facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে যে কারণে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক


২৪ নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার, ০২:৩৬  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে যে কারণে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক

অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে গেল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ইস্টার্ন কেব্‌লস শেয়ারের। গত বুধবার দিন শেষে কোম্পানিটির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮৩-তে। ইস্টার্ন কেব্‌লস বর্তমানে দেশের শেয়ারবাজারে সর্বোচ্চ মূল্য আয় অনুপাতের কোম্পানি। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ারবাজারে যে কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত যত বেশি, সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ তত ঝুঁকিপূর্ণ। সেই হিসেবে ইস্টার্ন কেব্‌লসের শেয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন সেই ঝুঁকিও বাড়ছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবারও কোম্পানিটির সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। এদিন ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ পৌনে ৯ শতাংশ বা ১৯ টাকা মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ ছিল। দিন শেষে সেই মূল্যবৃদ্ধির ফলে ইস্টার্ন কেব্‌লসের শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৮ টাকায়। ফলে গত সাত কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১৪০ টাকা ৫০ পয়সা।

ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহ ধরে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটলেও এ সময়ে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিল না। এ সময়ের মধ্যে শুধু কোম্পানিটির একজন পরিচালক প্রায় সাড়ে তিন লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেন। এক পরিচালকের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা সত্ত্বেও এটির শেয়ারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তাতে কোম্পানির শেয়ারধারী সাধারণ বিনিয়োগকারীর ঝুঁকিও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, কোম্পানিকে ঘিরে এমন কোনো তথ্য রয়েছে, যা প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক সেই তথ্য জেনে আগেভাগে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। পরবর্তী সময়ে হয়তো দেখা যাবে সেই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির এ রকম মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।

সর্বশেষ গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের যে আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানিটি প্রকাশ করেছে তাতে এটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দেখানো হয় মাত্র ৩ পয়সা। সেই ৩ পয়সা আয় দিয়ে সাত কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রায় ১০০ টাকা আয় বেড়েছে। গতকাল দিন শেষে এটি ডিএসইতে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে ছিল। এর আগে মঙ্গলবার মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল কোম্পানিটি।

ঢাকার বাজারে বুধবার মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল দ্য পেনিনসুলা চিটাগাং। চট্টগ্রামে অবস্থিত এ হোটেলটি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের পারিবারিক ব্যবসা। গতকাল মন্ত্রী বাজার থেকে কোম্পানিটির আড়াই লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই খবরে গতকাল কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ২ টাকা ২০ পয়সা বা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৩০ পয়সায়। যদিও কোম্পানিটির গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৪ পয়সা কমে ১৬ পয়সায় নেমে এসেছে। সর্বশেষ প্রকাশিত সেই আয়ের ভিত্তিতে গতকাল দিন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৮-এ। মঙ্গলবার এই মূল্য আয় অনুপাত ছিল সাড়ে ৩৪-এ।

এদিকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে বুধবার সূচক সামান্য বাড়লেও কমে গেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বুধবার দিন শেষে ৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৯ পয়েন্ট। ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮৯৮ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৯৪ কোটি টাকা কম। ডিএসইতে এদিন লেনদেনের শীর্ষে ছিল লঙ্কাবাংলা ফিন্যান্স। গতকাল এককভাবে ডিএসইতে কোম্পানিটির প্রায় ৬০ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়।

মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূল্যবৃদ্ধিতে বুধবারের বাজারে এগিয়ে ছিল টেলিযোগাযোগ খাত। বুধবার এ খাতের প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের দাম গড়ে ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ডিএসইতে বুধবার টেলিকম খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০ টাকা ৪০ পয়সা বা প্রায় সোয়া ২ শতাংশ বেড়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি বুধবার ২৬ পয়েন্ট বেড়েছে। সেখানকার বাজারে বুধবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৭ কোটি টাকা কম।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: