facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারবাজার নিয়ে সবারই একই প্রশ্ন


১৮ মে ২০১৮ শুক্রবার, ০২:২৩  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


শেয়ারবাজার নিয়ে সবারই একই প্রশ্ন

সবার একই প্রশ্ন কী হলো শেয়ারবাজারের। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সবার আলোচনায় এ প্রশ্ন করছেন। দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কর্মকর্তারাও এর উত্তর খুঁজছেন। গত বুধবার পর্যন্ত টানা ১১ দিনের দরপতনে একটু একটু করে সূচক কমলেও ১২তম দিনে এসে পতনের হার বেড়েছে।

গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রায় ৭৬ শতাংশ শেয়ারের দরপতনে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৮ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশ হারিয়ে ৫৪৪৩ পয়েন্টে নেমেছে। বড় এ পতনে সূচকটি প্রায় এক বছর আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। ক্লোজিং অবস্থান বিবেচনায় গত বছরের ১ জুন এর নিচের অবস্থানে ছিল। ওইদিন সূচকটির অবস্থান ছিল ৫৪৩৮ পয়েন্টে। গতকাল লেনদেন হওয়া প্রায় ৮০ শতাংশ শেয়ারের দরপতনে সিএসইর প্রধান সূচক সিএসইএক্সেরও সোয়া ১ শতাংশ পতন হয়েছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল পতনের কবল থেকে কোনো খাতই রক্ষা পায়নি। অধিকাংশ খাতের সার্বিক দরপতন ১ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৯ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২৬৬টিই লেনদেনের কোনো না কোনো পর্যায়ে দর হারিয়ে কেনাবেচা হয়। মাত্র ২৩টি শেয়ার আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইসের তুলনায় বেশি দরে কেনাবেচা হয়। আর মিউচুয়াল ফান্ডসহ এ বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৩৬ শেয়ার ও ফান্ডের মধ্যে দিনের শেষে মাত্র ৪৪টির দর বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। কমেছে ২৫৪টির দর ও বাকি ৩৮টির দর অপরিবর্তিত ছিল।

এমন দরপতনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অনেকটাই দিশেহারা অবস্থা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। তারা বলেন, নিজেরাই এর ভালো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছি না। বিনিয়োগকারীদের কী বলব।

তবে ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক সমকালকে বলেন, সংকটের মূলে ব্যাংক খাত। তার পরও শেয়ারবাজার ইস্যুতে ব্যাংকের এক্সপোজার গণনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে জটিল অবস্থা তৈরি করে রেখেছে, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারির টানা দরপতনের সময় অর্থমন্ত্রী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শেয়ারবাজার এক্সপোজার গণনায় পরিবর্তন আনার বিষয়ে গভর্নর ফজলে কবীর যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার একটাও বাস্তবায়িত হয়নি। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সংকটাবস্থায় রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিকে আমানত বা ঋণ গ্রহণে একক গ্রাহকসীমা-সংক্রান্ত বিধান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। সেটিও করা হয়নি। বস্তুত ব্যাংকের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিআরআর কমানোসহ নানা নীতি-সহায়তা দিলেও শেয়ারবাজারের জন্য কিছু করেনি। এটাও বাজার সংকটের একটি কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গতকাল ডিএসইর খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বরাবরের মতো গতকালও ব্যাংকের দরপতনই সূচক পতনে সর্বাধিক ভূমিকা রেখেছে। তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের মধ্যে ২২টিরই দর কমেছে। বেড়েছে মাত্র দুটির। বাকি ছয়টির দর অপরিবর্তিত। এতে খাতটির সার্বিক দরপতন হয়েছে প্রায় দেড় শতাংশ। অন্য খাতগুলোতেও ছিল একই অবস্থা।

সূচকের বড় পতন হলেও দর হারানো ১৫০ শেয়ারের দরপতন সর্বোচ্চ ২ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। একক কোম্পানি হিসেবে দরপতনের শীর্ষে ছিল জুট স্পিনার্স। প্রায় ১০ শতাংশ দর হারিয়ে সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ১৪৪ টাকা ৫০ পয়সায়। দরপতনের এর পরের অবস্থানে থাকা প্রাইম লাইফ, ফারইস্ট লাইফ, মডার্ন ডাইং, ইমাম বাটন, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ও তুংহাই নিটিংয়ের দর ৫ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে।

এমন দরপতনের মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির বেশ দর বেড়েছে। গতকালই তালিকাভুক্ত হওয়া ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ার সর্বশেষ ৪৩ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। এরপর দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল কুইন সাউথ টেক্সটাইল। সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দর ৫০ টাকা ৪০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। এ ছাড়া শ্যামপুর সুগার মিলস ও রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: