facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারবাজারে বড় দরপতনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই


২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ০৩:৩৫  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


শেয়ারবাজারে বড় দরপতনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই

দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া সাড়ে ৬২ শতাংশ শেয়ারের দর কমেছে। বেড়েছে ২৬ শতাংশের। এতে বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৬১৭৩ পয়েন্টের নিচে নেমেছে। সূচক পতনের হার ১ শতাংশ। ২৩ এপ্রিলের পর গত পাঁচ মাসে সূচকে একদিনে এর চেয়ে বড় পতন আর হয়নি। সূচকের বড় পতনের কারণ ব্যাংক খাতের শেয়ারের দাম কমে যাওয়া। চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন দিনে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছিল। তবে ব্যাংকের শেয়ারের দর ঊর্ধ্বমুখী থাকায় সূচকের পতন হয়নি।

অবশ্য বাজার-সংশ্নিষ্টরা গতকালের দরপতনকে `বাজার সংশোধন` বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেন, স্বল্প সময়ে প্রায় সব ব্যাংক কোম্পানির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দর বেড়েছিল। এই দর বৃদ্ধির সুবিধা নিতে কেউ কেউ শেয়ার বিক্রি করায় শেয়ারদর কমেছে। অধিকাংশ শেয়ারের দর কমায় সূচকও কমেছে। এটা সাময়িক এবং শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক ধারা। এ পতনে ভয়ের বা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছেন তারা।
সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত মে মাসের শেষ থেকে টানা দরপতনের ধারা থেকে বের হয়ে আসে বাজার। ওই মাসের ২৯ তারিখ ডিএসইএক্স সূচকের অবস্থান ছিল ৫৩৫৬ পয়েন্ট। এরপর প্রায় ক্রমাগত বেড়ে গত মঙ্গলবার সূচকটি ৬২৮৫ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। অর্থাৎ গত চার মাসে সূচকটি বেড়েছে ৯২৮ পয়েন্ট বা ১৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সূচকের এ বৃদ্ধিতে ব্যাংক খাতের অবদানই ছিল বেশি। কিছু ব্যাংকের শেয়ারদর এ সময়ে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।
জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী সমকালকে বলেন, অনেকটা বৃদ্ধির পর শেয়ারদর ও সূচক কমবে, এটাই স্বাভাবিক। এতে ভয়ের কিছু নেই। ব্যাংকের শেয়ারদর বৃদ্ধির সুবিধা কেউ কেউ নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর এখনও বৃদ্ধির সুযোগ আছে। অনেকে ডিসেম্বর ক্লোজিং শেয়ার হিসেবে ব্যাংকের শেয়ার নিচ্ছেন। আবার ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন হয়ে একই পরিবারের আরও অন্তত দু`জনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। এ কারণেও অনেকে ব্যাংকের শেয়ার কিনছেন। ব্যাংক শেয়ারের এ চাহিদাও শেয়ারগুলোর দরে বড় প্রভাব ফেলছে।

একই মত মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমানের। অনেকটা বৃদ্ধির পর স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন শেয়ারবাজারেরই ধর্ম- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারদর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছিল। অনেকে মনে করছেন, এই বুঝি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সব শেয়ার বিক্রি করে চলে গেল। বিষয়টি তা নয়। সব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীই ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করেছেন- এটা যেমন সত্যি নয়, তেমনি বিক্রি হওয়া শেয়ারের পুরোটাই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিনেছেন, তাও সত্য নয়। বাজারে সব সময় মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতায় কেউ কেউ থাকবেন। একই সময়ে আশাবাদীরা বসে থাকেন অন্যের বিক্রি করা শেয়ার কিনে নিতে।

এদিকে শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গতকাল ব্যাংকের শেয়ারের প্রধান বিক্রেতা ছিল প্রাতিষ্ঠানিকসহ ব্যক্তিশ্রেণির কয়েকজন বড় বিনিয়োগকারী। তাদের বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রির কারণে ব্যাংক খাতের শেয়ারদর কমেছে, যা সূচককে নিল্ফম্নমুখী করে। এতে দর সংশোধনের মনস্তাত্ত্বিক ভীতিও ভর করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তাতে অন্য খাতের অনেক শেয়ারের দরও কিছুটা কমেছে।

সার্বিকভাবে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৮৬টির দর বেড়েছে, কমেছে ২০৭টির এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ৩৮টির দর। খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ২৮টির দর কমেছে। এ খাতের সার্বিক দরপতনের হার প্রায় ২ শতাংশ। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত ছাড়া দর হারানো শেয়ার সংখ্যার দিক থেকে অন্য সব খাতেরও ছিল প্রায় একই অবস্থা। তবে সিরামিক খাত ছাড়া অন্য খাতগুলোর দরপতনের হার ছিল তুলনামূলক কম।

দর কমলেও গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাত। শুধু ডিএসইতে খাতটির ৩০ কোম্পানির ৫১০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪৭ শতাংশের বেশি। একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে ২০ কোম্পানির মধ্যে ১৫টিই ছিল ব্যাংকের শেয়ার।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

শেয়ারবাজার -এর সর্বশেষ