facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

‘হাসপাতালের ভেতরে জঙ্গি হামলাকারীরা, দোয়া করবেন’


০৮ মার্চ ২০১৭ বুধবার, ১০:৫২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


‘হাসপাতালের ভেতরে জঙ্গি হামলাকারীরা, দোয়া করবেন’

আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সামরিক হাসপাতাল বিস্ফোরণ আর গুলিতে কেঁপে উঠেছে। জঙ্গিরা চিকিৎসকের বেশে সরদার দাউদ খান হাসপাতালে ঢুকে এ হামলা চালিয়েছে। ঘটনার পরপরই হাসপাতাল এলাকা ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এতে ৩০ জন নিহত ও ৬৬ জন আহত হয়েছেন। তবে প্রতিরোধের মুখে তিন বন্দুকধারীও নিহত হয়েছে।

আইএসের (ইসলামিক স্টেট) আমাক নিউজ এজেন্সি এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের যোদ্ধারা এ হামলা চালিয়েছে।

ঘটনার সময় হাসপাতালের ভেতরে আটকা পড়া এক কর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাহায্য চেয়ে পোস্ট দেন। লিখেছেন, ‘হামলাকারীরা হাসপাতালের ভেতরে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় টেলিভিশন ফুটেজে হাসপাতালের সবার ওপরের তলার জানালায় কয়েকজনকে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।

নিরাপত্তা কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেন, ৪০০ শয্যার সরদার মোহাম্মদ দাউদ খান হাসপাতালের পেছন দিকে এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণের মাধ্যমে হামলা শুরু হয়। অপর তিন হামলাকারী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও হাতবোমা নিয়ে হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ করে।

হাসপাতালের প্রশাসক আবদুল হাকিম টেলিফোনে এএফপিকে বলেন, ‘হামলাকারীরা সবখানেই গুলি করছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।’

হাসপাতালের নার্স আবদুল কাদির এএফপিকে বলেন, ‘আমি একজন হামলাকারীকে দেখেছি। তার হাতে একে-৪৭। পরনে চিকিৎসকের পোশাক। সে চতুর্থ তলায় রোগী ও নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তারা আমার বন্ধুকে গুলি করেছে, আমি পালাতে পেরেছি...আমি কাঁটাতার লাফ দিয়ে পালিয়েছি।’

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে হাসপাতালের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় একটি গাড়িবোমা হামলাসহ বিকট শব্দে অন্তত দুটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। আফগানিস্তানের বিশেষ বাহিনী হামলাকারীদের ঠেকাতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রথম বিস্ফোরণের চার ঘণ্টা পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র দৌলত ওয়াজিরি এএফপিকে বলেন, ‘তিনজন হামলাকারী একে-৪৭ ও গ্রেনেড নিয়ে ভবনে প্রবেশ করে। আমাদের কমান্ডোরা তাদের দমন করছে। তাদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছে। অন্য দুজন এখনো ভবনের সপ্তম ও অষ্টম তলায় লড়ে যাচ্ছে। আমরা রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছি।’

হাসপাতালে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন রয়টার্সকে বলেন, তারা দেখেন চিকিৎসকের পোশাকে একজন একে-৪৭ হাতে গুলি করতে শুরু করে। এতে অন্তত একজন রোগী ও হাসপাতালের একজন কর্মী নিহত হন।

জহির খান নামের এক ব্যক্তি, যিনি টেবিলের নিচে লুকিয়ে ছিলেন, পরে পালিয়ে বাঁচেন। তিনি বলেন, আচমকা একজন বন্দুকধারী সবার ওপর গুলি ছুড়তে শুরু করে। অনেক রোগী হামাগুড়ি দিয়ে জানালার বাইরের দিকে কার্নিশে আশ্রয় নেন।

ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী হাসপাতালের চারপাশের এলাকা বন্ধ করে দেয়। হেলিকপ্টার থেকে হাসপাতালের ছাদে নেমে অবস্থান নেয় স্পেশাল ফোর্সের সেনারা। সেখানে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী গুলি বিনিময় চলে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, হামলাকারীরা হাসপাতালের ওপরের তলায় অবস্থান নেয়। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র দৌলত ওয়াজিরি বলেন, বিকেলের দিকে তিন বন্দুকধারীকে হত্যার মধ্য দিয়ে ঘটনার অবসান ঘটে।

আফগানিস্তানের মুখ্য নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ এ হামলা প্রসঙ্গে বলেন, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। এটি কোনো কিছু দিয়ে জায়েজ করা যাবে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তিনি বলেন, এটি ‘সব মানবিক মূল্যবোধকে পদদলিত করার শামিল’।

কাবুলে এক সপ্তাহ আগে দুটি নিরাপত্তা কম্পাউন্ডে তালেবানের আত্মঘাতী হামলায় ১৬ জন নিহত হন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

বিশেষ প্রতিবেদন -এর সর্বশেষ