facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারবাজার নিয়ে চিন্তার বড় কারণ


১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার, ০১:৩৬  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


শেয়ারবাজার নিয়ে চিন্তার বড় কারণ

নয় বছর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ধস নামার পর এখনও ঠিক হয়নি শেয়ারবাজার। বেশি চিন্তায় অর্থমন্ত্রী ও তার দপ্তর। শেয়ারবাজারকে সঠিক পথে আনতে বছরের পর বছর সরকারের দিক থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও তা কাজে না আসাই চিন্তার বড় কারণ।

এমন প্রেক্ষাপটে চলমান সংকট বিষয়ে জানতে এবং করণীয় নির্ধারণে শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করার কথা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান, ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর সভাপতি, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বিএমবিএর সভাপতির বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, রূপালী ও অগ্রণী, বিশেষায়িত ব্যাংক আইসিবি ও বিডিবিএলের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদেরও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে আজ এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে শেয়ারবাজারে ধস নামার পর ২০১১ সালের শুরুতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সবাইকে নিয়ে এমন বৈঠক করেন। বর্তমান সংকটের কারণে আবারও বৈঠক ডাকা হলো। শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্টদের বাইরে আর্থিক খাতের সব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদেরও এ বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব গ্রহণের পর বাজারের সব অংশীদারের সঙ্গে এই প্রথম বৈঠক করতে যাচ্ছেন।

চলতি বছর জানুয়ারিতে বর্তমান দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কিছু দিন শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও জানুয়ারির শেষে দরপতন শুরু হয়। এর মধ্যে স্মরণকালের রেকর্ড দীর্ঘস্থায়ী দরপতনের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে স্বয়ং অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কার্যালয়ে গিয়ে সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংকটের কারণ নিয়ে আলোচনা করেন। এ বৈঠকের পর বাজেটে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এমনকি বাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকগুলো যাতে এগিয়ে আসে, সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। সংশ্নিষ্টরা জানান, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবায়নে কিছু শিথিলতা আনা হয়েছে। গত বছর ব্যাংকের করপোরেট কর কমানো হয়েছে। করমুক্ত লভ্যাংশ আয় বাড়ানো হয়েছে। আইনকানুনে নানা সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপের কোনো প্রতিফলন বাজারে নেই। বাজেট ঘোষণার পর কয়েকদিন বিরতি দিয়ে নতুন করে দরপতন শুরু হয়েছে। সর্বশেষ দরপতন গত ২৫ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর (গত বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত টানা তিন সপ্তাহে গড়িয়েছে। এ সময়ে ৮৩ শতাংশেরও বেশি শেয়ারের দরপতন হয়। বিশেষত বড় শেয়ারগুলোর দরপতনে বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০৩ পয়েন্ট হারিয়েছে। গতকাল রোববার চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও দরপতন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করে সূচকের পতন ঠেকিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও আইসিবি।

সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে নানা প্রণোদনা ও পদক্ষেপ নেওয়ার পরও কেন শেয়ারবাজার ঠিকমতো চলছে না, তা নিয়ে আলোচনা হবে। সবার মতামত পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন অর্থমন্ত্রী।

বৈঠকে কী বলবেন, জানতে চাইলে পুঁজিবাজার সংশ্নিষ্ট সংগঠনের এক নেতা বলেন, আস্থা না থাকায় নতুন করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আসছে না, উল্টো অনেকে লোকসানের কারণে বা হতাশ হয়ে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন। এতে শেয়ার বিক্রির চাপ ক্রমেই বাড়ছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় না থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও বেশি নাজুক হয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো যাতে বিনিয়োগে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে, তার ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবেন তিনি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: