facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

সীতাকুণ্ডে বাড়ি ঘিরে অভিযান, চার জঙ্গি নিহত


১৬ মার্চ ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ১২:৩৪  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


সীতাকুণ্ডে বাড়ি ঘিরে অভিযান, চার জঙ্গি নিহত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার প্রেমতলা চৌধুরীপাড়া এলাকার ‘ছায়ানীড়’ বাড়ি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযানকালে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

শফিকুল ইসলাম বলেন, দোতলা বাড়িটিতে গতকাল বুধবার রাত থেকেই অভিযান চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ভেতরে আটকা পড়া ব্যক্তিদের নিরাপদে বের করে আনার জন্য আজ সকাল ছয়টায় অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানকালে পাশের ভবন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোড়া গুলিতে এক জঙ্গি নিহত হয়। বাড়ির ভেতরে থাকা জঙ্গিরা আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে তিন জঙ্গি নিহত হয়। সব মিলিয়ে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি জানান, নিহত চার জঙ্গির মধ্যে দুজনের হাত, পা ও মুখমণ্ডল বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তাদের চেহারা বোঝার উপায় নেই। বাকি দুজনের চেহারা বোঝা যাচ্ছে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল থেকে এ পর্যন্ত তিন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ছায়ানীড় বাড়ি থেকে আজ মোট ২০ জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির ভেতরে আর কোনো বাসিন্দা নেই।

ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, বাড়ির ভেতরে থাকা সব জঙ্গি নিহত হয়েছে। জঙ্গিরা যে ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিল, সেখানে বিস্ফোরক রয়েছে। বাড়ির ভেতরে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল কাজ করছে।

আজ সকালে বাড়িটিতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরুর পর ব্যাপক গোলাগুলি ও প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। অভিযানকালে বাড়িতে আটকে পড়া সাধারণ বাসিন্দাদের বের করতে ভবনের পেছনের জানালার গ্রিল কাটার তথ্য জানায় পুলিশ। পরে একেক করে ২০ জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়।

গতকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাত ১১টা পর্যন্ত বাড়ির ভেতর থেকে তিন দফায় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছুড়ে মারে জঙ্গিরা। এতে পুলিশের এক কর্মকর্তা আহত হন। জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে পুলিশও কয়েক দফা গুলি ছোড়ে।

এর আগে বিকেল পাঁচটা ও সন্ধ্যা ছয়টায় দুই দফা ওই বাড়িতে থাকা জঙ্গিদের বের হওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়। তবে ভেতর থেকে জঙ্গিরা সাড়া দেয়নি।

চার ফ্ল্যাটের বাড়িটির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিরা অবস্থান করছিল বলে ধারণা করে পুলিশ।

বাড়ির বাকি তিনটি ফ্ল্যাটে তিনটি পরিবারের ২০ জন সদস্য আটকা পড়েন। তাঁদের নিরাপত্তা এবং এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় রাতে বাড়িটির ভেতরে অভিযানে যায়নি পুলিশ।

গত রাত পৌনে একটায় দুটি মাইক্রোবাস ও একটি পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকা থেকে সোয়াট দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এর আগে ঢাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল আসে। আর আগেই চট্টগ্রাম থেকে র‍্যাব, সোয়াট (স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস) ও পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যরা সেখানে যান।

সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকার একজন বাড়ির মালিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। গতকাল বেলা তিনটায় ওই বাড়ির মালিকই প্রথমে পৌরসভার আমিরাবাদ এলাকায় তাঁর দোতলা বাড়িতে পুলিশকে ডেকে আনেন। বাড়ির ভাড়াটে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত—এমন সন্দেহের কথা পুলিশকে জানান তিনি। পরে পুলিশ বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে তিনটি গ্রেনেড, একটি সুইসাইড ভেস্ট (আত্মঘাতী হামলার জন্য বোমার তৈরি বেল্ট), পিস্তল, বুলেট, বোমা তৈরির বিপুল সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করা হয় এক দম্পতিকে। তাঁদের সঙ্গে দুই মাসের একটি শিশুও রয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই প্রেমতলা চৌধুরীপাড়া এলাকার ছায়ানীড় বাড়িতে অভিযানে যায় পুলিশ। সেখানে পৌঁছার পরপরই বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রথমে গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়। এতে স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক। এর পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রাখেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: