facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

১৫ কোম্পানির অধপতন, নজরদারিতে আরো ৩০ কোম্পানি


২৬ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার, ০৯:১১  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


১৫ কোম্পানির অধপতন, নজরদারিতে আরো ৩০ কোম্পানি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৫ কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে নেমে এসেছে। শেয়ারহোল্ডারদের কোনো রিটার্ন না দেওয়ার কারণে এসব কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে নামিয়ে আনা হয়। এদিকে প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে নামার কারণ হিসেবে দুর্বল কোম্পানির তালিকাভুক্তিকে দায়ী করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত দুই বছরে যে প্রতিষ্ঠানগুলো ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে নেমে এসেছে, সেগুলো হচ্ছে এমারাল্ড অয়েল, তুংহাই নিটিং, এবি ব্যাংক, ইস্টার্ন কেব্লস, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইভিন্স টেক্সটাইল, নর্দান জুট, জিবিবি পাওয়ার, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, আরামিট সিমেন্ট, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, ডেল্টা স্পিনার্স, হাক্কানী পাল্প, কেয়া কসমেটিক ও মিথুন নিটিং।

এদিকে কোম্পানিগুলো ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে নামলেও প্রায় সারা বছরই এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বৃদ্ধির দৌরাত্ম্য লক্ষ করা যায়। সংশ্লিষ্টদের মতে, এসব কোম্পানিতে কারসাজিকারীদের উপস্থিতিও বেশি দেখা যায়। সেজন্য এসব কোম্পানির প্রতি কঠোর অবস্থানে রয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। বছরের পর বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান না করায় এবং উৎপাদনে না থাকায় গত বছরের ৭ আগস্ট ১৫ কোম্পানিকে তাদের আর্থিক অবস্থাসহ অন্যান্য বিষয় জানতে চিঠি দেওয়া হয়।

কোম্পানিগুলো হলো-সমতা লেদার, জুট স্পিনার্স, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, মেঘনা পেট, তুংহাই নিটিং, সিএনএটেক্স, দুলামিয়া কটন, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, শ্যামপুর সুগার মিলস, জিলবাংলা সুগার মিলস, ইমাম বাটন, মেঘনা কনডেন্সড, শাইনপুকুর সিরামিকস এবং কে অ্যান্ড কিউ। তবে এরই মধ্যে লভ্যাংশ দেওয়ায় কে অ্যান্ড কিউকে এ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ডিএসই সূত্র জানায়, দুর্বল কোম্পানির তালিকা আরও বড় হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩০টি কোম্পানির ওপর চলছে নজরদারি। পর্যায়ক্রমে সব কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গতবছরের ১৮ জুলাই দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিংকে তালিকাচ্যুত (ডিলিস্টিং) করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। নিকট ভবিষ্যতে কোম্পানি দুটির উৎপাদন শুরু করার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার আগে বা পরে আর্থিক অবস্থা দুর্বল হতেই পারে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে, তার ভিত্তি শক্ত হওয়া জরুরি। সেজন্য কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হলে তাদের আর্থিক অবস্থা ভালোভাবে যাচাই করে তারপর অনুমতি দেওয়া উচিত। এটা করতে পারলে পুঁজিবাজারে ‘জেড’ ক্যাটেগরির কোম্পানির সংখ্যা কিছুটা হলেও কমবে।

তাদের অভিমত, প্রতিবছর যে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসছে, এর মধ্যে বেশিরভাগেরই আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। এ কারণে বাজারে আসার দুই-তিন বছরের মধ্যে আর্থিক অবস্থা আরও নাজুক হয়ে যাচ্ছে। তারা শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্ন দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে কোম্পানির অবস্থান হচ্ছে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য দরকার বহুজাতিকের পাশাপাশি সরকারি ও ভালো মানের প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি। এ ধরনের কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে পুঁজিবাজারেও যেমন ভালো শেয়ারের জোগান বাড়ে, তেমনি বিনিয়োগকারীদেরও কম ঝুঁকি থাকবে। কারণ এ ধরনের কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার চেষ্টা করে।

একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি পুঁজিবাজারে কোম্পানির সংখ্যা বাড়ছে। প্রায় প্রতি মাসেই দু-একটি কোম্পানির অনুমোদন দিচ্ছে বিএসইসি, যেগুলোর বেশিরভাগই দুর্বল কোম্পানি। তাদের উচিত কোম্পানির সংখ্যা কম হলেও ভালো মানের কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা। সেটা না হলে ‘জেড’ ক্যাটেগরির কোম্পানির সংখ্যা আরও বাড়বে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: