facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

সেন্ট্রাল ফার্মার ওষুধ বিক্রিতে ধস, তবুও বাড়ছে শেয়ার দর


১৯ জানুয়ারি ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ১১:০৩  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


সেন্ট্রাল ফার্মার ওষুধ বিক্রিতে ধস, তবুও বাড়ছে শেয়ার দর

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ওষুধ বিক্রি গত এক বছরে অর্ধেকে নেমেছে। এ সময় কোম্পানিটির টার্নওভারেও একই চিত্র লক্ষ করা গেছে। বাজারে চাহিদা কম থাকায় ওষুধ বিক্রি কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা। এদিকে ওষুধ বিক্রি অর্ধেক কমলেও গত এক মাস ধরে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছেই।

সূত্র জানায়, প্রতিযোগিতার বাজারে কোম্পানিটি ওষুধের গুণগত মান ধরে রাখতে পারছে না সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস। এ কারণে যতটুকু অর্জন ছিল, সেই বাজারও হারাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তাছাড়া কিছুদিন আগে সংসদীয় কমিটি কিছু ওষুধের অনুমোদন বাতিলের সুপারিশ করে। এ তালিকায় সেন্ট্রাল ফার্মার নামও উঠে আসে। এতে কোম্পানিটির ওষুধ বাজারজাতকরণে কিছুটা হোঁচট খায়। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ওষুধ বিক্রি কমছে।

এ বিষয়ে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. নূরউদ্দীন জঙ্গী বলেন, ‘কোম্পানির ওষুধের চাহিদা কমেছে, তাই বিক্রি কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে লভ্যাংশে। আর এ কারণে গত সমাপ্ত বছরে কোম্পানির পর্ষদ আগের বছরের চেয়ে লভ্যাংশ কম দিয়েছে।’

‘তবে কী কারণে কোম্পানির ওষুধের চাহিদা কমেছে’ সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

তথ্যমতে, কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত) প্রতিবেদন অনুযায়ী, টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ২৯ লাখ ৬৭ হাজার ৪২৫ টাকা। আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ৪২৫ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির টার্নওভারের পরিমাণ নেমেছে অর্ধেকে। আলোচিত সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ১৭ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩০ পয়সা।

এছাড়া গত বছরও কোম্পানিটির টার্নওভার কমেছে। গত ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত বছরে সেন্ট্রাল ফার্মা ট্যাবলেট বিক্রি করেছে ১৬ কোটি ২২ লাখ ২০ হাজার ৫৯০ টাকা, ক্যাপসুল ১৬ কোটি ৭১ লাখ ১১ হাজার ৮৭৯ টাকা, তরল ওষুধ ৮ কোটি ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৮৯ টাকা এবং অয়েনমেন্ট ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ১৩২ টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ওই সময় পর্যন্ত মোট টার্নওভারের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ৬৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ২০১৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে এর পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৪১৪ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে জুন শেষে কোম্পানির টার্নওভারের পরিমাণ কমেছে ২৪ কোটি ৪০ লাখ ৫৯ হাজার ৩২৫ টাকা।

এদিকে কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি রয়েছে বলেও নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান মন্তব্য করেছে। কোম্পানির ৩০ জুন, ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান গত ডিসেম্বর মাসে এ মন্তব্য করে।

নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিবেদনে ঋণের সুদের হার সঠিক নিমানুয়ায়ী তৈরি হয়নি। প্রতিবেদনে ঋণের বিপরীতে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার সঞ্চিতি ঘাটতির বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণের তথ্য আলাদাভাবে উপস্থাপন না করায় আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকৃত অবস্থার যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি বলেও মন্তব্য করেছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান।

কোম্পানির লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ২০ নভেম্বর কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। গতকাল বুধবার কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ২৪ টাকা ৭০ পয়সায় বেচাকেনা হয়। এর মধ্যে গত এক মাসে বেশিরভাগ সময় কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করে কোম্পানিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে গত ২০ ডিসেম্বর নোটিস দেয়।

জবাবে জানানো হয়েছে, দর বাড়ার কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য কোম্পানির কাছে নেই। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ার সর্বনিম্ন ১৩ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ২৩ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। দুই বছরে সর্বনিম্ন ১৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩১ টাকা ৬০ পয়সায় বেচাকেনা হয়।

লভ্যাংশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির বছর ২০১৩ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। পরের বছর ১৫ শতাংশ বোনাসের সঙ্গে ৫ শতাংশ নগদ দিলেও ২০১৫ সালে তা কমে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত সমাপ্ত বছরে লভ্যাংশের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশ।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: