facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারবাজারের ভালো সময় আসছে


১৬ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ০২:৩৮  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


শেয়ারবাজারের ভালো সময় আসছে

সঞ্চয়পত্রে উচ্চ সুদ হারের কারণে শেয়ারবাজার ও বন্ড মার্কেট থেকে অনেকে বিনিয়োগ তুলে এনে সঞ্চয়পত্র কিনছে। অন্যদিকে, সঞ্চয়পত্রে উচ্চ সুদহারের কারণে সরকার কম সুদে ব্যাংক থেকে এখন আর ঋণ নিচ্ছে না। এতে ব্যাংকে অলস টাকার পরিমাণ বাড়ছে। এরফলে সামগ্রিক আর্থিক খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

শেয়ারবাজার, বন্ড মার্কেট ও ব্যাংক খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানোর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমাতে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়কে লিখিত পরামর্শও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


জানা যায়, আগামী ২৬ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ‘সরকারের আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’-এর বৈঠকে সঞ্চয়পত্রের সুদহার নিয়ে আলোচনা হবে। কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠক উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি লিখিত প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছে, সেখানে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাহফুজা আকতার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে সরকার অধিক পরিমাণ ঋণ পাওয়ায় ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার বদলে আগে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করছে। তবে এটি বলা প্রয়োজন যে সঞ্চয়পত্রের সুদহার অর্থবাজারে বিদ্যমান সুদহারের চেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারের দায় বেড়ে যাচ্ছে এবং সার্বিকভাবে আর্থিক খাতে সুদহার হ্রাস ও বন্ড বাজারের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার বদলে আগের ঋণ পরিশোধের ফলে এ খাতে উদ্বৃত্ত তারল্যের সৃষ্টি হচ্ছে, যা নিষ্ক্রিয়করণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় বাড়ছে। এ অবস্থায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার যৌক্তিকীকরণের বিষয়টি সরকার সুবিবেচনায় নিতে পারে।

বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্র। এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫ শতাংশ উৎস কর কাটার পর গ্রাহকরা মাসে ৯১২ টাকা সুদ পাচ্ছে। পেনশনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দেওয়া হয় তিন মাস পর পর। এক লাখ টাকার বিপরীতে উৎসে কর কেটে প্রতি তিন মাসে দুই হাজার ৭৯৩ টাকা পায় গ্রাহক। আর তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে এক লাখ টাকার বিনিয়োগে দুই হাজার ৬২২ টাকা পায় গ্রাহক। বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র পাঁচ বছর মেয়াদি। মেয়াদ শেষে ১১.২৮ শতাংশ সুদ পায় গ্রাহক। আর এক লাখ টাকা ব্যাংকে আমানত রাখলে এখন মাস শেষে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত সুদ পাওয়া যায়।

ব্যাংকের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারে বড় ফারাক হওয়ার প্রেক্ষাপটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত জুন মাসে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানোর কথা বলেছিলেন। ব্যাংকের সুদের হারের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারের বর্তমান ব্যবধান কমিয়ে ২ শতাংশের মধ্যে নামানোর কথা বলেন তিনি। তবে তাঁর ওই কথার তীব্র বিরোধিতা করেন সরকারের অন্য মন্ত্রীরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিপুলসংখ্যক সঞ্চয়পত্রের ক্রেতাকে হতাশ না করতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তাঁরা। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়াসহ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সুদহার না কমিয়ে বড় ক্রেতাদের সুদহার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে রাজনৈতিক কারণে সেই উদ্যোগও স্থবির হয়ে আছে।

এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদহারের কারণে সামগ্রিকভাবে আর্থিক খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ সরকারের ব্যয়ও বাড়ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, সঞ্চয়পত্রে উচ্চ সুদ হারের কারণে অনেকে শেয়ারবাজার থেকে তাদের বিনিয়োগ তুলে নিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন। যদি সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানো হয়, তাহলে তারা শেয়ারবাজারে নতুন পুরাতন বিনিয়োগ আসার পথ প্রশস্ত হবে। তাঁদের মতে, সঞ্চয়পত্রে সুদ হার কমানো হলে শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ বাড়বে এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ স্থিতিশীলত শেয়ারবাজার প্রতিষ্ঠায় গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: