facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারের দর তলানিতে ঠেকলেও কেন জবাবদিহি নয়?


২৯ এপ্রিল ২০১৭ শনিবার, ০৮:৫৬  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


শেয়ারের দর তলানিতে ঠেকলেও কেন জবাবদিহি নয়?

দুই সপ্তাহের অধিককাল ধরে পুঁজিবাজারে পতন চলছে। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অথচ বাজারের নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে, তারা বাজার স্বাভাবিক রাখতে কোনো ভূমিকাই রাখছেন না। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোরও কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। যখন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে, তখন কোনো কোম্পানির দর একটু বেশি বাড়লেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো তদন্তে নেমে পড়ে। জবাবদিহি করতে হয় তাদের কাছে। অথচ এখন মৌলভিত্তির কোম্পানির দর কোনো কারণ ছাড়াই তলানিতে ঠেকলেও এ ব্যাপারে কোনো তদন্ত বা জবাবদিহি করতে হয় না। এনটিভির মার্কেট ওয়াচে আলোচকদের বক্তব্যে এ প্রশ্ন উঠে আসে। ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সহ-সভাপতি খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেলটেক ব্রোকারেজের পরিচালক ও সিইও মঈন উদ্দিন, পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. ফোরকান উদ্দিন এবং স্টারলিং স্টক অ্যান্ড সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জের সিইও এসএম নাসির উদ্দিন।

মঈন উদ্দিন বলেন, গত দু-তিন সপ্তাহ বাজার পড়ার কিছু কারণ আছে। আমরা জানি, জুন-জুলাই মাসে কিছু কিছু কোম্পানির বছর শেষের ঘোষণা হয়। আমরা দেখেছি, ডিসেম্বর ক্লোজিং যে কোম্পানিগুলো আছে, সেগুলোর বেশিরভাগের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়ে গেছে। ফলে এসব ঘোষণার প্রভাবও কিছুটা পড়েছে বাজারে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক সর্বশেষ আর্থিক বছরে যে ডিভিডেন্ড দিয়েছে, তা গত এক যুগেও দেয়নি। এছাড়া আইএফআইসির রাইট শেয়ারের ঘোষণা নিয়েও বাজারে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। এসব কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে; তারও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। তিনি বিনিয়োগকারীর উদ্দেশে বলেন, গুজবে আতঙ্কিত হবেন না। ফোরকান উদ্দিন বলেন, বাজারের এ পতনকে আমি স্বাভাবিক বলে মনে করি না। যেসব কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, তাদের দর পড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু সব খাতের একযোগে দর পড়াকে অস্বাভাবিক বলা যায়। কাজেই বাজার স্বাভাবিক আবস্থায় আনতে হলে বাজারে বড় বিনিয়োগকারী এবং বড় যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের টার্নওভার অনেক বেশি, তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। আর তারা যদি দায়িত্বশীল আচরণ না করে, তবে বাজার কখনই ঠিক করা যাবে না। কাজেই যেসব বড় বিনিয়োগকারীর কারণে বাজারে প্লাস-মাইনাস দুটোই হতে পারে, তাদের অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বাজার নিয়ে কি হচ্ছে, তা জানা নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব। তাছাড়া বাজার ওঠানামা করবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাজার যখন বেশি ওঠে, তখন আমরা দেখি ডিএসই ও সিএসইর কাছে নানা রকম জবাবদিহি করতে হয়। এ সময় তারা তাদের কাজে অনেক দায়িত্বের পরিচয় দেয়। কিন্তু এখন যে একটানা বাজার পড়ছে, সে ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এখন কেন তাদের কোনো প্রশ্ন নেই। তাহলে কার স্বার্থ তারা দেখছে-এ প্রশ্নটি থেকেই যায়। এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বপূর্ণ তৎপরতা দরকার।

নাসির উদ্দিন বলেন, ১৫-২০ দিন যে হারে বাজার পড়ছে, সেটি স্বাভাবিক বলে মনে হয় না। তাছাড়া হঠাৎ করেই বাজারে এমন কিছু হয়নি যে, এভাবে সূচক ও লেনদেন পড়তে থাকবে। গুজব শোনা যাচ্ছে, বড় ব্রোকারেজ হাউজগুলো শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে ছোট বিনিয়োগকারী ও ছোট ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে তারাও শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে পতন আরও বাড়ছে। তাছাড়া বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, এখন শেয়ার বিক্রি করলে কিছুদিন পর আরও কম দামে কিনতে পারবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, বাজারের এ অবস্থায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই; বাজার আবার স্বাভাবিক হবে। পুঁজিবাজারে ধৈর্যশীল ব্যক্তিরাই সফল হন বেশি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: