facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

‘সৈয়দ আশরাফদের শিক্ষক’ ছিলেন সুরঞ্জিত


২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সোমবার, ১০:১৪  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


‘সৈয়দ আশরাফদের শিক্ষক’ ছিলেন সুরঞ্জিত

প্রয়াত প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে সংসদীয় কাজে নিজের শিক্ষক হিসাবে অভিহিত করলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

সোমবার জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এক স্মরণসভায় এ কথা বলেন তিনি।

সুনামগঞ্জ সমিতি আয়োজিত এই স্মরণসভায় বক্তব্য দিতে এসে সৈয়দ আশরাফ ফিরে যান ছিয়ানব্বইয়ের সংসদীয় জীবনে, যখন প্রথম সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।

সৈয়দ আশরাফ বলেন, “ছিয়ানব্বই সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, আমরা অনেকে প্রথম সংসদ সদস্য হয়েছিলাম। সে সময় একদিন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা যেন তার (সুরঞ্জিত) থেকে সংসদীয় কাজ শিখি, তিনি যেন শেখান।

“কিভাবে বাজেট বক্তব্য দিতে হয়, কিভাবে পয়েন্ট অব অর্ডার তুলতে হয়, কিভাবে প্রশ্ন করতে হয়, কিভাবে প্রশ্ন জমা দিতে হয়, কিভাবে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়- এগুলো আমরা তার কাছ থেকেই শিখেছি। এত বড় মানুষ, এত জ্ঞান, আমার মনে হয় না আর কেউ আসবেন।”

সুনামগঞ্জের বাসিন্দা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে নিজের অনেক মিল দেখেন কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা সৈয়দ আশরাফ।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (ফাইল ছবি) সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (ফাইল ছবি) তিনি বলেন, “আমরা উভয়েই ভাটি বাংলার মানুষ। সুনামগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ উভয়টি ভাটি বাংলা। আমাদের উচ্চারণ প্রায় এক, আমাদের জীবন জীবিকাও প্রায় একই ধরনের। উনি সেটা অনুভব করতেন, তাই ছেলেকে বিয়ে করালেন কিশোরগঞ্জে।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি জাতীয় সংসদে সাতবার সুনামগঞ্জের দিরাই-শাল্লার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

ষাটের দশকে স্বাধিকারের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশে বাম ধারার রাজনীতিতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদার্পণ। ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত সুরঞ্জিত ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের নির্বাচনে ন্যাপ থেকে জয়ী হয়ে আলোচনার জন্ম দেন। একাত্তরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ৫ নম্বর সেক্টরের সাব কমান্ডার হিসেবে।

সুরঞ্জিত ১৯৭৯ সালের সংসদে ছিলেন একতা পার্টির প্রতিনিধি হয়ে। ১৯৯১ সালের সংসদে গণতন্ত্রী পার্টি থেকে নির্বাচিত হন তিনি।

ছোট দলের বড় নেতা হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত সুরঞ্জিত আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য অন্য আসনে উপনির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি। এরপর অষ্টম, নবম ও দশম সংসদেও তিনি নির্বাচিত হন।

দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য সুরঞ্জিত ছিলেন নবম সংসদে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সংস্কার প্রস্তাব তোলা সুরঞ্জিত অন্য ‘সংস্কারপন্থি’ নেতাদের মত মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। তিন বছর পর ২০১১ সালে পান নবগঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

পাঁচ মাসের মাথায় সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করলেও তা গ্রহণ না করে সে সময় তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে রাখেন শেখ হাসিনা।

দশম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর সুরঞ্জিতকে আর মন্ত্রিত্বে ফেরানো হয়নি। তবে আলোচনা সভায় সমসাময়িক বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে সরস মন্তব্যের কারণে সংবাদ শিরোনামে এসেছেন নিয়মিতভাবে। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগেও জাতীয় সংসদে বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি।

তার স্মরণসভায় সুনামগঞ্জ সমিতির সভাপতি আকবর হোসেন মন্জুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত, সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, পীর ফজলুর রহমান মেসবাহ ও শামসুন নাহার বেগম উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

রাজনীতি -এর সর্বশেষ