facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারবাজারের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে ভাবছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক


০১ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার, ১১:০৭  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


শেয়ারবাজারের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে ভাবছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে ১৫ হাজার কোটি টাকার দুটি আলাদা তহবিল গঠনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রস্তাবে সরাসরি সাড়া দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তবে বিকল্প কোনো পন্থায় সুবিধা দেওয়া যায় কি-না, তা নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিএসইসির প্রস্তাবটি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি নির্ধারকরা নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে বিএসইসির প্রস্তাবে তহবিলের আকার বলা হলেও কীভাবে এই ঋণ বিতরণ করা হবে, কারা করবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি বলে জানান তিনি।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ অবস্থায় সরাসরি তহবিলে অর্থ জোগানের পথে যেতে চায় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই ঋণ বিতরণের বিকল্প মডেল নিয়ে ভাবছি আমরা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে জানানো হবে বিএসইসিকে।

গত ১০ নভেম্বর অর্থ বরাদ্দ চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে চিঠি দেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

এতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (আইসিবি) জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়। আর আইসিবিসহ স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংকের জন্য চাওয়া হয় আরও ১০ হাজার কোটি টাকা।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিশেষ তহবিলে তিন থেকে চার শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদী ঋণ দেবে। আর তহবিলের বিনিয়োগের সুদ হার হবে চার শতাংশ, যার এক শতাংশ সিংকিং ফান্ডে জমা থাকবে।

সিংকিং ফান্ড এমন একটি তহবিল যা দায় পরিশোধ অথবা সম্পদ পরিবর্তনে কাজে লাগানো হয়।

এই তহবিলের অর্থ মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ব্রোকারস ও স্টক ডিলার ইস্যুকৃত করপোরেট বন্ড/ডেট সিকিউরিটিজে (যার কুপন হার হবে ছয় থেকে সাত শতাংশ) বিনিয়োগ করা হবে বলে জানায় বিএসইসি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই প্রস্তাবে কীভাবে এই ঋণ দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। তা ছাড়া এখন বাজার ভালো। তাই এ ধরনের তহবিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা আরও বলেন, এর আগে প্রতিটি ব্যাংককে অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছিল, তাতে ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল হয়। কিন্তু তাও খুব একটা কাজে আসেনি। বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার মতো।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে পুঁজিবাজারে ঋণাত্মক ইক্যুইটির পরিমাণ ১২ হাজার কোটি টাকার মতো। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সক্ষমতা কমেছে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিপরীতে ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো। কিন্তু শেয়ারের দর কমতে থাকলে অনেক সময় ঋণ হিসাবগুলোর মূলধনও ঋণাত্মক হয়ে যায়। ২০১০ সালে ধসের পর অনেক বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়।

তবে এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্বল্প সুদে ঋণ দিতে রাজি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সংস্থাটির কর্মকর্তা বলছেন, এটা একটা ‘অ্যাকাউন্টিং প্রবলেম’। এর সমাধানও অ্যাকাউন্টিংয়ের মাধ্যমেই করতে হবে।

না হলে সরকারের কাছ থেকে এককালীন বরাদ্দ নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ তাদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আগেও আইসিবিকে ৯০০ কোটি টাকার তহবিল দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে ৮৫৬ কোটি টাকা ফেরত আসে। পরে তা দিয়ে মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকারদের জন্য একটি স্বল্প সুদের ঋণের তহবিল করা হয়।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: