিচালনা পর্ষদে কারা পরিচালক হতে পারবে না সে বিষয়ে বলা হয়েছে, কোম্পানির সাবেক এক্সিকিউটিভ, সাবেক স্ট্যাচুটরি অডিটর অথবা কোম্পানির অডিটরের সঙ্গে ব্যবসা কিংবা প্রফেশনাল সম্পর্ক রয়েছে অথবা কনসালট্যান্ট, কোম্পানির বিক্রয় বা ক্রয়ে ১০ শতাংশ অবদান রয়েছে এমন কোনো কাস্টমার অথবা সাপ্লাইয়ার, বর্তমান পরিচালক-স্পন্সর অথবা কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে প্রফেশনাল সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তি পুন:গঠিত পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক হতে পারবেন না।

কোম্পানি পুর্নগঠিত হওয়ার পর ৬ মাসের মধ্যে কোম্পানির ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যক্তি; সেটা যদি পরিচালক কিংবা অডিটরও হয় তাকে চিহ্নিত করবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কোম্পানিকে মুনাফায় ফেরানোর জন্য পুন:গঠিত পরিচালনা পর্ষদ অপারেশনাল এবং ফাইন্যান্সিয়াল পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।

যদি পুর্নগঠিত পরিচালনা পর্ষদ ২৪ মাসের মধ্যে কোম্পানির অপারেশনাল এবং ফাইন্যান্সিয়াল পারফরম্যান্স উন্নত না করতে পারে তখন আইন অনুযায়ী কোম্পানিকে মার্জার অথবা বিলুপ্ত বা অবসায়ন করা হবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: